>১৯৭৮ ব্যাংকক এশিয়ান গেমসের হকিতে পাকিস্তানের কাছে ১৭-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেটিকে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বিপর্যয়কর ফল হিসেবে ধরা হয়। ৪০ বছর পর সেই পাকিস্তানকেই মেয়েদের ফুটবলে ১৭-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
সেই দুঃখ বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন বয়ে বেড়াচ্ছে ৪০ বছর ধরে। এত বছর বয়ে নিয়ে বেড়ানো সেই দুঃখের হাত থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ মিলেছে থিম্পুর মাটিতে। ভুটানের রাজধানীতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলে কাল পাকিস্তানকে ১৭-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা প্রলেপ দিয়েছে এ দেশের ক্রীড়া ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের ক্ষতস্থানে।
১৯৭৮ সালে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ হকি দল পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭-০ গোল হেরেছিল। এ দেশের খেলাধুলার ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট দিনে সেটিই এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বিপর্যয়কর ফল। যদিও সে সময়ের মহাপরাক্রমশালী পাকিস্তান হকি দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ হকি দলের পরাজয় বা বড় ব্যবধানে হারের ব্যাপারটি খুব অপ্রত্যাশিত কিছু ছিল না। কিন্তু ১৭ গোল খাওয়া ছিল সদ্য স্বাধীন দেশের হকি দলের জন্য বিরাট এক ধাক্কা। বিশেষ করে সেই হার ঢাকাই হকির ঐতিহ্যকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছিল। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান বলেই ১৭ গোলের সেই হার দেশের ক্রীড়প্রেমী মানুষকে বেশি কষ্ট দিয়েছিল। কাল থিম্পুতে পাকিস্তানকে ১৭ গোলে হারানোর পর ৪০ বছর আগের সেই দুঃসহ স্মৃতি মনে করেছেন অনেকেই। তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন মেয়েদের পাকিস্তানকে হকির সেই ১৭ গোল ফুটবলের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসানো মেয়েদের ফুটবলে এখন অতিপরিচিত দৃশ্য। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বয়সভিত্তিক ফুটবলে অনেক ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে ৮/১০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এই পাকিস্তানকেই গত মাসে ভুটানেই অনূর্ধ্ব-১৫ দল হারিয়েছিল ১৪-০ গোলে। বাংলাদেশের মেয়েরা গত দুই/তিন বছরে বয়সভিত্তিক ফুটবলে ইরান, লেবানন, ভারত, ফিলিপাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তানের মতো দলকে হারিয়েছে। চূড়ান্তপর্বে খেলেছে মেয়েদের অনূর্ধ্ব–১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপে। পাকিস্তান এই মুহূর্তে মেয়েদের কাছে মামুলি প্রতিপক্ষ হলেও তাদের ১৭ গোল হারানোটা গুরুত্ব বহন করছেন ঐতিহাসিক কারণেই।