কোনো গোল পায়নি বাংলাদেশ
কোনো গোল পায়নি বাংলাদেশ

নেপালের সঙ্গে এবার গোলশূন্য ড্র মেয়েদের

নেপালের বিপক্ষে এবার অন্তত হারতে হয়নি নারী ফুটবলারদের। কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে আজ শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে নেপালের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ। গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ২-১ গোলে। দুই ম্যাচের সিরিজটি জিতে নিয়েছে স্বাগতিক নেপাল।

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন বয়সভিত্তিক ফুটবল টুর্নামেন্টে এর আগে নেপালকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু নেপাল জাতীয় দলের বিপক্ষে কখনো জিততেই পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচ শুরুর আগে ফুটবলারদের মুখে শোনা গিয়েছিল জয়ের স্বপ্নের কথা। কিন্তু দশরথ স্টেডিয়ামে সেই পারফরম্যান্স দেখা গেল কোথায়?

ভালো খেলেননি সাবিনা

এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের প্রস্তুতি হিসেবে নেপালের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এই প্রস্তুতি সিরিজ শেষে নেপাল থেকে বাংলাদেশ দল ১৪ সেপ্টেম্বর যাবে উজবেকিস্তানে। সেখানে ১৯ সেপ্টেম্বর এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে খেলবে জর্ডানের বিপক্ষে। ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ ইরান। নেপালের এই ম্যাচগুলোতে জয়-পরাজয়ের চেয়ে ফুটবলারদের ভুলত্রুটিগুলো দেখে নেওয়াই আসল উদ্দেশ্য ছিল কোচ গোলাম রব্বানীর।

ঘরোয়া ফুটবল লিগে বাংলাদেশ দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই খেলেছেন চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে। একপেশে লড়াইয়ে লিগ জেতাটা মেয়েদের যে খুব একটা কাজে এসেছে, সেটা বলা যাবে না। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাবিনা-কৃষ্ণাদের পারফরম্যান্স যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, বাংলাদেশের ফুটবলারদের সত্যিকারের অবস্থা। সর্বশেষ মেয়েদের লিগে ২৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জিতেছেন কৃষ্ণা। অথচ সেই কৃষ্ণা আজ একটা গোল পেতে হাপিত্যেশ করেছেন মাঠে।

বল দখলের লড়াইয়ে সিরাত জাহান

দেশের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার সাবিনা খাতুন পুরো ম্যাচে নিজের ছায়া হয়ে রইলেন। গত ম্যাচে যা–ও দুয়েকবার বল নিয়ে বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আজ সেটাও পারেননি। মাঝেমধ্যে যেটুকু ঝলক দেখিয়েছেন কৃষ্ণা ও সিরাত জাহান।

আগের ম্যাচে একাদশে থাকা মিসরাত জাহানকে আজ মাঠেই নামাননি কোচ গোলাম রব্বানী। তবে গত ম্যাচে বাদ পড়া মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমাকে শুরু থেকেই খেলিয়েছেন। কিন্তু ঋতুপর্ণার কাছ থেকেও কোনো ভালো মুভ, ভালো পাস দেখেনি বাংলাদেশ। নেপাল দলের প্রধান গোলরক্ষক ঊষা নাথের বদলে আজ দেখা গেছে অঞ্জনা রানা মাগারকে। অঞ্জনাকেও খুব বেশি পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের মেয়েরা।

পুরো ম্যাচে বল দখলে এগিয়ে ছিল নেপালই। পোস্টে ৪টি শট নিয়েছে নেপাল, বাংলাদেশ নিয়েছে মাত্র দুটি!

বল পায়ে শামসুন্নাহার

ম্যাচের ৫ মিনিটে দারুণ একটা সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কৃষ্ণা রানী সরকার নেপালের গোলরক্ষক অঞ্জনাকে ফাঁকি দিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে যান আরও সামনের দিকে। কিন্তু নিজে গোল না করে সিরাত জাহানকে বল এগিয়ে দেন। ততক্ষণে অবশ্য অনেক দেরি হয়ে গেছে। নেপালের দুই ডিফেন্ডার এসে বল ক্লিয়ার করেন। এরপর ৩১ মিনিটে কৃষ্ণার আরেকটি শট ক্রসবারে লেগে ফেরে।

প্রথমার্ধে বাংলাদেশের বক্সে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন নেপালের দুই ফরোয়ার্ড বিমলা চৌধুরী ও সারু লিম্বু। কিন্তু ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন ও নীলুফার নীলা বেশ ভালোভাবেই সামলে নিয়েছেন সেই বিপদ। প্রথমার্ধে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা বাংলাদেশ দল দ্বিতীয়ার্ধে কৌশল বদলে ফেলেছে। রক্ষণ সামলে তবেই আক্রমণে উঠেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা।

আগের ম্যাচে বাংলাদেশের একমাত্র গোলদাতা তহুরা খাতুনকে আজ ম্যাচের একেবারে শেষ সময়ে মাঠে নামান গোলাম রব্বানী। কৃষ্ণার বদলে মাঠে নেমেও অবশ্য আজ কোনো গোলের সুযোগই পাননি তহুরা।