১০ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকবেন নেইমার। অস্ত্রোপচার না করার সিদ্ধান্ত নেওয়াতেই দ্রুত ফিরতে পারছেন নেইমার। ফিরতে পারেন এপ্রিলের মাঝামাঝিতে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে খেলা হচ্ছে না তাঁর।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে যে খেলা হচ্ছে না, তা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। শঙ্কা ছিল আরও বড় কিছুর। টানা দ্বিতীয় মৌসুমে ডান পায়ের মেটাটারসালে চোট পেয়েছেন নেইমার, গত মৌসুমের মতো এবারও অস্ত্রোপচার করাতে হলে পিএসজির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের মৌসুমই শেষ হয়ে যেত। সেদিক থেকে ভাবলে নেইমার ভক্তদের জন্য সুখবরই। পিএসজি কাল জানিয়েছে, অস্ত্রোপচার করাতে হচ্ছে না ২৬ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে। সে ক্ষেত্রে মাঠে ফিরতে ১০ সপ্তাহ লেগে যেতে পারে নেইমারের।
গত সপ্তাহে ফ্রেঞ্চ কাপে স্ত্রাসবুর্গের বিপক্ষে নেইমার চোটটা পাওয়ার পর থেকেই বড় প্রশ্নটা ছিল অস্ত্রোপচার করাতে হবে কি না, তা নিয়ে। গত মৌসুমে একই হাড়ে চোট পেয়েছিলেন নেইমার, তখন প্রথমে রাজি না হলেও ব্রাজিল দলের ডাক্তার রদ্রিগো লাসমারের জোরাজুরিতে অস্ত্রোপচারে রাজি হয় পিএসজি। ৯৮ দিনের পুনর্বাসন-প্রক্রিয়া শেষে রাশিয়া বিশ্বকাপের ঠিক আগে মাঠে ফিরেছিলেন নেইমার।
এবার বিশ্বকাপ নেই, কিন্তু কোপা আমেরিকা আছে। সেটিও আবার ব্রাজিলেই। নেইমার চোট পাওয়ার পরই তাই ব্রাজিল কোচ তিতে ও দলের ডাক্তার লাসমার গত সপ্তাহে চলে আসেন প্যারিসে। তিতে তো জানিয়েও দিয়েছিলেন, যদি অস্ত্রোপচার হয়, আর এরপর ঠিক সময়ে সেরে উঠতে না পারেন নেইমার, তাহলে আধা ফিট নেইমারকে কোপা আমেরিকার জন্য বিবেচনা করবেন না।
কিন্তু এখন জানা গেল, অস্ত্রোপচারই লাগছে না। পিএসজি কাল বিবৃতিতে লিখেছে, ‘বিশদ বিশ্লেষণের পর বিশেষজ্ঞরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নেইমারের ডান পায়ের পঞ্চম মেটাটারসালের চোটে অস্ত্রোপচারবিহীন চিকিৎসাপদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ জানানোর পর পিএসজির ব্রাজিলিয়ান তারকাও এতে রাজি হয়েছেন। ১০ সপ্তাহের মধ্যেই নেইমারের মাঠে ফেরার আশা করা যাচ্ছে।’
১০ সপ্তাহ, মানে ইউনাইটেডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর দুই লেগেই নেই নেইমার। ১২ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেডের মাঠে প্রথম লেগ, পিএসজির মাঠে দ্বিতীয় লেগ ৬ মার্চ। তাঁকে ছাড়াই পিএসজি ইউনাইটেড-বাধা পেরোতে পারলে কোয়ার্টার ফাইনালে হয়তো খেলবেন। যেটির প্রথম লেগ হওয়ার কথা ৯ ও ১০ এপ্রিল, দ্বিতীয় লেগ এক সপ্তাহ পর।
কিন্তু পরপর দুই মৌসুমে একই চোটে চিকিৎসাপদ্ধতি ভিন্ন হলো কেন? সেটি দুবারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দুই ভিন্ন পক্ষের হাতে থাকায়। গত মৌসুমে নেইমারের অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন লাসমার, অস্ত্রোপচারও তিনিই করেছিলেন। কিন্তু এবার নেইমারকে ছুরি-কাঁচির নিচে না যেতে দেওয়ার সিদ্ধান্তটা পিএসজির। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফ্রেঞ্চ ক্লাবটির এক ব্যক্তি এএফপিকে তা-ই বলেছেন, ‘ক্লাব এবার পুরো ব্যাপারটার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।’
অস্ত্রোপচার ছাড়াই কীভাবে নেইমারের ফিটনেস ফেরানো হবে, সেটিও ক্রীড়াক্ষেত্রে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়ায় বিশেষজ্ঞ ওই ব্যক্তির কাছেই জানা গেল, ‘অর্থোপেডিক চিকিৎসার মাধ্যমে ওই হাড়টিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে। সঙ্গে ইনজেকশনের মাধ্যমে স্টেম সেলও দেওয়া হবে।’
তাতে নেইমার আগের অবস্থায় দ্রুত ফিরে এলে তো পিএসজি-ব্রাজিল দুই পক্ষেরই লাভ।