>যে দামে কিনেছি, সেটাই দিতে হবে—পিএসজি এই দাবি থেকে এরই মধ্যে সরে এসেছে। এক ধাক্কায় নেইমারের দাম ৭০ মিলিয়ন ইউরো কমিয়ে দিয়েছে ফরাসি ক্লাবটি। বার্সেলোনা আরও কমে পেতে চায় নেইমারকে, গুঞ্জন এমনই
বার্সেলোনা কি নেইমারের বাজারমূল্য কমানোর কৌশল নিয়েছে? এখন তো তা-ই মনে হচ্ছে। নেইমারের দাম কমাতে বার্সেলোনা যে কৌশলগুলো নিয়েছে, যেন দক্ষ শিকারি ফাঁদ বসিয়ে রেখেছে। শিকারও জানে কোথায় ফাঁদটা বসানো। কিন্তু নিরুপায় হয়ে সেই ফাঁদে পা দিতে বাধ্য হচ্ছে ফরাসি ক্লাবটি!
পিএসজি মনে করে, নেইমারকে বার্সেলোনা ফিরে পেতে চায়। কিন্তু প্রকাশ্যে এ নিয়ে আগ্রহ দেখাতে স্প্যানিশ ক্লাবটি রাজি নয়। উল্টো তারা এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক বার্তা দিয়েছে, ‘নেইমারকে কেনা সম্ভব না।’ এতেই বার্সেলোনা দর-কষাকষিতে সুবিধাজনক জায়গায় চলে গেছে। বার্সেলোনার বড় উপকার করে দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। নেইমারকে কেনার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ যে নেই, রিয়াল সেটিও পরিষ্কার করে দিয়েছে। এই বাস্তবতায় পিএসজি নেইমারের দাম কমিয়ে ফেলছে বলে খবর দিয়েছে ফ্রান্সের শীর্ষ ক্রীড়া পত্রিকাগুলোর একটি ‘এল পাইস’।
দুই বছর আগে নেইমারকে ২২০ মিলিয়ন ইউরোর অবিশ্বাস্য অঙ্ক দিয়ে কিনেছিল ফরাসি ক্লাবটি। যা ছিল তখনকার দল বদলের বিশ্ব রেকর্ডেরও দ্বিগুণ। এখন নেইমারকে একই দামে বেচতে চায় পিএসজি। সমস্যা হলো, নেইমারকে বিক্রি করার তাগিদটা পিএসজি প্রকাশ করে ফেলেছে। বিক্রেতার তাগিদ বেশি থাকলে দর তো পড়বেই! অন্তত যেখানে ক্রেতাই নেই।
নেইমার প্রাক-মৌসুমের অনুশীলনে দলে যোগ দেননি। ক্লাবের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যা খোলাখুলি অসম্মান প্রদর্শন। এই ঘটনার পর নেইমার-পিএসজি সম্পর্ক এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যা আর জোড়া লাগার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই বাস্তবতায় পিএসজি নেইমারের দাম অবিশ্বাস্য অঙ্কে কমিয়ে আনতে যাচ্ছে বলে খবর দিয়েছে এল পাইস। এক ধাক্কায় নেইমারের দাম কমে এখন ১৫০। তবে বার্সেলোনা এখনো এই দামে নেইমারকে পেতে চায় না।
বার্সেলোনা আসলে সুযোগের অপেক্ষায় আছে। আর এই কৌশলের নেপথ্যে আছেন খোদ বার্সা সভাপতি বার্তেমেউ। তিনি মনে করেন, নেইমার ও পিএসজির সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে গেলে বার্সেলোনা তখন নেইমারকে কেনার ব্যাপারে আলাপ শুরু করবে। এদিকে বার্সা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে আঁতোয়ান গ্রিজমানকে বাই ক্লজ দিয়েই কিনে আনছে। গ্রিজমানের জন্য ১২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করবে বার্সেলোনা। একই দল বদলের বাজারে নেইমারের জন্য আরও ১৫০ ইউরো গোনা বার্সার পক্ষে সম্ভব নয়।
ওদিকে নেইমার দৃশ্যত বার্সেলোনার চাওয়া পূরণ করতে সম্ভাব্য সবকিছু করছেন। প্রাক-মৌসুমে অনুশীলনে যোগ না দেওয়া তারই উদাহরণ। অবশ্য বার্সেলোনার খেলোয়াড় ভাগিয়ে আনার এটা পুরোনো কৌশল। সুয়ারেজ, ডেম্বেলে, কুতিনহোরাও একইভাবে বার্সেলোনায় আসার জন্য গোঁ ধরে অনুশীলন বয়কট করেছিলেন।
তবে অতীতে পিএসজির সঙ্গে বার্সার এমন দর-কষাকষির উল্টো ফলও দেখা গেছে। মিডফিল্ডার ভেরাত্তির দাম নিয়েও বার্সা পিএসজিকে কম ঘোরানো ঘোরায়নি। ওই মৌসুমেই উল্টো পিএসজি নেইমারকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। নেইমারকে ফিরে পেতে দর-কষাকষির মধ্যেই না অন্য ক্লাব ছোঁ মেরে নিয়ে যায় ব্রাজিল তারকাকে!