আগস্টের শেষ দিকে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের মাধ্যমে গত মৌসুমের পর্দা নেমেছে। এরই মধ্যে ফ্রান্সে নতুন মৌসুম শুরু হয়ে গেলেও সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে শুরু হয়ে যাচ্ছে ইউরোপের অন্য বড় লিগগুলোর পরবর্তী মৌসুম।
করোনাভাইরাসের কারণে গত মৌসুম শেষ হতে সময় নিয়েছে বেশ। সে তুলনায় পরবর্তী মৌসুম শুরু হচ্ছে জলদি। ফলে ক্লাবগুলো সাধারণত নিজেদের গোছানোর যে সময় পায়, এবার তেমন পাচ্ছে না। স্কোয়াডের ঘাটতি অনুসন্ধান, সম্ভাব্য খেলোয়াড় নির্বাচন, সেই খেলোয়াড় কেনা, অপ্রয়োজনীয় খেলোয়াড় বিক্রি করা—সময় অল্প হলেও, ক্লাবগুলোর হাতে কাজ অনেক।
এর মধ্যে অনেক ক্লাবই দলবদল শুরু করে দিয়েছে, অনেক ক্লাব আরেকটু বুঝেশুনে নামতে চাইছে বাজারে। এক সপ্তাহ পরেই শুরু হতে যাচ্ছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম। মৌসুমকে সামনে রেখে ক্লাবগুলো নিজেদের কতটুকু গুছিয়ে নিল, কোন কোন জায়গায় কিছুটা ঘাটতি রয়ে গেছে, কেমন হতে পারে তাদের সম্ভাব্য একাদশ, কোন খেলোয়াড় কেনা উচিত, কোচের দর্শনের সঙ্গে কোন সম্ভাব্য খেলোয়াড়ের খেলার ধরন....এমন অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হবে এই ধারাবাহিকে। দ্বিতীয় পর্বে থাকছে টটেনহাম হটস্পার, জুভেন্টাস, এসি মিলান, ইন্টার মিলান ও পিএসজির কথা-
টটেনহাম হটস্পার
প্রয়োজন:
সেন্টারব্যাক, স্ট্রাইকার, লেফটব্যাক
যেতে পারেন:
ড্যানি রোজ, হুয়ান ফয়থ, সার্জ অরিয়ের
যারা আদর্শ বিকল্প হতে পারেন:
আরকাদিউশ মিলিক (নাপোলি), হাবিব দিয়ালো (মেস), কিম মিন-জে (বেইজিং গুয়ান), বাস দস্ত (স্পোর্টিং লিসবন), সেবাস্তিয়ান হলার (ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড), ওট ওয়েগহোর্স্ট (ভলফসবুর্গ), ক্রিস্তফ পিওনতেক (হার্থা বার্লিন), লুকাস তেওদোর্জিক (উদিনেসে), হোসে হিমেনেজ (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ), রুবেন দিয়াস (বেনফিকা), জোনাথন টা (বেয়ার লেভারকুসেন), জেমস টারকোস্কি (বার্নলি), ইসা দিওপ (ওয়েস্ট হ্যাম), রায়ান এইত নুরি (অঁজে), হোসে গায়া (ভ্যালেন্সিয়া), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (আয়াক্স)
জানুয়ারিতে তেমন কাউকে না কিনলেও এবার আর বসে নেই জোসে মরিনহো। আস্তে আস্তে স্কোয়াডে নিজের ছাপ রাখা শুরু করে দিয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে হয়তো হাত খুলে খরচ করতে পারছেন না, তাও ভেবেচিন্তে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় এনেছেন এই পর্তুগিজ কোচ। দলে এসেছেন তৃতীয় এক গোলরক্ষক (জো হার্ট), ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে সাউদাম্পটন থেকে আনা হয়েছে ড্যানিশ তারকা পিয়েরে এমিল হবিয়র্গকে। ওদিকে রাইটব্যাক হিসেবে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স থেকে এসেছেন আয়ারল্যান্ডের ম্যাট ডকার্টি।
টটেনহ্যামের সবচেয়ে বড় চিন্তার জায়গা রক্ষণভাগ। প্রায় তিন বছর নতুন কোনো ডিফেন্ডারকে কেনেনি দলটা। তবে এই মৌসুমে ইয়ান ভার্তোনে থাকছেন না। লেফটব্যাক রোজ, রাইটব্যাক অরিয়ের, ফয়থদের ক্লাব ছাড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এরিক ডায়ারকে এ মৌসুম থেকে মরিনহো ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার নয়, সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলাবেন। তবু একজন সেন্টারব্যাকের অভাব ভালোই ভোগাতে পারে টটেনহামকে। সে লক্ষ্যে নতুন একজনকে আনলে শক্তিশালী হয় স্পাররা। দক্ষিণ কোরিয়ার সেন্টারব্যাক কিম মিন-জে বেশ অনেক দিন ধরেই আছেন মরিনহোর নজরে। দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান ম্যানেজার পলো বেন্তো মরিনহোর স্বদেশি, দুজন বেশ ভালো বন্ধুও বটে। বন্ধুই চাইছেন বন্ধুর দলে প্রতিভাবান এই তারকা খেলুক। ওয়েস্ট হ্যামের ফরাসি সেন্টারব্যাক দিওপকেও গত কয়েক বছর ধরেই পছন্দের তালিকায় রেখেছেন মরিনহো। যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ছিলেন, তখন এই তরুণ তারকাকে দলে চেয়েছিলেন, পাননি। নিজের দেশের তারকা দিয়াসও হতে পারেন এক আদর্শ সংযোজন। এরা ছাড়াও আরও বেশ কিছু খেলোয়াড়ের দিকে চাইলে নজর রাখতে পারেন মরিনহো—লেভারকুসেনের জার্মান সেন্টারব্যাক টা, অ্যাটলেটিকোর হিমেনেজ ও বার্নলির টারকোস্কি।
রাইটব্যাক হিসেবে সার্জ অরিয়েরের জায়গায় এর মধ্যেই চলে এসেছেন ম্যাট ডকার্টি। তবে লেফটব্যাক হিসেবে এখনো কাউকে আনেনি স্পার্স। বেন ডেভিস বা রোজ, কাউকেই অত পছন্দ না মরিনহোর। রোজকে গত মৌসুমের শেষ দিকে নিউক্যাসলে ধারে পাঠানো হয়েছিল। দলে রায়ান সেসেনিওন থাকলেও, লেফট ব্যাকের চেয়ে লেফট উইঙ্গার বা উইংব্যাক হিসেবে বেশি কার্যকরী। সে হিসেবে দলের নতুন লেফটব্যাক হিসেবে চাইলে ফরাসি ক্লাব অঁজের নুরি, ভ্যালেন্সিয়ার গায়া কিংবা আয়াক্সের তাগলিয়াফিকোকে বিবেচনা করতে পারেন মরিনহো।
মরিনহোর আরেক চিন্তা মূল স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনের কোনো ভালো বদলি না থাকা। বহুদিন ধরে তাঁর ‘ডেপুটি’ খুঁজে মরছে টটেনহাম, যাতে অধিনায়ককে মাঝেমধ্যে বিশ্রাম দেওয়া যায়। স্পার্সের এমন একজন দরকার, যিনি শারীরিকভাবে শক্তসমর্থ, বাতাসে ভেসে আসা বল সামলানোয় দক্ষ, ডি-বক্সে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ব্যস্ত রেখে ‘বল হোল্ড’ করে গতিশীল উইঙ্গারদের জায়গা করে দিতে পারেন। এ কাজে তিন পোলিশ স্ট্রাইকার নাপোলির মিলিক, উদিনেসের তেওদোর্জিক, হার্থা বার্লিনের পিওনতেক, ফরাসি ক্লাব মেসের দিয়ালো, ওয়েস্ট হ্যামের হলার, ভলফসবুর্গের ওয়েগহোর্স্ট কিংবা স্পোর্টিং লিসবনের দস্ত—এর মধ্যে যেকোনো একজনকে দলে আনতে পারেন মরিনহো। এর মধ্যে মিলিক, দিয়ালো ও পিওনতেকের ব্যাপারে মরিনহো আগ্রহী বলে শোনা গেছে।
আগামী মৌসুমে টটেনহামের সম্ভাব্য একাদশ (ও খেলোয়াড়দের বিকল্প) যেমন হতে পারে।
জুভেন্টাস
প্রয়োজন:
স্ট্রাইকার, আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার, রাইটব্যাক
যেতে পারেন:
গঞ্জালো হিগুয়েইন, সামি খেদিরা, অ্যারন রামসে, মার্কো পিয়াকা, আদ্রিয়ান রাবিওত
যারা আদর্শ বিকল্প হতে পারেন:
মিলিক (নাপোলি), লুইস সুয়ারেজ (বার্সেলোনা), জেকো (এএস রোমা), ডেনজেল ডামফ্রাইজ (পিএসভি), সার্জিনো দেস্ত (আয়াক্স), লরেঞ্জো পেলেগ্রিনি (এএস রোমা), নিকোলো জানিওলো (রোমা), লুইস আলবার্তো (লাৎসিও), দুভান জাপাতা (আতালান্তা), ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন (ইন্টার মিলান)
গত লিগে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গোল করেছিলেন ৩১টি। যারা জুভেন্টাসের খেলাগুলো ভালোভাবে দেখেননি, তাঁদের মনে হতেই পারে, আক্রমণের দিক দিয়ে কী দুর্দান্ত এক মৌসুমই না কাটিয়েছে জুভেন্টাস! আসলে তেমন হয়নি। রোনালদোর প্রায় ৪৫ ভাগ গোলই (১৪টি) এসেছে ‘ডেড বল’ পরিস্থিতি (ফ্রি কিক, পেনাল্টি) থেকে। অর্থাৎ, ফ্রি-কিক বা পেনাল্টি ছাড়া রোনালদোর গোল ১৭টি। অন্য স্ট্রাইকারের জন্য এই ১৭ গোলই মহার্ঘ। কিন্তু রোনালদো তো সাধারণ কেউ নন। তাই এই সংখ্যাটা দেখলে ভ্রু কুঁচকে ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু রোনালদোর গোল কেন এত কম হলো?
আক্রমণভাগের অন্যান্য খেলোয়াড়ও যে খুব বেশি গোল করেছেন তাও নয়। লিগে পাওলো দিবালার গোল রোনালদোর চেয়ে বিশটা কম। হিগুয়েইনের ৮টা। মিডফিল্ড থেকে সবচেয়ে বেশি গোল মিরালেম পিয়ানিচ আর রামসের। একজন এর মধ্যেই বার্সেলোনায় পাড়ি জমিয়েছেন, আরেকজন চোটে চোটে বিপর্যস্ত। মিডফিল্ডে পর্যাপ্ত সৃষ্টিশীলতা নেই, মিডফিল্ড থেকে আক্রমণভাগের পর্যাপ্ত সংযোগ নেই। এতেই গোল খরা রোনালদো-দিবালাদের। পারমা থেকে দেয়ান কুলুসেভস্কিকে আনা হলেও এই সুইডিশ একজন রাইট উইঙ্গার। তাই গোল বাড়ানোর জন্য রোনালদোর একজন আদর্শ স্ট্রাইক-সঙ্গী এবং একজন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার দরকার। রিয়াল মাদ্রিদে থাকার সময় করিম বেনজেমার সঙ্গে যেমন জুটি গড়ে তুলেছিলেন রোনালদো, অমন কাউকে জুভেন্টাসে এখনো পাননি। সে সমস্যা সমাধানে জুভেন্টাস এর মধ্যেই নাপোলির মিলিক, রোমার জেকো, বার্সেলোনার সুয়ারেজ, আতালান্তার জাপাতার মতো খেলোয়াড়দের দিকে নজর দিয়েছে।
জুভেন্টাসে মিডফিল্ডারের সংখ্যা যত, সে তুলনায় আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার তেমন নেই। মৌসুমের বিভিন্ন সময়ে পাওলো দিবালাকে দিয়ে কাজ চালানো গেলেও মিডফিল্ড থেকে আক্রমণভাগের সঙ্গে সংযোগ ঘটানোর জন্য আদর্শ মিডফিল্ডার নেই দলটায়। এ ক্ষেত্রে নতুন কোচ আন্দ্রেয়া পিরলোর নজরে আসতে পারেন লাৎসিওর স্প্যানিশ তারকা আলবার্তো, ইন্টার মিলানে সুযোগ না পাওয়া ড্যানিশ মিডফিল্ডার এরিকসেন ও রোমার জোড়া তারকা লরেঞ্জো পেলেগ্রিনি ও নিকোলো জানিওলো।
রাইটব্যাক পজিশনেও জুভেন্টাস বেশ ভুগছে। মাত্তিয়া ডি শিলিও কখনই তেমন আশাব্যঞ্জক পারফরম্যান্স দেখাতে পারেন না, যে কারণে মৌসুমের শেষ দিকে উইঙ্গার হুয়ান কুয়াদ্রাদোকে রাইটব্যাক হিসেবে খেলিয়েছিলেন সাবেক কোচ মরিজিও সারি। এ জায়গায় একজন খেলোয়াড় বড্ড দরকারি তুরিনের বুড়িদের। এ সমস্যা সমাধান হতে পারেন আয়াক্সের আমেরিকান রাইটব্যাক সার্জিনো দেস্ত, পিএসভির ডামফ্রাইজ, কিংবা রিয়াল বেতিসের এমারসনরা।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, আগামী মৌসুমে জুভেন্টাসের সম্ভাব্য একাদশ (ও খেলোয়াড়দের বিকল্প) কেমন হতে পারে।
এসি মিলান
প্রয়োজন:
সেন্টারব্যাক, ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, রাইটব্যাক, স্ট্রাইকার
চলে যেতে পারেন:
আন্দ্রেয়া কন্তি, রাদে ক্রুনিচ, ডিয়েগো লাশাল্ট, মাতেও মুসাক্কিও, লিও দুয়ার্তে
যারা আদর্শ বিকল্প হতে পারেন:
ক্রিস্তোফার আজার (সেল্টিক), নিকোলা মিলেঙ্কোভিচ (ফিওরেন্টিনা), মারাশ কুম্বুলা (হেল্লাস ভেরোনা), ডামফ্রাইজ (পিএসভি), অরিয়ের (টটেনহাম), ফ্লোরেন্তিনো লুইস (বেনফিকা), সান্দ্রো তোনালি (ব্রেসিয়া), বাকায়োকো (চেলসি), ডমিনিক জবোস্লাই (সালজবুর্গ), এমারসন (রিয়াল বেতিস), লুকাস তোরেইরা (আর্সেনাল), মুসা দেম্বেলে (লিওঁ), মাইরন বোয়াদু (এজেড আলকমার), রেনাতো সানচেস (লিল), মাতেও গেনদোজি (আর্সেনাল), ব্রিল এমবোলো (বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখ)
গত মৌসুমের শেষ দিকে ফর্মের উন্নতি হলেও মিলান স্কোয়াডে এখনো বেশ ঘাটতি রয়েছে। দলের মূল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলছেন ৩৮ বছর বয়সী ইব্রাহিমোভিচ। ইব্রার যোগ্য বিকল্প হিসেবে কাউকে গড়ে তুলতে পারেনি মিলান। এমন কাউকে পায়নি যে কি না ইব্রার সঙ্গে ভালো জুটি গড়ে তুলতে পারেন। মাইরন বোয়াদু কিংবা গ্লাডবাখের ব্রিল এমবোলোর ব্যাপারে চাইলে আগ্রহী হতে পারে মিলান। ডি-বক্সে ডিফেন্ডারদের তটস্থ রাখা, গতি দেখিয়ে উইং থেকে ভেতরে ঢুকে শট করা, সতীর্থদের ডি-বক্সে জায়গা করে দেওয়া—এমন কাজগুলোয় এমবোলো বা বোয়াদু বেশ কার্যকরী হবেন।
মিডফিল্ডে ফ্র্যাঙ্ক কেসি ও ইসমায়েল বেনেসার দারুণ জুটি গড়ে তুলেছেন। ওদিকে চলে গেছেন লুকাস বিলিয়া। একজন আদর্শ সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার তাই প্রয়োজন মিলানের। রাদে ক্রুনিচ কিংবা লুকাস পাকেতাদের ওই জায়গায় প্রায় সময় খেলানো হলেও প্রত্যাশিত ফলাফল আসেনি। একজন এমন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার দরকার যিনি একই সঙ্গে রক্ষণভাগের সামনে থেকে প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের আক্রমণের সূচনা করতে পারেন। এ ভূমিকায় ব্রেসিয়ার সান্দ্রো তোনালি হতে পারেন সবচেয়ে আদর্শ বিকল্প। এ ছাড়াও বেনফিকার লুইস, চেলসির বাকায়োকোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে দলটা। তবে তোনালিরই যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
রক্ষণভাগেও নজর দিতে হবে মিলানকে। সেন্ট্রাল ডিফেন্সে অধিনায়ক রোমানিওলির যোগ্য সঙ্গী নেই। মিলেঙ্কোভিচ, আজার, কুম্বুলা প্রত্যেকে কম মূল্যে আদর্শ বিকল্প হতে পারেন। রাইটব্যাকে ডেভিডে কালাব্রিয়া সম্প্রতি আলো ছড়ালেও দীর্ঘ মৌসুমে তাঁর ওপরে ভরসা করার বিষয়টাও প্রশ্নবিদ্ধ। মিলানের আগ্রহ দেখাচ্ছে অরিয়ের, এমারসন, ডামফ্রাইজের প্রতি।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, আগামী মৌসুমে এসি মিলানের সম্ভাব্য একাদশ (ও খেলোয়াড়দের বিকল্প) কেমন হতে পারে
ইন্টার মিলান
প্রয়োজন:
ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, লেফটব্যাক, সেন্টারব্যাক
চলে যেতে পারেন:
মাতিয়াস ভেচিনো, ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন, মিলান স্ক্রিনিয়ার, মার্সেলো ব্রোজোভিচ, জোয়াও মারিও, রাজা নাইনগোলান, ইভান পেরিসিচ
যারা আদর্শ বিকল্প হতে পারেন:
এমারসন (চেলসি), এনগোলো কান্তে (চেলসি), ইব্রাহিম সাঙ্গারে (ইন্টার মিলান), মিলেঙ্কোভিচ (ফিওরেন্টিনা), কুম্বুলা (হেল্লাস ভেরোনা), বুবাকারি সোমারে (লিল), আলেক্স গ্রিমালদো (বেনফিকা), আলেক্স তেয়েস (এফসি পোর্তো), ম্যাথিয়াস অলিভিয়েরা (গেতাফে)
কোচ আন্তোনিও কন্তের পছন্দের ৩-৫-২ ছকে খেলানোর জন্য ইন্টারের এমন সেন্টারব্যাক দরকার, যারা একজন নয়, বরং দুজনের সঙ্গে খেলতে স্বচ্ছন্দ। স্লোভাকিয়ার মিলান স্ক্রিনিয়ার একজনের সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলতে পারলেও দুজনের সঙ্গে মিলে খেলতে পারেন না। এ কারণে মূল একাদশে জায়গা হারিয়েছেন। ইন্টারের একজন সেন্টারব্যাক দরকার যারা ৩-৫-২ ছকে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেন। এ লক্ষ্যে কন্তের পছন্দ হতে পারেন মিলেঙ্কোভিচ, দিয়াস কিংবা কুম্বুলা।
একজন আদর্শ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারও খুঁজছেন কন্তে, যার পাশে নিকোলো বারেলা ও স্টেফানো সেনসিরা ভালোভাবে খেলতে পারেন। এই ভূমিকায় কন্তের পছন্দ আর্তুরো ভিদাল কিংবা এনগোলো কান্তে। তবে অপেক্ষাকৃত কম দামের সাঙ্গারে, সোমারে হতে পারেন আদর্শ সংযোজন। দরকার একজন লেফটব্যাকও। এই মৌসুমে ডানদিকে তরুণ আশরাফ হাকিমিকে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে নিয়ে এসেছে ইন্টার, এমন তরুণ লেফট উইংব্যাক দরকার ইন্টারের। কোচের পছন্দ চেলসির এমারসন হলেও বেনফিকার গ্রিমালদো, পোর্তোর তেয়েস কিংবা গেতাফের অলিভিয়েরাও ভালো বিকল্প।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, আগামী মৌসুমে ইন্টার মিলানের সম্ভাব্য একাদশ (ও খেলোয়াড়দের বিকল্প) কেমন হতে পারে।
পিএসজি
প্রয়োজন:
সেন্টারব্যাক, রাইটব্যাক, উইঙ্গার, সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার, স্ট্রাইকার
চলে যেতে পারেন:
আরেওলা, ইউলিয়ান ড্রাক্সলার, হেসে রদ্রিগেজ, পাবলো সারাবিয়া, ইদ্রিসা গেয়ে
যারা আদর্শ বিকল্প হতে পারেন:
লিও দুবোয়া (লিওঁ), কালিদু কুলিবালি (নাপোলি), থিয়াগো আলকানতারা (বায়ার্ন মিউনিখ), গেনদোজি (আর্সেনাল), হেক্টর বেয়েরিন (আর্সেনাল), অ্যাডাম মারুসিচ (লাৎসিও), সার্গেই মিলিঙ্কোভিচ-সাভিচ (লাৎসিও), কান্তে (চেলসি), এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা (রেনেঁ), হান্স হাটেবোর (আতালান্তা), মিলান স্ক্রিনিয়ার (ইন্টার মিলান)
চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল হারের পর পিএসজির তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে জানিয়েছিলেন দলে নতুন খেলোয়াড়ের প্রয়োজনীয়তার কথা। আর বলবেন না-ই বা কেন? আগামী মৌসুমে থিয়াগো সিলভা, এডিনসন কাভানি, টমাস মনিয়েঁদের ছাড়াই মাঠে নামতে যাচ্ছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা, যারা গত কয়েক বছর ধরে মূল একাদশের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। তাঁদের জায়গায় একজন রাইটব্যাক, একজন সেন্টারব্যাক ও একজন স্ট্রাইকার আনা অনেক দরকার। এ ছাড়াও একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার আনতে পারেন কোচ টমাস টুখেল।
রাইটব্যাক হিসেবে থিলো কেহরারকে নিয়মিত খেলানো হলেও সেন্টারব্যাক হিসেবেই তিনি বেশি কার্যকরী। আর্সেনালের হেক্টর বেয়েরিনকে আনার ব্যাপারে পিএসজি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, আগ্রহ আছে দুবোয়া ও মারুসিচের প্রতিও। আতালান্তার হাটেবোরকেও চাইলে আনতে পারে পিএসজি। মিডফিল্ডার ড্রাক্সলার ও গেয়েকে বিক্রি করে দিতে চায় দলটা। সে ক্ষেত্রে লাৎসিওর মিলিঙ্কোভিচ-সাভিচ, তরুণ কামাভিঙ্গা কিংবা লিলের সোমারে আদর্শ সংযোজন হতে পারেন। স্ট্রাইকার হিসেবে মাউরো ইকার্দি থাকলেও তাঁর আদর্শ বিকল্প নেই। এমন কেউ নেই যিনি শুধু ‘নাম্বার নাইন’ নয়, বরং প্রয়োজনে আক্রমণভাগের যেকোনো পজিশনে খেলতে পারেন ও দলের বৃহত্তর স্বার্থে বেঞ্চে বসে থাকতেও আপত্তি নেই।
সবচেয়ে বেশি দরকার রক্ষণভাগে সিলভার একজন আদর্শ বিকল্প। সে জায়গায় খেলার জন্য একজন নেতা দরকার পিএসজির রক্ষণভাগে। এ দায়িত্ব পালন করার জন্য নাপোলি থেকে কুলিবালিকে আনতে পারলে পিএসজির জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। দেখা যাক, টুখেলের কাকে পছন্দ হয়!
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, আগামী মৌসুমে পিএসজি সম্ভাব্য একাদশ (ও খেলোয়াড়দের বিকল্প) কেমন হতে পারে
আগামী পর্বে আলোচনা করা হবে স্প্যানিশ লা লিগা ও বুন্দেসলিগার পরাশক্তিদের নিয়ে। থাকবে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ ও বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে নিয়ে আলোচনা।