এডেন হ্যাজার্ডকে আনার জন্য রিয়াল মাদ্রিদের চেষ্টা চলছিল বহুদিন ধরেই। কিন্তু চেলসির সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না ক্লাবটির। অবশেষে এ মৌসুমের শুরুতে তাঁকে ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে পেয়েছে রিয়াল। শর্ত সাপেক্ষে অঙ্কটা আরও বাড়তে পারে। তবু তাঁকে পেয়েই সন্তুষ্ট হয়েছিল রিয়াল। সমর্থকেরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন, বেলজিয়ান প্লেমেকারের জাদু দলবদলের অঙ্কটা ভুলিয়ে দিতে দেরি করবেন না। কিন্তু প্রাক মৌসুমে হ্যাজার্ডকে দেখ সবাই চোখ কচলালেন। একী!
লম্বা ছুটি পেয়ে একটু দেরি করে অনুশীলনে ফিরেছিলেন হ্যাজার্ড। ছুটিটা বেশ উপভোগ করেছেন সেটা তাঁর ভারিক্কি গড়ন দেখে সবাই টের পেয়েছে। ফলে রিয়ালের জার্সিতে তাঁর ফর্ম ফিরে পেতেও সময় লেগেছে অনেক। স্পোর্টস ও ফুট ম্যাগাজিনের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেটা অকপটে স্বীকারও করে নিয়েছেন হ্যাজার্ড, ‘এটা সত্যি, আমি মিথ্যা বলব না। কিন্তু আমি যখন ছুটিতে থাকি তখন আমি আসলেই ছুটি কাটাই। এই গ্রীষ্মে আমার ৫ কেজি ওজন বেড়েছে। আমি এমনই, খুব দ্রুত ওজন বাড়ে আবার আমি চাইলেই দ্রুত সেটা ঝেড়ে ফেলতে পারি।’
নিজের শারীরিক গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন লিল ও চেলসির হয়ে ফ্রেঞ্চ ও ইংলিশ লিগ জেতা এই উইঙ্গার, ‘১৮ বছর বয়সে যখন আমি লিলে ছিলাম তখনই আমার ওজন ছিল ৭২ বা ৭৩ কেজি। আমি যখন পেশি বাড়ালাম তখনো ওজনও ৭৫-এ উঠেছিল। খুব বাজে অবস্থায় সেটা ৭৭-ও হতো। এ গ্রীষ্মে আমার ওজন ৮০ কেজি হয়েছিল কিন্তু সেটা ১০ দিনেই আমি কমিয়ে এনেছি।’
ওজন কমিয়ে প্রাক মৌসুমে শেষ করলেও অবশ্য মাঠে ফেরা হয়নি হ্যাজার্ডের। চোট পাওয়ায় রিয়ালের জার্সিতে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে খেলার জন্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু তাঁর সেরা রূপের দেখা পেতে এক মাসেরও বেশি অপেক্ষা করতে হয়েছিল। যখনই সেরা রূপে দেখা দিয়েছেন, তখন পিএসজির বিপক্ষে স্বদেশি ডিফেন্ডারের মুনিয়েরের ট্যাকলে বেড়িয়ে যেতে হয়েছে মাঠ থেকে। নভেম্বরের সে চোট এখনো তাঁকে মাঠের বাইরে রেখেছে। ফলে রিয়াল সমর্থকদের হতাশা বাড়ছেই।
রিয়ালের হয়ে এ মৌসুমে মাত্র ১৩ ম্যাচ খেলছেন হ্যাজার্ড। ফলে হতাশ বোধ করছেন তিনি নিজেও। হাজার হলেও অনেক দিনের স্বপ্ন তাঁর রিয়ালের জার্সিতে খেলার, ‘যখন আমি বাগানে খেলতাম তখন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলছি সে স্বপ্ন দেখতাম। জিদান আমার আদর্শ ছিল। যখন টিভিতে বার্নাব্যু দেখানো হতো, সে মুহূর্তগুলো ছিল জাদুকরী। যখন খেলতাম তখন সবাই রিয়াল মাদ্রিদের কথা বলত এবং তাদের খেলা দেখত।’
২৯ বছর বয়সী হ্যাজার্ড অবশেষে তাঁর স্বপ্ন পূরণ করেছেন। খেলছেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। তবে সবকিছু ঠিকভাবে হলে আরও তিন বছর আগেই তাঁর স্বপ্ন পূরণ হতো। ২০১৬ সালেই যে তাঁর আদর্শ তাঁকে রিয়ালে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, ‘২০১৬ ইউরো চলার সময় আমাকে ফোন দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন তিনি আমাকে চান। এটা আমার মাথায় ছিল। আমরা একরকম নই। টেকনিকের দিক থেকে আমার চেয়ে ভালো ছিলেন তিনি। তাঁর দিকে তাকালেই বোঝা যায় ফুটবল পায়ে সব সময় ভালো সময় কাটাতেন। এখানে সব অনুশীলন বল পায়ে হয়। আমি তিন বছর ইতালিয়ান কোচ কন্তে ও সারির সঙ্গে কাটিয়েছি, সময়টা খুব একটা আনন্দময় ছিল না। রিয়ালে এসে আমি আবার নিজের পছন্দের কাজ করছি।’