ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর লিওনেল মেসি। এক যুগ ধরে এই দুই ফুটবলার নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার জন্য একের পর এক কীর্তি গড়েছেন, গড়ছেন। অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ার গড়ার পথে দুজনই পেয়েছেন শতকোটি ভক্ত-সমর্থকের ভালোবাসা। পেয়েছেন শতকোটি নিন্দুকও। অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে সেসব নিন্দুকের মুখ কীভাবে বন্ধ করতে হয়, সেটাও তাঁদের থেকে ভালো আর কেউ জানেন না। কিন্তু বারবার ধেয়ে আসা নিন্দুকদের সমালোচনা কি তাঁদের গায়ে লাগে না? রোনালদো বললেন, লাগে!
সমালোচকদের জবাব দিতে দিতে এখন প্রচণ্ড বিরক্ত লাগে রোনালদোর, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি, ‘প্রতিবছর আমাকে কারও না কারও কাছে প্রমাণ করতে হয় যে আমি অনেক ভালো একজন ফুটবলার। অস্বীকার করব না, প্রতিবছর এই কাজ করতে করতে আমি ক্লান্ত, বিরক্ত। কাজটা বারবার করা অনেক কঠিন।’ বারবার নিজেকে সেরাদের সেরার তালিকায় ওপরের দিকে রাখার জন্য সে শারীরিক ও মানসিক চাপ নিতে হয়, তা রোনালদো ছাড়াও প্রভাব ফেলে তাঁর পরিবারের ওপর, ‘প্রতিবার নিজের ওপর অতিরিক্ত চাপ নিতে হয়। শুধু নিজের ওপরই নয়; আমার পরিবার, মা, আমার ছেলের ওপরেও এর প্রভাব পড়ে। ভালো যদি না-ই হতাম, তাহলে পাঁচবার ব্যালন ডি’অর আর পাঁচটা চ্যাম্পিয়নস লিগ কীভাবে জিতলাম?’
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে প্রথম হয়েছিলেন বিশ্বসেরা। সেখান থেকে রিয়াল মাদ্রিদে গিয়ে ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম খোদাই করেছেন। এখন রিয়াল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন জুভেন্টাসে। অন্য ফুটবলারদের বয়স যেখানে ৩০ পার হলেই ফর্ম নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়ে যায়, সেখানে রোনালদো অনন্য। নিন্দুকদের সমালোচনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বয়স যতই বাড়ছে, ততই আরও যেন ক্ষুরধার হচ্ছেন তিনি। এবারও গোলের পর গোল করে জুভেন্টাসকে জিতিয়েছেন লিগ শিরোপা। বয়স নিয়ে যখন খোঁটা শোনেন, তখন কী মনে হয় রোনালদোর? ‘লোকজন সব সময় কিছু না কিছু খোঁটা দেবেই। সেই ৩০ বছর পার হওয়ার পর থেকে শুনেই যাচ্ছি যে ওর ৩২/৩৩/৩৪ বছর বয়স হয়ে গেছে, ওর আর কিছু দেওয়ার নেই।’
সমালোচকদের সমালোচনা যে রোনালদোকে আরও সাফল্য–বুভুক্ষু করে তোলে, সেটার জন্য আর অন্য প্রমাণের কি দরকার আছে?