প্রতিপক্ষকে নকআউট করতে ভালোবাসেন। তাঁর পাঞ্চ চোয়ালে লাগলে আবার উঠে দাঁড়ানো কঠিন। দুবারের হেভিওয়েট বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন টাইসন ফিউরি বক্সিং রিংয়ে সম্ভবত আর জুতসই প্রতিপক্ষ পাচ্ছেন না। নিজের ‘পাঞ্চিং ব্যাগ’ হিসেবে তাই যেন বেছে নিয়েছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের।
নিজের প্রিয় ক্লাবের দুরবস্থার জন্য যে মালিকপক্ষ কিংবা কোচ নন, ফুটবলারদেরই বেশি দায় দেখছেন ফিউরি। তাঁর ধারণা, ইউনাইটেডে অনেক বেশি নাটুকে খেলোয়াড় জড়ো হয়েছেন, তাঁদের ঝেঁটিয়ে বিদায় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
পাঁচ মৌসুম ধরে কোনো সাফল্য নেই ইউনাইটেডের। লিগ বা চ্যাম্পিয়নস লিগ দূরে থাক, মর্যাদার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে থাকা এফএ কাপ বা লিগ কাপও জিততে পারছে না দলটি। অথচ দলবদলের বাজারে সবচেয়ে বেশি অর্থ তারাই খরচ করেছে। লিগের সবচেয়ে বেতনভোগী খেলোয়াড়ও ইউনাইটেড স্কোয়াডেরই। এর পেছনে প্রয়োজন অনুযায়ী খেলোয়াড় কিনতে না পারার ব্যর্থতা আছে, আছে যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারা কোচ নিয়োগ না দেওয়ার ব্যর্থতাও।
এ ব্যাপারে ফিউরির চিন্তা একটু ব্যতিক্রম। ইউনাইটেড–সমর্থক হিসেবে ইদানীং যে সময়টা তাঁর ভালো যাচ্ছে না, সেটা প্রথমেই স্বীকার করে নিয়েছেন বক্সিংয়ের মহাতারকা, ‘এখন যেহেতু অবসর নিয়েছি, এবার ওল্ড ট্রাফোর্ড নিয়ে একটু বেশি মনোযোগ দিতে পারব। যদিও সত্যি বলছি, ইদানীং যখন ওদের খেলা দেখতে যাই, ওরা হারে। আর আমি দুইয়ে থাকার লোক নই, আমি হার সহ্য করি না। আমি এসব ফালতু জিনিস পছন্দ করি না। হয় জিতব, নইলে কিছুই করব না। এ মুহূর্তে তাই ইউনাইটেডের খেলা দেখলে প্রচণ্ড বিরক্তি লাগে। কারণ, ৯০ মিনিট ধরে কেন এরা বলের পেছনে ছুটছে না, এটা মাথায় ঢোকে না আমার।’
এই ব্রিটিশ বক্সারের ধারণা, ক্লাবে অতি নাটুকেপনা বেড়ে গেছে বলেই এ অবস্থা ইউনাইটেডের। দ্য মিররকে বলেছেন, ‘অনেকেই ম্যানেজার বা কোচদের দোষ দেয়। কিন্তু দিন শেষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নাটুকে খেলোয়াড়ের সংখ্যা অনেক বেশি। সবচেয়ে ভালো যেটা হতে পারে, সব কটিকে বের করে দেওয়া, এখন যেটা হচ্ছে। এদের মেরে শুইয়ে ফেলা উচিত।’
ছয় বছরের চুক্তি শেষে কদিন আগেই ক্লাব ছেড়েছেন পল পগবা। একসময়ের বিশ্ব রেকর্ড গড়ে যাঁকে আনা হয়েছিল, সেই পগবা মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই ইউনাইটেডে বেশি আলোচিত ছিলেন। পগবার মতোই ক্লাব ছাড়ছেন জেসি লিনগার্ডও। ফিউরির ইঙ্গিতটা তাঁদের দিকেই।
ইউনাইটেডকে আগের অবস্থায় ফেরাতে হলে কী করতে হবে, সেটাও জানা আছে ফিউরির, ‘ওদের দরকার কড়া একজন, যেমন স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ছিলেন। যিনি ওদের কী করতে হবে, সেটা বলতে পারবেন এবং তারা কথা না শুনলে বলবেন, তোমার জায়গা বেঞ্চে। তুমি কত ভালো, কিংবা কত বিখ্যাত, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। পরিশ্রম না করলে ম্যাচ খেলতে পারবে না। দল শব্দটার মানে হলো সবাইকে নিজ নিজ কাজ করতে হবে, অন্য কেউ তাদের হয়ে গোল করবে বা তাদের হয়ে দৌড়াবে, এমন নয়।’