>সিরি আ’তে কাল উদিনেসের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে জুভেন্টাস। গোল করেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
মাঠের বাইরের বিতর্ক তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। তা ভুলতে মাঠে ভালো খেলতে হতো। বড় মাপের ফুটবলাররা যেমন হয়ে থাকেন আরকি। পারফরম্যান্স দিয়ে মুছে ফেলেন সব বিতর্ক। কাল সিরি ‘আ’তে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেও দেখা গেলে এমন চেহারায়। দর্শকদের দুয়ো আর হর্ষধ্বনি দুটোই শুনতে হয়েছে তাঁকে। আর রোনালদো নিজের কাজটা সেরেছেন দুর্দান্ত এক গোল করে।
উদিনেসের মাঠে নেমেছিল জুভেন্টাস। টানা সাতবারের লিগ চ্যাম্পিয়নদের ২-০ গোলের জয়ে রোনালদোর অবদান এক গোল। পর্তুগিজ তারকার জন্য সেটি কি শুধুই গোল? ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে রোনালদোকে ঘিরে। স্পনসর প্রতিষ্ঠানগুলো তা নিয়ে চিন্তিত। সমালোচনায় ছেয়ে গেছে চারপাশ। সব মিলিয়ে আলোচনা কিংবা বিতর্ক—রোনালদো যেন এখন সবকিছুরই কেন্দ্রবিন্দু। আর তাই রোনালদো যে ভীষণ মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, তা বলাই বাহুল্য। ফুটবলারদের ক্ষেত্রে এসব চাপ কাটিয়ে উঠতে গোলের চেয়ে ভালো ‘টোটকা’ আর কী হতে পারে!
অথচ মাঠে রোনালদোকে দেখে বোঝাই গেল না, কী ভীষণ চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ৩৩ মিনিটে রদ্রিগো বেনতাঙ্কুরের গোলে জুভেন্টাস এগিয়ে যাওয়ার ৪ মিনিট পর গোল করেন রোনালদো। বাঁ প্রান্ত থেকে মারিও মানজুকিচের পাস পেয়ে যান রোনালদো। বাঁ পায়ের চকিত শটে ডান প্রান্তের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠান জুভেন্টাসের এ তারকা। গোলের পর উদ্যাপন সেরেছেন নিজের চিরাচরিত ঢঙেই। তবে রোনালদোর হাসিমুখই বলে দিচ্ছিল, মানসিক চাপ কাটানোর প্রশান্তি কেমন হতে পারে। লাল কার্ডের জন্য নিষেধাজ্ঞা পাওয়ায় চ্যাম্পিয়নস লিগে জুভেন্টাসের আগের ম্যাচটা তিনি খেলতে পারেননি। এর মধ্যে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় লড়াইটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল রোনালদোর একার। গোল করে সেই একার লড়াইয়ে কিছুটা হলেও মানসিক শক্তি পেলেন রোনালদো।
জুভেন্টাসে শুরুর দিকে গোল না পেলেও রোনালদো যে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছেন, তা পরিষ্কার। দলটির হয়ে ৮ ম্যাচে এ নিয়ে ৪ গোল করলেন রোনালদো। সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও ৪ গোল। প্রতি ৮৫ মিনিট অন্তর জুভেন্টাসের গোলের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভূমিকা রেখেছেন রোনালদো। ৩৩ বছর বয়সী তারকার জন্য জুভেন্টাসের এর চেয়ে ভালো শুরু আর কী হতে পারে! জুভেন্টাসও এবার দুর্দান্ত শুরু করেছে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১০ ম্যাচ জিতল তুরিনের ‘ওল্ড লেডি’রা। মৌসুমের শুরুতে আর কখনোই ভালো শুরুর মুখে দেখেনি জুভেন্টাস।
ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যম খুব স্বাভাবিকভাবেই রোনালদোকে খুঁজেছে। কিন্তু রোনালদো কথা বলেননি। তাঁর হয়ে জুভেন্টাস কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি বলেন, ‘মাঠের বাইরের রোনালদোর মনের অবস্থা আমি বলতে পারব না। কারণ, আমি তাঁর সঙ্গে থাকি না।’ যদিও শিষ্যের খেলার প্রশংসাই করেছেন অ্যালেগ্রি, ‘রোনালদো ভালো খেলেছে। সে একা একা প্রস্তুতি সেরেছে এবং আজ রাতে দুর্দান্ত একটি গোলও করেছে।’
গোল, শুধু গোলই পারে মাঠের বাইরের বিতর্ক থেকে রোনালদোকে ভুলিয়ে রাখতে।