>
- ইউনিলিভারের পৃষ্ঠপোষকতায় ২৫ মার্চ দেশব্যাপী শুরু হয়েছিল স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট
- টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছিল ২৭২টি স্কুল
- আজ অনুষ্ঠিত হয় টুর্নামেন্টের ফাইনাল
- ঢাকার শাহীন কলেজকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রাজশাহীর সোনাদিঘি উচ্চবিদ্যালয়
‘দেশে মানসম্পন্ন ফুটবলারের অভাব’, কথাটি শোনা যায় হরহামেশা। ভালো ফুটবলার নেই বলেই তো অন্ধকারের অতল গহ্বরে ডুবে আছে দেশের ফুটবল। কিন্তু কোথা থেকে আসবে ভালো ফুটবলার?
স্কুলের ক্লাসরুম থেকে ফুটবলে লাথি দিয়ে শুরু করে ভবিষ্যতে একজন ফুটবলার হয়ে উঠবে, সে পথটা তো অনেক দিন ধরেই ছিল বন্ধ। আর স্কুল পর্যায়ে ফুটবল ছড়িয়ে না দিতে পারলে খেলোয়াড় উঠে আসবে না, এটা সবারই জানা। অন্তত এই উপলব্ধি থেকে স্কুল ফুটবল চালু করার শুভ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য দেশের ফুটবলপ্রেমীদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ পেতেই পারে ক্লিয়ার মেন। ধন্যবাদ ক্লিয়ার মেন।
গত ২৭ মার্চ দেশের ২৭২টি স্কুল নিয়ে শুরু হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৭ স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট। সেখানে অংশগ্রহণ করেছিল তিন হাজারেরও বেশি ফুটবলার। সংখ্যাটা কিন্তু কম নয়। প্রতি হাজার থেকে যদি ভবিষ্যৎ জাতীয় দলের জন্য একজন ফুটবলারও পাওয়া যায়, তাহলে এক টুর্নামেন্ট থেকে তিনজনকে তো পাচ্ছেই বাংলাদেশ! ভবিষ্যতের কথা তোলাই থাক, আসা যাক নগদের অর্জনে। কয়েক মাস পর অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দল গঠনের জন্য এই টুর্নামেন্টটা যে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, তা ফুটবল ফেডারেশনের কোচরাও স্বীকার করে নিয়েছেন অনায়াসে। এখন দীর্ঘমেয়াদি ক্যাম্প করিয়ে বাকি কাজটা করে নিতে হবে শুধু ফেডারেশনকে।
বড় পরিসরে যেকোনো স্কুল টুর্নামেন্ট শুধু খেলার মাঠেই প্রভাব ফেলে না। মাঠের বাইরের পরিবেশটাও করে তোলে চমৎকার। বিএএফ শাহীন স্কুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে রাজশাহীর যে সোনাদিঘি উচ্চবিদ্যালয়টি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, সে দলের অধিকাংশ ফুটবলারই কাজ করে থাকে খেত-খামারে। স্কুল বন্ধ থাকলে বা স্কুল কামাই দিয়ে মাঝে মাঝেই তারা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নাম লেখাত ধান মাড়াইয়ের কাজে। এই কাজের ফাঁকেই চলত পড়াশোনা ও ফুটবল। অন্তত এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তারা এখন স্বপ্ন দেখতে পারছে, ‘আমিও তো হতে পারি বড় ফুটবলার।’
ক্লিয়ার মেন শুধু টুর্নামেন্টই আয়োজন করেনি। তারা দেখিয়ে দিয়েছে ফেডারেশনকে ভুলে যাওয়া পথও। তাই ক্লিয়ার মেনের মতো বাফুফেও মাঠে নামিয়ে দিয়েছে আরও একটি স্কুল টুর্নামেন্ট। যদিও সেটা একেবারেই ছোট পরিসরে। তাতে কী, স্কুল ফুটবল ছাড়া যে উপায় নেই, তা তো বুঝেছেন ফুটবল-কর্তারা।
ফুটবলে উন্নতি করতে বয়সভিত্তিক ফুটবলের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের ফুটবলে সাম্প্রতিক সময়ে যত সুখবর, মেয়েদের ফুটবল থেকে। এর কারণ কী? বুঝতে রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না। নিয়মিত মাঠে বয়সভিত্তিক ফুটবল। তাদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি স্বপ্ন দেখা।
এই কিশোরেরা যেন হারিয়ে না যায়, এর জন্য পরের ধাপটা তৈরি করা দরকার। দ্রুত। স্কুল ফুটবলের পর সেটা হতে পারে কলেজ পর্যায়ের এমন দেশভিত্তিক আয়োজন। অন্তত সেখান থেকে কিছু ফুটবলারকে যেন টেনে নিতে পারে ক্লাবগুলো।
সামনে অব্যাহত থাকুক এমন আয়োজন। আর ইউনিলিভারের মতো বড় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসুক।