>ভুটানে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ মেয়েদের সাফে গতকাল নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত গোল করেছেন কৃষ্ণা রানী সরকার।
গোলরক্ষক রূপনা চাকমার পা থেকে ‘হাই ভলি’তে উড়ে আসা বলটা সিরাত জাহান স্বপ্নাকেও (নম্বর নাইন) খুঁজে নিতে পারত। কিন্তু সেখানে উপস্থিত কৃষ্ণা রানী সরকার। হাওয়ায় ভেসে আসা বলটা নিজেদের অ্যাটাকিং থার্ডের অনেক পেছনে পড়ল। নেপাল ডিফেন্ডারদের পেছন থেকে বের হয়ে গতিতে পেছনে ফেলে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়ে বক্সে ঢুকে ভলিতে জালে। গোলরক্ষক থেকে কৃষ্ণা—গোলের আগ পর্যন্ত মাত্র দুই টাচ, দুর্দান্ত গোলটি করেই মাটিতে শুয়ে পড়লেন কৃষ্ণা। আহ, কত দিন পর কৃষ্ণার পায়ে গোল।
নামটা চেনা চেনা লাগছে তাই না? ২০১৬ সালে বাংলাদেশ চিনেছিল তাঁকে। হাসিমুখে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ তছনছ করতে জুড়ি ছিল না তাঁর। নেতৃত্বগুণও ছিল চমৎকার। ফলে ২০১৬ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাইপর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এশিয়ার সেরা আটে নাম লিখিয়েছিল বাংলাদেশ। বাছাইপর্বে ৮ গোল করে হয়েছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। দেশজুড়ে কৃষ্ণা ও কৃষ্ণার বাংলাদেশ দল নিয়ে উঠেছিল রব। কিন্তু এরপর থেকেই কিছুটা আড়ালে চলে যান টাঙ্গাইলের মেয়ে।
অবশ্য দুই দফা আলোচনায় এসেছিলেন। বাছাইপর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্তপর্বে নাম লিখিয়েছিলেন কৃষ্ণারা। গত বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়ান সেরা আটের লড়াইয়ে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছিলেন কৃষ্ণা। পরেরবার আলোচনায় এসেছেন তামিলনাড়ুর ক্লাব সিথু এফসির হয়ে ভারতের উইমেন্স লিগে খেলার সুযোগ পাওয়ায়। যদিও ভারতীয় ক্লাবটির হয়ে তাঁর তেমন মাঠে নামার সুযোগ হয়নি। তাই অনেকেই হয়তো এই গোলমেশিনের কথা ভুলেই গিয়েছিলেন।
এ ছাড়া কৃষ্ণার পায়ে মরিচা ধরেছে—এ রবও উঠেছিল কিছুদিন আগে। ইতিমধ্যে দলটির নেতৃত্ব হারিয়েছেন। অনূর্ধ্ব-১৬ দলে তাঁর ডেপুটি থাকা মৌসুমীর হাতে এখন অনূর্ধ্ব-১৮ দলের অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড। গতকাল অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফুটবলে নেপালের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ের ম্যাচে দুর্দান্ত গোল করে আবারও আলোচনায় ফিরে এসেছেন কৃষ্ণা। গোলটাতে ছিল মুনশিয়ানার ছাপ। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭-০ গোলের জয়ের ম্যাচেও করেছিলেন এক গোল।
আগামী শুক্রবার ভুটানের বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ। কৃষ্ণা যে ফুরিয়ে যাননি, বাংলাদেশকে ফাইনালে তুলে প্রমাণ করার এই তো বড় সুযোগ।
কৃষ্ণার গোল