ক্লপকে থামাতে পারবেন সুলশার?
ক্লপকে থামাতে পারবেন সুলশার?

লিভারপুল বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

দুপাশের লড়াই নির্ধারণ করে দেবে ম্যাচের ফল?

ইংলিশ ফুটবলের সবচেয়ে বড় ম্যাচ আজ। ঐতিহ্যগত দিক দিয়ে তো বটেই, সাম্প্রতিক অবস্থার কথা বিবেচনা করলেও। শেষ কবে লিগ টেবিলের শীর্ষস্থানে ওঠার জন্য এভাবে লড়াই করেছিল এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী? গবেষণার বিষয় তো বটেই। স্মৃতির পাতা হাতড়ালে ভেসে ওঠে ২০০৮-০৯ মৌসুমের কথা, যখন গোটা মৌসুমে ভালো খেলেও শেষমেশ রায়ান গিগস-ওয়েইন রুনিদের ইউনাইটেডকে ধরতে পারেনি স্টিভেন জেরার্ড-ফার্নান্দো তোরেসের লিভারপুল। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাফল্যের নদীতে যখন ভরা জোয়ার, লিভারপুলের পারফরম্যান্সে তখন ভাটার টান। এখন ইয়ুর্গেন ক্লপের অধীনে যেখানে লিভারপুল সাফল্যের নতুন নতুন সোপানে উঠছে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সেখানে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া তেমন কিছুই করার নেই।

নিজেদের পক্ষে পাশার দান আরেকবার বদলানোর পথে আজ বড় এক পদক্ষেপ ফেলতে পারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, যদি লিভারপুলের দুর্গ জয় করে আসতে পারে আজ। যে কাজটাকে সাম্প্রতিককালে ফুটবলের সবচেয়ে বড় দুরূহ কাজ বললেও ভুল বলা হবে না। প্রায় চার বছর হয়ে গেছে, নিজেদের মাঠে লিগ ম্যাচ হারে না লিভারপুল। সেই ২০১৭ সালের এপ্রিলে যে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে হেরে বসেছিল লিভারপুল, এরপর নিজেদের মাঠে লিগ ম্যাচে আর হারের মুখ দেখেনি ক্লপের বাহিনী। ওদিকে এই মৌসুমে প্রতিপক্ষের মাঠে নিজেদের দুর্দান্ত রেকর্ড আশা জাগাচ্ছে ইউনাইটেডকে। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত এক ম্যাচের পসরা সাজিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষা করছে প্রিমিয়ার লিগ।

আর এই লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে ‘দুই পাশ’। কী, ধন্দে পড়ে গেলেন তো? হ্যাঁ, দুই পাশই। ফুটবলের কেতাবি ভাষায় উইং-ও বলা যায়। কিন্তু কীভাবে এই উইংয়ের লড়াই গড়ে দিতে পারে ম্যাচের গতিপথ, দেখে নেওয়া যাক।

মানে-রবার্টসনের বাঁ দিক লিভারপুলের মূল শক্তি।

উইং বলতে শুধু আক্রমণভাগই নয়, বরং যেসব খেলোয়াড় দুই দলের হয়ে দুই পাশের জায়গাগুলোতে খেলবেন, রক্ষণভাগ থেকে শুরু করে আক্রমণ পর্যন্ত—তাঁরাই হয়তো গড়ে দেবেন ম্যাচের ভবিষ্যৎ। এখন দেখে নেওয়া যাক, কে কে খেলতে পারেন এই সব জায়গাগুলোতে। সে জন্য প্রথমে দেখে নিতে হবে দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ।

লিভারপুলের সম্ভাব্য একাদশ (৪-৩-৩): আলিসন বেকার; ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ড, জোয়েল মাতিপ, ফাবিনিও, অ্যান্ডি রবার্টসন; জর্ডান হেন্ডারসন, জর্জিনিও ভাইনালডম, থিয়াগো আলকানতারা; মোহাম্মদ সালাহ, রবার্তো ফিরমিনো, সাদিও মানে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সম্ভাব্য একাদশ (৪-২-৩-১): দাভিদ দে হেয়া; অ্যারন ওয়ান-বিসাকা, এরিক বাইয়ি, হ্যারি ম্যাগুয়ার, লুক শ; স্কট ম্যাকটমিনে, ফ্রেদ; ব্রুনো ফার্নান্দেস, পল পগবা, মার্কাস রাশফোর্ড; এডিনসন কাভানি।

লিভারপুলের সম্ভাব্য একাদশ।

প্রথমে স্বাগতিক লিভারপুলের ব্যাপারে আসা যাক। যথারীতি গোলবারের নিচে থাকবেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক আলিসন বেকার। দুপাশে ফুলব্যাক হিসেবে যথারীতি ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ড (ডান) ও অ্যান্ডি রবার্টসন (বাঁ)। তবে রক্ষণভাগে ব্রাজিলিয়ান ফাবিনিওর সঙ্গে কে জুটি বাঁধবেন, এখনো নিশ্চিত নয়। নিয়মিত সেন্টারব্যাক জোয়েল মাতিপ মাত্র চোট থেকে ফিরেছেন। সতীর্থদের সঙ্গে হালকা অনুশীলন করলেও ইউনাইটেডের সঙ্গে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলার জন্য ফিট হতে পারবেন কি না, সেটা শেষমুহূর্ত ছাড়া জানার উপায় নেই। মাতিপ যদি না খেলেন, সে ক্ষেত্রে লিভারপুলের বিকল্প তিনজন। হয় দুই আনকোরা সেন্টারব্যাক রিস উইলিয়ামস কিংবা নাথানিয়েল ফিলিপসের মধ্যে একজন খেলবেন কিংবা অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনকে মিডফিল্ড থেকে নেমে এসে ফাবিনিওর সঙ্গী হতে হবে। ফাবিনিওর সঙ্গী যে-ই হন না কেন, তাঁকে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ডের পাশে খেলতে হবে, অর্থাৎ ডান দিকে। আরনল্ড কখন উঠবেন, কখন নামবেন—এ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে তাঁকে। যে কাজটা বাঁ দিকে রবার্টসনের সঙ্গে করবেন ফাবিনিও।

এখন সেন্টারব্যাক হিসেবে ফাবিনিওর সঙ্গে কে খেলছেন, সেটার ওপর লিভারপুলের কৌশলের অনেক কিছু নির্ভর করছে। ফাবিনিওর সঙ্গে ‘রাইট সেন্টারব্যাক’ হিসেবে উইলিয়ামস বা ফিলিপসকে খেলালে অধিনায়ক হেন্ডারসন তাঁর স্বাভাবিক পজিশন অর্থাৎ মিডফিল্ডে খেলতে পারবেন। কিন্তু সেটা যদি না হয়, যদি সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ম্যাচের মতো হেন্ডারসনকে সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলানো হয়, সে ক্ষেত্রে মিডফিল্ডে থিয়াগো আলকানতারা ও জর্জিনিও ভাইনালডমের সঙ্গে দেখা যেতে পারে তরুণ ইংলিশ মিডফিল্ডার কার্টিস জোন্সকে। টোটকাটা তেমন সুবিধাজনক নয়, সেটা সাউদাম্পটন ম্যাচেই বোঝা গেছে। ইংলিশ স্ট্রাইকার ড্যানি ইংসের গোলে লিভারপুলকে সে ম্যাচে ১-০ গোলে হারিয়েছিল সাউদাম্পটন।

কেন সুবিধাজনক নয়? এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। লিভারপুলের মাঝমাঠে যে তিনজনই খেলুক না কেন, তিনজনের মধ্যে ‘প্লে-মেকিং’ অর্থাৎ আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের নিখুঁত পাস দিয়ে সালাহ-মানে-ফিরমিনোদের গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার কাজটা স্প্যানিশ মিডফিল্ডার থিয়াগো আলকানতারাকেই করতে হবে। তাই আলকানতারা তিন মিডফিল্ডারের মধ্যে যে জায়গাতেই থাকুন না কেন, লিভারপুলকে নিশ্চিত করতে হবে, সে কাজটা যেন থিয়াগো নিশ্চিন্তভাবে করতে পারেন, মাঝমাঠে রক্ষণ করার চিন্তাটা যেন তাঁকে অত বেশি না করতে হয়। পাশে জর্ডান হেন্ডারসনের মতো একজন সতর্ক আর সাবধানী মিডফিল্ডার থাকাটা যে কারণে থিয়াগোর জন্য সুবিধাজনক, যেহেতু এমনিতেই লিভারপুলের রক্ষণভাগের চোট সমস্যার কারণে রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার ফাবিনিওকে সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলানো হচ্ছে। থিয়াগো একা হয়ে গেলে রক্ষণকাজের চিন্তায় হয়তো নিজেকে সেভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন না, যে সমস্যাটা বোঝা গেছে সাউদাম্পটনের বিপক্ষে। প্রথমেই একটা হলুদ কার্ড দেখে ফেলেছিলেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।

রাশফোর্ডের মুভমেন্ট যন্ত্রণা দিতে পারে লিভারপুলকে।

দ্বিতীয় কারণ, স্বভাবজাত মিডফিল্ডার হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই হেন্ডারসন মাঝমাঠে খেললে লিভারপুল যে সুবিধাটা পাবে, ডিফেন্ডার হিসেবে খেললে সেটা পাবে না। সাউদাম্পটনের বিপক্ষে হেন্ডারসন প্রায় সময় ওপরে উঠে যাচ্ছিলেন, পেছনে ফেলে আসা জায়গায় সাউদাম্পটন ম্যাচের শুরুতে দ্রুতগতির প্রতি-আক্রমণ করতে পেরেছে বেশ। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী দলের বিপক্ষে প্রায় সময়ই প্রতি আক্রমণনির্ভর কৌশলের আশ্রয় নেয়। ইউনাইটেডের হয়ে ওদিকটায় বিশেষ করে খেলবেন মার্কাস রাশফোর্ড, নিজের গতি ব্যবহার করে প্রতি–আক্রমণ করাতে যাঁর দক্ষতা অসাধারণ।

তৃতীয় কারণ, ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ডের ফর্ম। লেখার শুরুতেই বলা হয়েছে, ম্যাচের ফল বের করে দিতে পারে দুই পাশের লড়াই। লিভারপুলের রক্ষণভাগের ডান পাশটা আগলে রাখেন আলেক্সান্ডার-আরনল্ড, যার ফর্ম সাম্প্রতিককালে তেমন সুবিধার নয়। আক্রমণ করতে গিয়ে প্রায়ই পা থেকে বল হারাচ্ছেন, চাপের মুখে ভেঙে পড়ছেন, রক্ষণকাজে মন দিতে পারছেন না। ওদিকে যেহেতু রাশফোর্ড খেলবেন, ইউনাইটেডের লক্ষ্য থাকবে আলেক্সান্ডার-আরনল্ড এবং তাঁর দিকে থাকা সেন্টারব্যাককে লক্ষ্য করে রাশফোর্ড-কাভানি কিংবা রাশফোর্ড-মার্সিয়ালের গতির সাহায্য নিয়ে হুট করে লিভারপুলের ডি-বক্সে ঢুকে যাওয়া। হেন্ডারসন মিডফিল্ডে খেললে সাধারণত আলেক্সান্ডার-আরনল্ডের পাশেই খেলেন, ফলে ওই জায়গাটা বাড়তি নিরাপত্তা পায়।

সব মিলিয়ে হেন্ডারসন মাঝমাঠে খেলার সুবিধা তিনটি। এক—আলেক্সান্ডার-আরনল্ড পেছনে বাড়তি নিরাপত্তা পাচ্ছেন ইউনাইটেডের লেফট উইঙ্গার রাশফোর্ড ও বাঁ দিকে চলে আসা যেকোনো খেলোয়াড়ের বিপক্ষে। দুই—থিয়াগো আলকানতারা মাঝমাঠে সাহায্য পাচ্ছেন, যা তাঁকে আক্রমণে মনোযোগ দিতে সাহায্য করছে। তিন—ইউনাইটেডের ক্ষুরধার প্রতি আক্রমণ রোখার জন্য লিভারপুল বাড়তি একজন সেন্টারব্যাক (মাতিপ, উইলিয়ামস কিংবা ফিলিপস) নামাতে পারছে মিডফিল্ডার কার্টিস জোন্সের জায়গায়, যিনি কিনা রক্ষণে হেন্ডারসনের মতো অতটা দক্ষ নন স্বাভাবিকভাবেই।

ইউনাইটেডের দুই উইংয়ের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বাঁ দিকটা, যেখানে রাশফোর্ড খেলে থাকেন। সঙ্গে পল পগবাও মাঝে মাঝে বাঁ দিকে চলে আসেন আক্রমণ গড়ে দেওয়ার জন্য। এই ম্যাচে ইউনাইটেড চাইবে লিভারপুলের দুর্বল ডান দিকের ওপর নিজেদের শক্তিশালী বাঁ দিকটা চড়াও করতে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সম্ভাব্য একাদশ

এবার আসা যাক ইউনাইটেডের প্রসঙ্গে। একটু আগেই বলা হয়েছে, দুপাশের মধ্যে ইউনাইটেডের অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী দিক হলো বাঁ দিকটা। একই রকমভাবে, আক্রমণ ও রক্ষণ মিলিয়ে লিভারপুলের তুলনামূলক শক্তিশালী দিক হলো বাঁ দিকটা। যেখানে একই সঙ্গে খেলে থাকেন রবার্টসন (লেফটব্যাক), ভাইনালডম কিংবা থিয়াগোর মধ্যে যেকোনো একজন মিডফিল্ডার ও লেফট উইঙ্গার সাদিও মানে। ওদিকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডান দিকের দুর্বলতা নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। বিশেষ করে আক্রমণভাগে। রাইট উইঙ্গার হিসেবে কয়েক বছর ধরে যাঁরাই খেলেছেন, কেউই ভালো খেলা দেখিয়ে কোচের মন জয় করতে পারেননি। অ্যান্থনি মার্সিয়াল, মার্কাস রাশফোর্ড, পল পগবা, মেসন গ্রিনউড—ম্যাচের বিভিন্ন সময়ে ইউনাইটেডের আক্রমণভাগে যাঁরা উঠে আসেন, তাঁদের প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে ডান উইং ফাঁকা করে বাঁ দিক থেকে খেলতে চান। ফলে রাইটব্যাক অ্যারন ওয়ান-বিসাকার ওপর বাড়তি চাপ পড়ে যায়। আক্রমণ ও রক্ষণ, বলতে গেলে একাই সামলান তিনি কখনো কখনো, রাইট উইঙ্গারের কাছ থেকে তেমন সাহায্য পান না।

লিভারপুলের লক্ষ্য থাকবে ওই দিকটা লক্ষ্য করে আক্রমণ গড়ে তোলা। এমনিতেই লিভারপুলের দুই তারকা ফুলব্যাকের মধ্যে এই মৌসুমে তুলনামূলকভাবে ভালো খেলছেন লেফটব্যাক রবার্টসন, তাঁর সঙ্গে লেফট উইঙ্গার সাদিও মানের রসায়নটাও জমে উঠেছে বেশ। এরপর থিয়াগোও যদি মাঝমাঠের হাফ স্পেসগুলোয় (আক্রমণাত্মক মিডফিল্ড ও উইংয়ের মাঝের জায়গাগুলো) চলে আসেন খেলা গড়ে দেওয়ার জন্য, ওয়ান-বিসাকার জন্য একটু সমস্যাই হয়ে যাবে। যে কাজে সাহায্য করার জন্য কোনো রাইট উইঙ্গার নয়, বরং দলের মিডফিল্ডার স্কট ম্যাকটমিনেকে এগিয়ে আসতে হবে।

মাঠে হেন্ডারসনের অবস্থানের ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু।

৪-২-৩-১ ছকে রক্ষণের সামনে দুই মিডফিল্ডার হিসেবে এই ম্যাকটমিনে আর ব্রাজিলের ফ্রেদের ওপরেই আস্থা রাখবেন হয়তো কোচ ওলে গুনার সুলশার। এই দুই তারকা বল পায়ে যে খুব দক্ষ, তা বলা যাবে না। কিন্তু নিজেদের শক্তির সবটুকু নিংড়ে দিয়ে খেলেন দেখে লিভারপুলের আক্রমণ রচনায় বাধা দেওয়ার জন্য তাঁদের হয়তো মাঠে নামাবেন সুলশার। বর্ষীয়ান নেমানিয়া মাতিচকে নয়। দুই সেন্টারব্যাককে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এই দুই মিডফিল্ডার কাজ করে থাকেন অনেক সময়। থিয়াগোর সঙ্গে এই জমাট জায়গাটায় চিড় ধরানোর চেষ্টা করবেন স্ট্রাইকার রবার্তো ফিরমিনো। স্ট্রাইকার হলেও ম্যাচের অধিকাংশ সময় ফলস নাইন হিসেবে নিচে নেমে বসে থাকেন এই ব্রাজিল তারকা, তাঁর মুভমেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে সালাহ ও মানের জন্য।

কম্বিনেশন ঠিক রাখার জন্য সুলশার ফর্মে থাকা পগবাকে খেলানোর সাহস করবেন কি না, সেটার ওপরও নির্ভর করবে ম্যাচের ফলাফল। পগবা না খেললে মাঝমাঠ থেকে সৃষ্টিশীলতা পাওয়ার জন্য ব্রুনো ফার্নান্দেসকে নেমে যেতে হতে পারে, সে ক্ষেত্রে আবার ইউনাইটেডের ডান দিকটা ফাঁকা হয়ে যাবে। আর ডান দিক ফাঁকা হয়ে যাওয়া মানেই লিভারপুলের বাঁ দিকের দুই সৈনিক রবার্টসন আর মানে চাইবেন ইউনাইটেডকে ওদিক থেকে ঘায়েল করতে।

ব্রুনো ফার্নান্দেসের ওপর থাকবে বিশেষ মনোযোগ সবার।

ওদিকে লিভারপুলের ভঙ্গুর রক্ষণে বাড়তি চাপ প্রয়োগ করার জন্য ফর্মহীন মার্সিয়ালের জায়গায় হয়তো অভিজ্ঞ উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানির ওপর আস্থা রাখতে পারেন সুলশার। বয়স হলেও বক্সের মধ্যে কাভানির মুভমেন্ট এখনো মার্সিয়ালের চেয়ে অনেক ভালো। লিভারপুলের ভঙ্গুর রক্ষণ কাভানিকে কীভাবে আটকায়, সেটাও দেখার বিষয়।

মোটামুটি এসব ছোটখাটো জিনিসগুলোই গড়ে দেবে ম্যাচের ভাগ্য, আর ফুটবলপ্রেমীদের উপহার দেবে জিবে পানি এনে দেওয়ার মতো এক মহারণ!