সময় বড় নিষ্ঠুর। এক মাস আগেও ইন্টার মিলানের অধিনায়কের আর্মব্যান্ডটা ছিল মাউরো ইকার্দির হাতে। একের পর এক ম্যাচ দলকে টেনে গেছেন একাই। সেই ইকার্দিই এখন ইন্টারে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন। আজ কালিয়েরির বিপক্ষেও জায়গা হয়নি ইকার্দির। এ নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে ইকার্দিকে স্কোয়াডে রাখেনি তাঁর ক্লাব।
চুক্তি নবায়নে বোঝাপড়া হচ্ছিল না ইকার্দি ও তাঁর ক্লাবের মাঝে। এরই চূড়ান্ত পর্যায়ে ইকার্দির কাছ থেকে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেয় ক্লাব। পরদিন ইউরোপার ম্যাচে দলের সঙ্গে যাননি আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। ফলে ব্যাপারটা আরও গোলমেলে হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই শুরু হয় ইকার্দির বাদ পড়া। গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকেই ফুটবল মাঠে নামা হচ্ছে না ইকার্দির। এ নিয়ে এর আগে তাঁর এজেন্ট ও স্ত্রী ওয়ান্ডা নারা বেশ আবেগী কথাবার্তা বলেছেন। এবার ইকার্দি নিজেই এগিয়ে এলেন। দুঃখের কথা জানাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামকেই বেছে নিয়েছেন ইকার্দি।
গতকাল ইন্টার কোচ লুসিয়ানো স্প্যালেত্তি ইকার্দির ব্যাপারে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাঁর সাফ কথা ‘ইন্টারের ভাগ্য নিয়ে যাদের চিন্তা আছে শুধু তাদের নিয়েই তাঁর যত আগ্রহ’। সোজা ভাষায় ইন্টারকে নিয়ে ইকার্দির কোনো মায়া নেই! এমন অবস্থায় ইকার্দি আর চুপ করে থাকতে পারলেন না। বিশাল এক পোস্টে নিজের দুঃখের কথা জানিয়েছেন। ক্লাবের বিপদের সময়ে যে এক ইকার্দিই তাদের পাশে ছিল এটা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘সবচেয়ে কঠিন সময়েই ভালোবাসা বোঝা যায়। অমন সময়েই আমি ইন্টারে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইন্টারেই ছিলাম। যখন আমার মনে হয়েছিল আমার গোল দিয়ে ইন্টারকে সাহায্য করতে পারব। এটা ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লের চেয়ে শক্তিশালী, আমার ঝামেলাগুলোর চেয়েও শক্তিশালী ছিল। যখন সবাই আমাদের দলকে পাত্তা দিত না।’
ইন্টারের জন্য আর কী কী করেছেন সেটার বর্ণনা দিয়েছেন ইকার্দি, ‘ম্যাচের পর কান্না করেছি এমন সব ব্যথা নিয়ে খেলেছি, পরদিনও মাঠে নেমেছি। তবু সব সময় মাঠে থাকার ব্যাপারে জোর করেছি। চিকিৎসকদের বাধার মুখেও খেলেছি। কারণ মাঠেই আমি আমার সব দুঃখ ভুলতে পারতাম। এ জার্সিতে গোল করেই যে আমি সাহায্য করতে পারতাম। নেরাজ্জুরি রঙের জন্য যে ভালোবাসা, ইন্টারের জন্য যে ভালোবাসা সেটা অনন্য।’
এরপরই ইকার্দি দাবি করেছেন চুক্তি নিয়ে যা হচ্ছে তাতে তাঁকে অসম্মান করা হচ্ছে। সে সঙ্গে ক্লাবকেও অপমান করা হচ্ছে। আর এর দায় ক্লাবের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের। তবে এখনো ইন্টারের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখেন ইকার্দি। কারণ ইন্টার তাঁর কাছে পরিবারের মতো, ‘আমি জানি না যারা সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন তারা আমাকে এবং ক্লাবকে ভালোবাসা ও সম্মান দেখাতে পারছে কি না। আমি জানি না এমন কেউ আছে কি না যারা সমস্যার সমাধান করতে চেষ্টা করছে। পরিবারে অনেক কিছুই হতে পারে, সুন্দর কিংবা বিশ্রী। আর শুধু ভালোবাসার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করা যায়। কিন্তু কখনো অসম্মান করা ঠিক না।’