>মস্কোয় আজ তিউনিসিয়াকে ৫-২ গোলে হারিয়েছে বেলজিয়াম। জোড়া গোল করেছেন রোমেলু লুকাকু ও এডেন হ্যাজার্ড। বেলজিয়ামের হয়ে আরেকটি গোল করেছেন মিচি বাতশুয়াই। তিউনিসিয়ার হয়ে গোল করেছেন ডিলান ব্রন ও ওয়াহবি খাজরি।
মিচি বাতশুয়াইয়ের নাম আরেকটু হলে ‘মিস বাতশুয়াই’ হয়ে যাচ্ছিল! ৬৯ মিনিটে এডেন হ্যাজার্ডের বদলি নামা চেলসির (ধারে ডর্টমুন্ডে খেলেন) এই স্ট্রাইকার গোলের সুযোগ পেলেন অন্তত চারটি। গোল দিতে পারলেন মাত্র একটি। বাতশুয়াই একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করলেও রোমেলু লুকাকু ও এডেন হ্যাজার্ডের জোড়া গোলে তিউনিসিয়াকে গোলের বন্যায় ভাসিয়েছে বেলজিয়াম। শুধু বেলজিয়াম বললে অবশ্য ভুল হয়। ৫-২ স্কোরলাইন বলছে, মস্কোর স্পার্তাকে আজ গোলেরই বন্যা হয়েছে!
মিচি প্রথম সুবর্ণ সুযোগটা পেলেন ৭৬ মিনিটে। ফাঁকা গোলপোস্ট পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি। শেষ ১১ মিনিটে পেলেন আরও তিনটি সুযোগ। দুটি অবশ্য দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছেন তিউনিসিয়ার গোলরক্ষক ফারুক বিন মুস্তাফা। বেলজিয়াম পোস্টে শট নিয়েছে মোট আটটি। এর মধ্যে চারটিই মিচির। এই চারটি থেকে তিনি গোল করতে পেরেছেন একটি। বাকি চারটির প্রতিটিতেই গোল করেছে বেলজিয়াম। দুটি করে গোল এসেছে হ্যাজার্ড ও লুকাকুর কাছ থেকে।
পরিসংখ্যান দিয়ে অবশ্য বোঝানো কঠিন, বেলজিয়াম কী দাপটের সঙ্গে খেলেছে। ৫ মিনিটেই বড় ভুল করে বসলেন তিউনিসিয়ার ডিফেন্ডার সিয়াম বেন ইউসেফ। বক্সে হ্যাজার্ডকে ফাউল করায় বেলজিয়াম পেয়ে গেল পেনাল্টি। পেনাল্টি থেকে গোল করেই ৬ মিনিটে বেলজিয়ামকে এগিয়ে নিলেন হ্যাজার্ড। বেলজিয়ামের ‘গোল মেশিন’ হিসেবে আবির্ভূত লুকাকুর জাদু দেখা গেল খানিক পরেই। ১৬ মিনিটে ইউসুফের দুই পায়ের মাঝ দিয়ে যে গোলটা করলেন—চোখে লেগে থাকার মতো।
দুই মিনিট (১০৯ সেকেন্ড) পরেই একটা গোল শোধ করে দেয় তিউনিসিয়া। ওয়াহবি খাজরির ক্রসে ডিলান ব্রনের দারুণ এক হেড। এতে যেন বেলজিয়ামের গোলক্ষুধা বাড়ে আরও। বিশেষ করে লুকাকুর। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে টমাস মনিয়ের বাড়িয়ে দেওয়া বল বিদ্যুৎ গতিতে ছুটে গিয়ে দুর্দান্ত ফিনিশিং লুকাকুর। মনিয়ে এভাবে ‘মুখে তুলে খাইয়ে দিলেন’, উদ্যাপনের সময় বেলজিয়াম ফরোয়ার্ড হাত মিলিয়ে বিশেষ ধন্যবাদ দিলেন সতীর্থকে। ২ ম্যাচে ৪ গোল করে লুকাকু এবার ছুঁয়ে ফেললেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। দুজনই দৌড়াচ্ছেন সোনার বুট হাতে তোলার লক্ষ্যে। বেলজিয়ামের হয়ে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডও হয়ে গেল লুকাকুর। ৩-১ স্কোরলাইন নিয়ে শেষ হলো প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তিউনিসিয়া দু-একটি সুযোগ তৈরি করলেও হ্যাজার্ড বোঝালেন, শুধু সুযোগ তৈরি করা নয়, সেটা কাজেও লাগাতে হয়। ৫১ মিনিটে টবি অলডারভেইরেল্ডের বাড়িয়ে দেওয়া বলটা নিয়ে ঢুকে পড়লেন বক্সে। তিউনিসিয়ার গোলরক্ষককে শারীরিক ভারসাম্যে যেভাবে হার মানিয়ে বলটা জালে জড়ালেন, এককথায় দুর্দান্ত! প্রায় ৪০ মিনিট বাকি থাকতেই যে ম্যাচের স্কোরলাইন ৪-১ হয়ে যায়, ম্যাচের ভবিষ্যৎ কী—নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না। তিউনিসিয়া গোল শোধ করবে কী, বেলজিয়ামের আক্রমণ ঠেকিয়েই ক্লান্ত! শেষ দিকে মিচি এত সুযোগ হাতছাড়া না করলে তিউনিসিয়াকে আরও কটা যে গোল খেতে হতো কে জানে! ৯০ মিনিটের যোগ করা সময়ে খাজরির গোলটা যা একটু সান্ত্বনা তিউনিসিয়ার।
বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো ম্যাচে ৫ গোল করেছে বেলজিয়াম। এবার বিশ্বকাপে টানা ২৭ ম্যাচেই গোল হলো। এখন পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র দেখা যায়নি একটি ম্যাচেও। এটা কি তবে গোলের বিশ্বকাপ?