>২১ জুন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ড্রয়ের হতাশা ভুলে জয়ের রাস্তা চেনার জন্য নতুন দুটি ফরমেশনে খেলার ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টিনা কোচ হোর্হে সাম্পাওলি।
আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ধারে-ভারে সব জায়গাতেই এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু সেই ম্যাচ দিয়েই বিশ্বকাপে অভিষিক্ত হওয়া দেশটির বিপক্ষে দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা জিততে পারেনি। ১-১ গোলের ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। মেসিদের জন্য এই ড্র মূলত হারের স্বাদ। এমন অবস্থায় আর্জেন্টিনা দলে পরিবর্তন অনুমিতই ছিল এবং সেই ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।
মেসি, ডি মারিয়া ও হাভিয়ের মাচেরানো ছাড়া আর্জেন্টিনা দলে বড় কোনো নাম হয়তো নেই। কিন্তু যাঁরা আছেন তাঁরা পরীক্ষিত সৈনিকই। তবু স্পার্তাক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টাইন সুর–তাল কিছুই মেলেনি। দলটাকে কোচ হোর্হে সাম্পাওলি এক সুতোয় বাঁধতে পারেননি বলে ইতিমধ্যে অভিযোগ উঠেছে। স্বয়ং ডিয়েগো ম্যারাডোনাই আছেন অভিযোগকারীদের তালিকায়। চিলিকে কোপা আমেরিকা জেতানো এই কোচকে তাই এবার ফুটবল-মস্তিষ্কটা একটু অন্যভাবে খাটাতে হবে।
আইসল্যান্ডের বিপক্ষে দলকে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলিয়েছিলেন সাম্পাওলি। ‘ডাবল পিভট’—দুই হোল্ডিং মিডফিল্ডার হাভিয়ের মাচেরানো ও লুকাস বিলিয়ার সামনে ছিলেন দলের প্রাণভোমরা মেসি। সেদিন একটি গোলের জন্য হাপিত্যেশ করতে দেখা গেছে খুদে জাদুকরকে। স্নায়ুর চাপে তো মিস করেছেন পেনাল্টিও। ক্রোয়াটদের বিপক্ষে মেসিকে সামনে রেখেই নতুন দুটি কৌশল ফাঁদতে যাচ্ছেন সাম্পাওলি। যা ফাঁস হয়ে গেছে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যমে।
৩-৩-৩-১ (প্ল্যান ‘এ’)
সম্ভাব্য একাদশ: উইলি কাবায়েরো (গোলরক্ষক); নিকোলাস তাগলিয়াফিকো, নিকোলাস ওটামেন্দি, গ্যাব্রিয়েল মারকাদো (রক্ষণভাগ) ; মার্কোস আকুনা, হাভিয়ের মাচেরানো, এদুয়ার্দো সালভিও (মাঝমাঠ) ; ক্রিস্টিয়ান পাভোন, লিওনেল মেসি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো মেজা ও সার্জিও আগুয়েরো (ফরোয়ার্ড)।
গোলরক্ষকের দায়িত্বে থাকছেন যথারীতি কাবায়েরো। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে চার ডিফেন্ডার নিয়ে দল সাজিয়েছিলেন সাম্পাওলি। দুই সেন্টারব্যাকের একজন রোহো ছিলেন একেবারেই সাদামাটা। তাই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই ডিফেন্ডারকে ছাড়াই তিন সেন্টারব্যাক নিয়ে পরের ম্যাচে সম্ভাব্য একাদশ সাজাতে যাচ্ছেন সাম্পাওলি। এখানে নতুন মুখ সেভিয়ার ডিফেন্ডার মারকাদো। তিন রক্ষণভাগের সামনে মাঝমাঠে মাচেরানোর সঙ্গে থাকবেন সালভিও ও আকুনা। তাঁদের মধ্যে বেনফিকার উইঙ্গার সালভিও শেষ ম্যাচে খেলেছিলেন রাইটব্যাক হিসেবে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে তাঁকে এবার মাঝমাঠে নিয়ে আসছেন সাম্পাওলি। আর বিলিয়াকে বসিয়ে মাঠে নামাবেন স্পোর্টিং লিসবনের আকুনাকে।
স্বাভাবিকভাবে প্রতিপক্ষ রক্ষণভাগ খোলার চাবি থাকবে মেসির হাতেই। রাইট উইঙ্গার হিসেবে আগের ম্যাচে খেলা মেজা থাকছেন। আর বাঁ প্রান্তে ডি মারিয়ার জায়গায় খেলবেন বোকা জুনিয়র্সের নিয়মিত মুখ পাভোন। শেষ ম্যাচে মারিয়ার বদলি হিসেবেই মাঠে নেমেছিলেন তিনি। আর ‘নম্বর নাইন’ হিসেবে সার্জিও আগুয়েরো তো আছেনই।
৩-৪-৩ (প্ল্যান ‘বি’)
সম্ভাব্য একাদশ: উইলি কাবায়েরো (গোলরক্ষক) ; নিকোলাস তাগলিয়াফিকো, নিকোলাস ওটামেন্দি, গ্যাব্রিয়েল মারকাদো (রক্ষণভাগ) ; মার্কোস আকুনা, হাভিয়ের মাচেরানো, এনজো পেরেজ, এদুয়ার্দো সালভিও (মাঝমাঠ) ; ক্রিস্টিয়ান পাভোন, লিওনেল মেসি ও সার্জিও আগুয়েরো (ফরোয়ার্ড)।
সাম্পাওলির প্ল্যান ‘এ’-এর সঙ্গে প্ল্যান ‘বি’-র স্পষ্ট পার্থক্য মাঝমাঠে তিন খেলোয়াড়ের জায়গায় চারজন। আর এই সম্ভাব্য একাদশে পরিবর্তন আছে মাত্র একটি। মাঝমাঠে আর্জেন্টাইন ক্লাব ইন্দিপেন্দিয়েন্তে খেলা উইঙ্গার মেজার স্থলে রিভারপ্লেটের পেরেজ। প্ল্যান ‘বি’-তে মেসিকে দেখা যেতে পারে বার্সেলোনার পরিচিত ট্যাকটিসে ডান প্রান্তে। বার্সার মেসিকে মস্কোতে পেতে চাইলে আর্জেন্টাইন কোচের এখন নতুন এই ফরমেশনে যাওয়া কেবলই সময়ের ব্যাপার। তবে এই সম্ভাব্য একাদশেও সুযোগ নেই উইঙ্গার ডি মারিয়া ও ডিফেন্ডার রোহোর।