বার্সেলোনা হারল টানা দুই ম্যাচে
বার্সেলোনা হারল টানা দুই ম্যাচে

জাভির রেকর্ড কোমানের চেয়েও খারাপ

রিয়াল মাদ্রিদকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৪-০ গোলে হারানোর পর বার্সেলোনার সেন্টারব্যাক জেরার্দ পিকে টুইট করেছিলেন, ‘আমরা ফিরে এসেছি।’

এ ঘোষণার পরতে পরতে ঝরেছে আত্মবিশ্বাস, দলকে আবারও সর্বজয়ী করার প্রত্যয়। যে দল রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে গিয়ে এভাবে ছড়ি ঘোরাতে পারে, সে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের মুখ থেকে বের হওয়া হুংকার শুনে আর যা–ই হোক মনে অবিশ্বাস জাগেনি।

২০০৩ সালের পর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই প্রথম টানা দুই ম্যাচ হারল জাভির দল

দৃষ্টিনন্দন ফুটবলের পসরা সাজিয়ে জাভির বার্সেলোনাও পূর্বসূরি গার্দিওলার বার্সেলোনার পথ ধরবে, সেটাই প্রত্যাশা ছিল বার্সার সমর্থকদের। রোনাল্ড কোমানের হতাশায় মোড়ানো সময় পেছনে ফেলে ঘরের ছেলে জাভি আবারও বার্সেলোনাকে নিয়ে যাবেন ফুটবলের চূড়ায়, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে বার্সেলোনার ফল ওই ইঙ্গিতই দিচ্ছিল।

কিন্তু কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও সেই পুরোনো আখ্যান। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকা বার্সেলোনা হারল টানা দুই ম্যাচে। তা–ও আবার নিজেদের মাঠে! ২০০৩ সালের পর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই প্রথম টানা দুই ম্যাচ হারল জাভির দল। গত রাতে কাদিজের বিপক্ষে ১-০ গোলের হার জাভির অধীন বার্সেলোনার উন্নতিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে যেন। দিনশেষে ফুটবল খেলায় যে ফলটাই মুখ্য।

রোনাল্ড কোমান

জাভি যতই রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে নিজের দলকে সুন্দর ফুটবল খেলাচ্ছেন বলে দাবি করুন না কেন, কাগজ-কলমের হিসাব বা পয়েন্ট তালিকায় রিয়াল-বার্সার অবস্থান সেটার পক্ষে প্রমাণ দিচ্ছে না। গত রাতে কাদিজের বিপক্ষে হারের পর যেমন ক্ষুরধার ফুটবল পরিসংখ্যানবিদেরা বের করে ফেললেন, বার্সেলোনার কোচ হিসেবে জাভির জয়ের হার কোমানের চেয়েও কম।

অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্যি। কোমানের অধীন বার্সেলোনা জিতছিল না দেখে যে জাভিকে আনা হলো, সে জাভিই এখন পর্যন্ত কোমানের মতো বার্সেলোনাকে জেতাতে পারছেন না। জাভি আসার পর ৩০ ম্যাচ খেলেছে বার্সেলোনা, জিতেছে ১৬ ম্যাচে। জয়ের হার ৫৩.৩৩ শতাংশ। কোমানের জয়ের হার ওদিকে ৫৮.২১ শতাংশ, ৬৭ ম্যাচে ৩৯ জয়।

জাভি আসার পর ৩০ ম্যাচ খেলেছে বার্সেলোনা

জাভির অধীন বার্সেলোনার দৈন্য ফুটে উঠেছে আরেক তথ্যে। বার্সেলোনা যখন কোমানকে ছাঁটাই করে, লিগ টেবিলে বার্সেলোনা রিয়ালের চেয়ে ১০ পয়েন্টে পিছিয়ে ছিল (রিয়াল মাদ্রিদ ২৭, বার্সেলোনা ১৭)। গত বছরের নভেম্বরের ৮ তারিখে বার্সেলোনার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রায় পাঁচ মাস কেটে যাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, অবস্থার উন্নতি তো হয়নিই, বরং আরও অবনতি হয়েছে। পয়েন্ট টেবিলে ৩২ ম্যাচের পর এখন রিয়াল যথারীতি শীর্ষে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে। আর বার্সেলোনা? ৬০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। অর্থাৎ কোমানের শেষবেলায় ১০ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে রিয়ালের ব্যবধান এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫-তে। অবশ্য বার্সেলোনা এক ম্যাচ কম খেলেছে। সে এক ম্যাচেও যদি বার্সেলোনা জেতে, পয়েন্টের ব্যবধান হবে ১২, নিশ্চিতভাবে যা ১০-এর চেয়ে বেশি।

জাভি দায়িত্ব নেওয়ার পরও এমন তথ্য দেখতে হবে, নিশ্চয়ই চায়নি বার্সেলোনা।