বড় ক্লাবগুলো সব ফিফা ভাইরাস আতঙ্কে ভোগে। প্রীতি ম্যাচ হোক কিংবা বাছাইপর্বের ম্যাচ, দেশের হয়ে খেলতে সব খেলোয়াড়ই ছুটে যান। ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর অধিকাংশ খেলোয়াড়ই নিজ নিজ জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে ক্লাবগুলোর ভয়ও থাকে বেশি। যদি কেউ চোট পান! তবে এই প্রথম হয়তো রিয়াল মাদ্রিদ আন্তর্জাতিক বিরতিকে স্বাগত জানাচ্ছে। বিরতিতে যদি ক্লাবের খেলোয়াড়দের ফর্ম ফিরে!
সেপ্টেম্বরের শুরুতেই আন্তর্জাতিক ফুটবলের বিরতি মিলেছিল। ইউরোপ জুড়ে চলেছে উয়েফা নেশনস কাপ, অন্যান্য অঞ্চলে প্রীতি ম্যাচ। সে বিরতিটা বড় ক্ষতি করে গেছে রিয়ালের। বিরতির আগ পর্যন্ত মৌসুমটা ভালোই কাটছিল রিয়ালের। উয়েফা সুপার কাপের হারের দুঃখ লিগে প্রথম তিন ম্যাচে ভুলিয়ে দিয়েছিলেন খেলোয়াড়েরা। তিন ম্যাচে ১০ গোল করেছিল রিয়াল। দুর্দান্ত গতির ফুটবলের সঙ্গে পাসিং ফুটবলের মিশেলে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল তখন রিয়ালকে। সে ফর্ম টেনে জাতীয় দলের হয়েও দারুণ খেলেছেন লস ব্লাঙ্কোরা।
কিন্তু বিরতি থেকে ফেরার পরই ছন্দ হারিয়েছে রিয়াল। অ্যাথলেটিক বিলবাওর মাঠে ১-১ গোলে ড্র করার পর নিজেদের মাঠে এসপানিওলকে ন্যূনতম ব্যবধানে হারানো। এর ফাঁকেই চ্যাম্পিয়নস লিগে এএস রোমাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। ফলে এসপানিওলের ম্যাচের ১-০ ব্যবধান সমর্থকেরা মেনে নিয়েছিল সমর্থকেরা। কিন্তু এরপরই রিয়ালের দুর্বলতা বের হতে শুরু করেছে। ইসকো, মার্সেলো ও বেলের চোট পাওয়াতে স্কোয়াডের ঘাটতি টের পাওয়া যাচ্ছে। সেভিয়ার মাঠে প্রথমার্ধেই ৩ গোল খাওয়ার পর নিজেদের মাঠে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র। সিএসকেএ মস্কোর মাঠেও ১-০ গোলে হার। সে হারের বিস্ময় কাটানোর আগেই আলাভেসের মাঠে ৯৫তম মিনিটের গোলে আরেকবার কপাল পুড়েছে রিয়ালের।
আর এর মাঝেই প্রায় অবিশ্বাস্য এক ঘটনা ঘটেছে। মৌসুমের প্রথম ৪ ম্যাচে ১২ গোল করা রিয়াল সর্বশেষ ৪০৯ মিনিটে কোনো গোল করতে পারেনি! দল যে পথ হারিয়েছে সেটা বোঝাতে এ পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। এ অবস্থায় দুই সপ্তাহের বিরতি দুহাত বাড়িয়ে কাছে টেনে নেবেন হুলেন লোপেতেগি। নিজের ট্যাকটিকস নিয়ে ড্রয়িং বোর্ডে ফেরার সময় পাবেন। খেলার ধরন পাল্টানোর কথাও ভাবতে পারবেন। আর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গিয়ে খেলোয়াড়রা হারানো আত্মবিশ্বাস ও ছন্দ ফিরে পাবেন সে আশাও করবেন। কারণ, বিরতি থেকে ফেরার পর লেভান্তের ম্যাচ নিয়ে যদি দুশ্চিন্তা নাও করতে চান, পরের ম্যাচটা যে মহাগুরুত্বপূর্ণ তাঁর জন্য। ২৮ অক্টোবর এ মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো। মর্যাদার ম্যাচে হেরে গেলে চাকরিটা যে খোয়াবেন সেটা প্রায় নিশ্চিত। জিদানের পূর্বসূরি রাফা বেনিতেজের ভাগ্যও এমন এক ক্লাসিকোতে নির্ধারিত হয়েছিল।