এক বর্ণিল চরিত্র ছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
এক বর্ণিল চরিত্র ছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা।

ছবিতে ছবিতে ম্যারাডোনার গল্প

চলে গেলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তিনি ফুটবলের সর্বকালের সেরা কিনা, এ নিয়ে কারও কারও দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু তিনি যে ফুটবলের সবচেয়ে বর্ণময় চরিত্র—এ নিয়ে কারওরই দ্বিমত নেই। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন, পেশাদার ফুটবলে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অন্য উচ্চতায়। ছিলেন সর্বাধিক পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত খেলোয়াড়। মাঠের বাইরের নানা ঘটনাও তাঁর জীবনজুড়েই ছিল। মাদকসেবী হয়ে বিপথে গিয়েছেন বারবার। উদ্দাম জীবনে তাঁর সঙ্গী হয়েছে নানা বিতর্ক। ম্যারাডোনার জীবনের কিছু খণ্ডচিত্রেই প্রকাশ পায় কতটা বর্ণিল, কতটা ঘটনাবহুল ছিল তাঁর ৬০ বছরের জীবন...
১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েনস এইরেসে জন্ম ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ছোট থেকেই ফুটবল ছিল তাঁর ধ্যান–জ্ঞান।
মাঠ কাঁপানোর ইঙ্গিতটা কিশোর বয়সেই দিয়েছিলেন ম্যারাডোনা।
আর্জেন্টিনা জুনিয়র্সের হয়ে ১৯৭৩ সালে শুরু হয়েছিল পথচলা। এরপর তিনি নাম লেখার আর্জেন্টিনার শীর্ষ ক্লাব বোকা জুনিয়র্সে।
১৯৭৯ সালে আর্জেন্টিনা যুব দলকে বিশ্ব যুব কাপ জেতান ম্যারাডোনা।
রেকর্ড ট্রান্সফার ফি’তে বোকা জুনিয়র্স থেকে বার্সেলোনায় গিয়েছিলেন ম্যারাডোনা।
১৯৭৮ বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি বয়স কম বলে। ১৯৮২ বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলেন।
১৯৮২ বিশ্বকাপটা খুব ভালো কাটেনি ম্যারাডোনার। আর্জেন্টিনা বিদায় নিয়েছিল আগেভাগেই। ম্যারাডোনা বিশ্বকাপ শেষ করেছিলেন লাল কার্ড দেখে।
১৯৮৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে ইতালীয় ক্লাব নাপোলিতে যোগ দেন ম্যারাডোনা।
১৯৮৬ বিশ্বকাপ খেলতে যখন মেক্সিকো যান, তিনি তখন পরিপূর্ণ এক ফুটবলার। বিশ্ব কাঁপাতে পুরো প্রস্তুত।
নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে ’৮৬ বিশ্বকাপে সারা দুনিয়াকে মাতান ম্যারাডোনা।
আর্জেন্টিনাকে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ পেতে রাখেন সবচেয়ে বড় ভূমিকা।
’৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর দুর্দান্ত গোলটিকে বলা হয় ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’
’৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই তাঁর ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলটি হয়ে আছে চির বিতর্কের উৎস।
আর্জেন্টিনার অবিসংবাদিত সেরা তারকায় পরিণত হয়েছিলেন ম্যারাডোনা।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো দেশকে বিশ্বকাপ জেতানোর খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। ১৯৯০ ইতালি বিশ্বকাপেও দেশকে তুলেছিলেন ফাইনালে।
ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে কেঁদেছিলেন ম্যারাডোনা।
১৯৯১ সালে কোকেন গ্রহণের জন্য নিষিদ্ধ হন ম্যারাডোনা।
স্ত্রী ক্লদিয়ার সঙ্গে বিবাহিত জীবন সুখের হয়নি।
উদ্দাম জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন ম্যারাডোনা।
কিউবান নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সান্নিধ্য পেতে ছুটে যেতেন ম্যারাডোনা।
১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে শেষবারের মতো আর্জেন্টিনার হয়ে খেলেন ম্যারাডোনা।
১৯৯৪ বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ ওষুধ সেবন করে বহিষ্কৃত হন ম্যারাডোনা। সেবার মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।
সর্বকালের সেরা কে, এ নিয়ে পেলের সঙ্গে ঠান্ডা যুদ্ধ ছিল ম্যারাডোনার সব সময়ই।
পেলের সঙ্গে শতাব্দী–সেরার পুরস্কার ভাগাভাগি করে নিতেও আপত্তি ছিল তাঁর।
কত বিচিত্র চেহারাতেই না হাজির হয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা।
২০১০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার কোচ ছিলেন ম্যারাডোনা।
কোচ হিসেবে সফল হননি তিনি।
মানুষের হৃদয়জুড়েই ছিলেন ম্যারাডোনা।
ম্যারাডোনা থেকে যাবেন মানুষের মনে চিরদিনই।