২০১২ সালে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার ক্লাব বিশ্বকাপ খেলেছিল চেলসি। সেবার তারা ফাইনালে হেরে বসেছিল ব্রাজিলের এক ক্লাবের কাছে। করিন্থিয়ানসের কাছে ১-০ গোলে হারের পর আজ চেলসির সামনে ছিল ইতিহাস গড়ার সুযোগ। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে ব্রাজিলেরই আরেক ক্লাব পালমেইরাসকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতল চেলসি।
গত ২৯ মে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে গোল করে চেলসিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ এনে দিয়েছিলেন হাভার্টজ। আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ক্লাবের ইতিহাস রচনাতেও ভূমিকা রেখেছেন জার্মান। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে সমতার ম্যাচে ১১৭ মিনিটে জয় এনে দেওয়া গোল করেছেন হাভার্টজ।
৭৭ মিনিটে চেলসি সমর্থকেরা দুয়ো দিতে শুরু করলেন। রোমেলু লুকাকুকে মাঠ ছেড়ে উঠে যাচ্ছিলেন, তবে দুয়োটা কোচ টমাস টুখেলের উদ্দেশ্যে। ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে পালমেইরাসের বিপক্ষে ১-১ গোলে সমতা, এই অবস্থায় দলের মূল স্ট্রাইকার ও ম্যাচের গোল স্কোরারকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি সমর্থকদের। গোল প্রয়োজন এ অবস্থাতেও কোচের ৩-৫-২ ফরমেশন প্রীতি মানতে পারছিলেন না সমর্থকেরা।
রক্ষণ সামলে তারপর গোলের চিন্তা-এই চিন্তাতেই চেলসিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ এনে দিয়েছেন টুখেল। ক্লাবকে আরেকটা শিরোপা এনে দিতে নিজের পরীক্ষিত পথেই হেঁটেছেন। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় তাই মাত্র দুবার পোস্টে বল রাখতে পেরেছে চেলসি। এর একটি ৫৫ মিনিটে। হাডসন ওডোই বাঁ প্রান্ত থেকে ক্রস করেছিলেন। ডি-বক্সে লাফিয়ে উঠেছিলেন অনেকেই। কিন্তু লুকাকুর সঙ্গে পাত্তা পাননি কেউ। বেলজিয়ান স্ট্রাইকারের গোলে এগিয়ে যায় চেলসি।
যাদের সুবাদে গোল পেয়েছে চেলসি, ৭৭ মিনিটে সে দুজনকে তুলে নিয়েছেন টুখেল। পালমেইরাস অবশ্য সমতা ফিরিয়েছে ১৩ মিনিট আগেই। বক্সে বল উড়ে এসেছিল। সেটা হেড করে ফিরিয়েছিলেন চেলসির ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। পালমেইরাসের খেলোয়াড়েরা পেনাল্টির জোরালো আবেদন করলেও রেফারি তাতে সারা দেননি। কিন্তু ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) তাঁকে সিদ্ধান্ত বদলাতে বলেন। পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান রাফায়েল ভেইগা।
নির্ধারিত সময়ের বাকিটায় কৌশলের খেলা হয়েছে বেশি। পালমেইরাস শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সামনে রক্ষণ জমাট করে রেখেছে। ফলে চেলসির ইনসাইড ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক ও টিমো ভেরনাররা বক্সে ঢুকতে পারছিলেন না। আবার লুকাকু মাঠে না থাকায় ক্রস করেও গোল আদায় করা যাচ্ছিল না। বরং প্রতি আক্রমণ করে পালমেইরাসই সুযোগ সৃষ্টি করছিল। কিন্তু সময়মতো থ্রু বল দিতে না পারায় আক্রমণগুলো নষ্ট হচ্ছিল।
অতিরিক্ত সময়ে অবশ্য একদম খোলসে ঢুকে গেছে পালমেইরাস। চেলসিই একের পর এক আক্রমণ করে গেছে। ওদিকে ৬-৩-১ ফরমেশনে শুধু চেলসিকে ঠেকানোতেই মনোযোগ ছিল তাদের।
১১৩ মিনিটে আবার নাটক। আজপিলিকেতার শট পালমেইরাসের হাতে লেগেছিল। রেফারি এবারও পেনাল্টি দেননি। কিন্তু ভিএআর এবারও সিদ্ধান্ত বদলাতে বলেন। পেনাল্টি নেওয়ার দায়িত্ব পান কাই হাভার্টজ। গোলকিপারকে ভুল দিকে পাঠিয়ে গোল করেন জার্মান উইঙ্গার। ১১৭ মিনিটের এ গোল আর শোধ দেওয়া হয়নি পালমেইরাসের। বরং ১২৬ মিনিটে ভিএআরের সহযোগিতায় লাল কার্ড দেখানো হয় লুয়ানকে।