বিশ্চাবকাপ বাছা্ইপর্বের ম্যাচে টানা চার জয় ব্রাজিলের।
বিশ্চাবকাপ বাছা্ইপর্বের  ম্যাচে টানা চার জয় ব্রাজিলের।

চারে চার ব্রাজিলের

আরেকটি ম্যাচ। আরেকটি জয়। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ব্রাজিলের রথ ছুটছেই। আজ ভোরে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল। আর এই জয়ে নিশ্চিত হয়ে গেল, ২০২০ সালটা জয় দিয়েই শেষ হচ্ছে সেলেসাওদের, ব্রাজিলও থাকছে গ্রুপের শীর্ষে। উরুগুয়ের মন্তিভিদিওর সেন্তেনারিও স্টেডিয়ামে ব্রাজিলের হয়ে গোল দুটি করেছেন জুভেন্টাসের মিডফিল্ডার আর্থুর মেলো ও এভারটনের উইঙ্গার রিচার্লিসন।

উরুগুয়ের মাঠে ব্রাজিল বরাবরই অসাধারণ খেলে। ২০০১ সালের পর থেকে এই মাঠে ব্রাজিলকে হারাতে পারেনি দুবারের বিশ্বজয়ীরা। ১১ ম্যাচ খেলে ছয়বার হেরেছে, ড্র করেছে পাঁচবার। এর আগে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচগুলোতেও জিতেছে দাপট দেখিয়ে (২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৪-০ গোলের জয়, ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৪-১ গোলের জয়)। ফলে এ ম্যাচেও যে ব্রাজিল জিতবে, সেটা এক রকম প্রত্যাশিতই ছিল। তবে করোনাভাইরাসের আক্রমণ ও চোট সমস্যা কিছুটা চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল ব্রাজিল সমর্থকদের।

গোলের পর আর্থুরের উল্লাস।

প্রথম থেকেই বেশ আক্রমণাত্মক খেলেছে দুই দল। লুইস সুয়ারেজ করোনায় আক্রান্ত, ফলে তাঁর জায়গায় এদিনসন কাভানির সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন বেনফিকার তরুণ স্ট্রাইকার দারউইন নিউনেজ। তাঁর পেছনে বার্সেলোনার মতো ক্লাবগুলো কেন ছুটছে, সেটার প্রমাণ দিয়েছেন ক্ষণে ক্ষণে। ভাগ্য খারাপ উরুগুয়ের, পাঁচ মিনিটে তাঁর বাঁ প্রান্ত থেকে কাট ইন করে মারা এক শট পোস্টে লাগে। অবশ্য তাঁর আগে গ্যাব্রিয়েল জেসুস ব্রাজিলকে এগিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। ডান প্রান্ত থেকে বিপজ্জনকভাবে ডি-বক্সে ঢুকে ডান পায়ের এক শট নিয়েছিলেন। সেটা আটকে দেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক মার্টিন কাম্পানিয়া। ১২ মিনিটে মিডফিল্ডার নাহিতান নান্দেজের ক্রসে মাথা ঠেকিয়ে গোল করতে পারেননি কাভানি।

আক্রমণ-প্রতিআক্রমণের প্রথম ফসল ব্রাজিলই ঘরে তোলে। ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে জেসুসের কাছ থেকে বল নিয়ে ডান পায়ের দুর্দান্ত প্লেসমেন্টে দলকে এগিয়ে দেন জুভেন্টাসের মিডফিল্ডার আর্থুর মেলো। অথচ এভারটনের মিডফিল্ডার আলান ফিট থাকলে তাঁর খেলারই কথা ছিল না! গোল করে ব্রাজিল কোচ তিতের কাছে মূল একাদশে নিজের দাবিটাও জানিয়ে রেখেছেন এই মিডফিল্ডার। ৩৬ মিনিটে আরেকটা দুর্দান্ত প্রতি আক্রমণের ফসল একটুর জন্য পায়নি ব্রাজিল। ফিরমিনোর বাঁ পায়ের শট আটকে দেন কাম্পানিয়া। ৪৫ মিনিটে ব্রাজিলের ব্যবধান দ্বিগুণ করে দেন রিচার্লিসন। সেটপিস থেকে আতলেতিকো মাদ্রিদের লেফটব্যাক রেনান লোদির সহায়তায় হেড করে গোল করেন এভারটনের এই উইঙ্গার। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল উরুগুয়ে। কিন্তু আবারও বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলপোস্ট। ডিফেন্ডার দিয়েগো গদিনের হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসে।

লাল কার্ড দেখে কাভানি দলের বিপদই বাড়িয়েছেন।

পরে দুই দলই বেশ কয়েকটা আক্রমণ করলেও গোল পায়নি কেউই। শেষ দিকে রিচার্লিসনকে ট্যাকল করতে গিয়ে উলটো লাল কার্ড দেখে কাভানি উরুগুয়ের যন্ত্রণাই বাড়িয়েছেন। বাছাইপর্বের চার ম্যাচে চার জয় পাওয়া ব্রাজিলের রক্ষণভাগের পারফরম্যান্সও নজর কাড়ছে বেশ। চার ম্যাচের মধ্যে তিনটাতেই কোনো গোল খাননি এদেরসন, থিয়াগো সিলভা, মার্কিনিওস, রেনান লোদি ও দানিলোর রক্ষণভাগ। ১২ গোল করার পাশাপাশি খেয়েছে মাত্র দুই গোল।