৬ জানুয়ারি ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জেতে আবাহনী লিমিটেড। কিন্তু চরম নাটকীয়তায় ভরা ওই ম্যাচে সাইফের দুটি পেনাল্টি বাতিল করে দেন রেফারি সায়মন হাসান। ওই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। রেফারির দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের কর্মকর্তারা।
তাঁদের দাবি, রেফারি নিয়ম ভেঙে আবাহনীকে দিয়েছেন বিশেষ সুবিধা। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছে রেফারির ওই দিনের দেওয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যাও চেয়েছে ক্লাবটি; পাশাপাশি বিদেশি রেফারি দিয়ে ঘরোয়া ফুটবলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো পরিচালনার দাবি জানিয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।
ম্যাচের ৮০ মিনিটে পেনাল্টি পায় সাইফ স্পোর্টিং। কিন্তু এমেরি বাইসেঙ্গে দুবার বল জালে জড়ালেও নিয়ম ভঙ্গ করায় সেটি বাতিল করেন রেফারি; যদিও প্রথম শট নেওয়ার আগে সাইফের খেলোয়াড়েরা বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েন। দ্বিতীয় শট নেওয়ার আগমুহূর্তে গোলকিপারকে ধোঁকা দেওয়া হয়; যদিও সাইফের দাবি, দ্বিতীয় শটটি সঠিক ছিল। কিন্তু ওই শট বাতিল করে হলুদ কার্ড দেখানো হয় বাইসেঙ্গেকে। আর ইনডাইরেক্ট ফ্রি কিক দেওয়া হয় আবাহনীকে।
পুরো ঘটনায় সাইফের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে বলে দাবি করে আজ দুপুরে মহাখালীতে সাইফ স্পোর্টিংয়ের করপোরেট কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ক্লাব কর্মকর্তারা। সেখানে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরে ক্লাবটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা রেফারির তরফ থেকে দৃষ্টিকটু ও ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্তের স্বীকার হয়েছি। সাইফ একটা পেশাদার ক্লাব, যারা সব সময় পরিচ্ছন্ন ফুটবল খেলে। এমন ক্লাবের সঙ্গে এই আচরণ করা উচিত হয়নি। বাফুফের কাছে আমরা জানতে চেয়েছি, কেন আমাদের বিপক্ষের এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হলো।’
বিদেশি রেফারি দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন নাসির উদ্দিন চৌধুরী, ‘আমাদের দুটি দাবি। শুধু আমাদের পক্ষ থেকে নয়, দেশের ৩০টি ক্লাবের দাবি। আমরা চাই নিরপেক্ষ রেফারি দিয়ে ম্যাচ পরিচালনা করা হোক। সে ক্ষেত্রে বেশি দামি রেফারি নয়, সাফ অঞ্চল থেকে বাফুফে রেফারি আনতে পারে। আমরা চাই টুর্নামেন্টের বা লিগের গুরুত্বপূর্ণ খেলাগুলো যেন বিদেশি রেফারি দিয়ে চালানো হয়।’
বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে প্রায় বেশির ভাগ ক্লাব কর্মকর্তা আছেন বাফুফের নির্বাহী কমিটিতে। ডাগআউটে নির্বাহী কমিটির সদস্যদের বসা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি, ‘বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য ডাগআউটে থাকলে রেফারির প্রতি একটা মানসিক চাপ থাকবেই। ফুটবলের ভালোর জন্যই ডাগআউটে যেন নির্বাহী কমিটির সদস্যরা কেউ না বসেন।’
সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে দেখানো হয় রবার্ট লেভানডফস্কি, লিওনেল মেসি, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, সার্জিও রামোসদের নেওয়া বিভিন্ন ম্যাচের পেনাল্টি শট। সাইফের দাবি, বাইসেঙ্গের নেওয়া পেনাল্টি শটও এদের সঙ্গে মিলে যায়। ওই প্রসঙ্গে নাসির উদ্দিনের ব্যাখ্যা, ‘আমরা ভিডিওতে যে উদাহরণগুলো দিয়েছি, সেগুলো সাম্প্রতিক সময়ের খেলার অংশ। ওই সব দেশের রেফারিরা অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে যথেষ্ট সজাগ। তাই এই রেফারি যেটা করেছে, সেটা খুবই অবাক করার মতো ঘটনা।’