সতীর্থদের সঙ্গে আলভারো মোরাতা
সতীর্থদের সঙ্গে আলভারো মোরাতা

ইউরো ২০২০

গোল নেই, তাই মৃত্যুর হুমকি পাচ্ছেন তিনি

তিন ম্যাচে এক গোল। একজন স্ট্রাইকারের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানটা খুব বেশি আশা জাগায় না। আর সে স্ট্রাইকার যদি হন ইউরোর শিরোপাপ্রত্যাশী কোনো দলের, তাহলে তো আরও বেশি হতাশার।

স্ট্রাইকারের নাম আলভারো মোরাতা। পারফর্ম যেমনই করুন না কেন, গত ১০ বছরে মোরাতার মতো নিয়মিত একের পর এক শীর্ষ লিগের বড় ক্লাবে খেলে গেছেন, এমন স্ট্রাইকার পাওয়া যাবে খুব কম। রিয়াল মাদ্রিদ, আতলেতিকো মাদ্রিদ, চেলসি, জুভেন্টাস—বিভিন্ন সময়ে মোরাতার ওপর আগ্রহী অনেকেই। কিন্তু স্প্যানিশ স্ট্রাইকার কি তাঁর ওপর এই প্রত্যাশার চাপ ঠিকঠাক মেটাতে পেরেছেন?

ফর্ম মোটেও ভালো যাচ্ছে না মোরাতার

প্রশ্নটা যাঁকেই জিজ্ঞেস করা হোক না কেন, উত্তরটা নেতিবাচক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আর যাঁকে জিজ্ঞেস করা হবে তিনি যদি স্পেনের ভক্ত হন, তাহলে রক্ষে নেই! যে দলে কয়েক বছর আগেও দাভিদ ভিয়া, ফার্নান্দো তোরেসের মতো স্ট্রাইকাররা খেলতেন, সে দলে আলভারো মোরাতার মতো একজন স্ট্রাইকারের খেলা অনেকেই মেনে নিতে পারেন না। যেখানে গোল করার জন্য ভিয়া বা তোরেসের ছোট্ট একটা সুযোগ পেলেই হতো, সেখানে মোরাতা একের পর এক সহজ সুযোগ নষ্ট করে চলেছেন।

এবারের ইউরোতে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে গোলের খাতা খুললেও, তিন ম্যাচজুড়ে যেসব মিস করেছেন, তাতে তাঁর মতো একজন স্ট্রাইকারের নিয়মিত শিরোপাপ্রত্যাশী দলে খেলা কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

সহজ সুযোগ নষ্ট করছেন, পেনাল্টি মিস করছেন, পেনাল্টি আটকে গেলে ফিরতি বলকেও কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পাঠাতে পারছেন না—ফলে অধৈর্য হয়ে পড়েছেন স্পেনভক্তরা। অধৈর্যের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে মোরাতাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন অনেকেই। খেলার সময়েও স্পেনের ভক্তরা মোরাতার পায়ে বল গেলেই দুয়ো দিচ্ছেন।

সন্তানদের সঙ্গে মোরাতা

মোরাতা নিজেই নিশ্চিত করেছেন বিষয়টি। এল পার্তিদাজো দে কোপ অনুষ্ঠানে এই ২৮ বছর বয়সী স্ট্রাইকার জানিয়েছেন, পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর একের পর এক হত্যার হুমকি পাচ্ছেন তিনি, ‘ম্যাচের পর আমি নয় ঘণ্টা ধরে ঘুমাতে পারিনি। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে, আমার পরিবারকে নিয়ে বাজে কথা বলা হচ্ছে, অভিশাপ দেওয়া হচ্ছে আমার সন্তান যেন মারা যায়।’

পোল্যান্ডের বিপক্ষে একটি গোল করেছিলেন মোরাতা। কিন্তু জেরার্দ মোরেনো যখন একবার পেনাল্টি মিস করেন, ফিরতি বলে গোল করতে পারেননি। ভক্তদের ক্ষোভটা সেখানেই।

তবে এসব কিছু পাত্তা দিতে রাজি নন এই স্ট্রাইকার। বয়স হয়েছে, এখন আর আগের মতো মানুষজনের কথায় অত পাত্তা দেন না, ‘ব্যাপার না। আমি ঠিক আছি। হয়তো আরও কয়েক বছর আগে হলে কথাগুলো গায়ে লাগত। কষ্ট হতো। কিন্তু এখন আমি সবকিছু থেকে দূরে থাকতে শিখে গেছি।’

মোরাতা এখন বোঝেন, গোল না পেলে ভক্তরা অধৈর্য হবেনই। তবে তাই বলে এভাবে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া মোটেও সমর্থন করেন না তিনি, ‘হয়তো আমার যেমন খেলার কথা আমি সেভাবে খেলছি না। আমি বুঝি আমি যখন গোল করতে পারি না, তখন মানুষ আমার সমালোচনা করে। তবে মানুষ যদি একদিন আমার ভূমিকায় আসত, তাহলে হয়তো বুঝত আমার অবস্থাটা।’