>এই মৌসুমে প্রথমবারের মতো মাঠে নেমেছিলেন নেইমার, গতকাল। বার্সেলোনায় প্রত্যাশিত দলবদল হয়নি, তাই ভগ্ন মনোরথে পিএসজিতেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে। পিএসজির ক্ষিপ্ত দর্শকরাও ছেড়ে কথা কননি। নিজেদের সেরা তারকাটাকে দুয়ো দিয়েছে পুরোটা ম্যাচে। নেইমার সব শুনেছেন চুপচাপ। আর ম্যাচের একদম শেষ দিকে জবাব দিয়েছেন সেসব ‘লাঞ্ছনা’র। তবে মুখে নয়, পায়ে। দুর্দান্ত এক গোল করে পিএসজিকে জিতিয়ে তবেই নিজেদের সমর্থকদের চুপ করেছেন এই ব্রাজিল তারকা।
১২৬ দিন পর গতকাল পিএসজির হয়ে মাঠে নেমেছিলেন নেইমার। এই ১২৬ দিনে হয়ে গিয়েছে অনেক কিছু। বার্সেলোনায় যাওয়ার জন্য নিজের পক্ষে যা যা করা সম্ভব, নেইমার সব করেছেন। তাতে পিএসজির অসম্মান হোক বা না হোক, নেইমার পরোয়া করেননি। এত কিছু করার পরও বার্সায় যাওয়া হয়নি ব্রাজিল তারকার। নেইমারই যেখানে পিএসজিকে নিয়ে পরোয়া করেননি, পিএসজির সমর্থকেরাই বা কেন নেইমারকে নিয়ে পরোয়া করবে? সেটাই দেখা গেছে কাল। প্রাণভরে নেইমারকে দুয়ো দিয়েছেন পিএসজির সমর্থকেরা। আর নেইমার? সেসব দুয়োর ‘জবাব’ দিয়েছেন ম্যাচের শেষে, দুর্দান্ত এক গোল করে পিএসজিকে জিতিয়ে!
ম্যাচের তখন ৯৩ মিনিট। এই মৌসুমেই বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে পিএসজিতে আসা ফরাসি ডিফেন্ডার আবদু দিয়ালো বাম প্রান্ত থেকে একটা মাপা ক্রস ডি-বক্সে পাঠালেন। সেখানে পাকা শিকারির মতো অপেক্ষা করছিলেন নেইমার। মুহূর্তের মধ্যে দুয়ো দিতে থাকা পিএসজির দর্শকেরা দেখলেন ম্যাজিক। আধা সেকেন্ডের ব্যবধানে নিজের শরীরটা চূড়ান্ত দক্ষতায় উল্টো করে বাতাসে ভাসিয়ে দিলেন নেইমার। বাইসাইকেল কিক! আর তাতেই লেখা হয়ে গেল ম্যাচের ভবিতব্য। স্ট্রাসবুর্গকে একদম শেষ মিনিটের গোলে হারাল পিএসজি।
অথচ গোটা ম্যাচ এই নেইমারকেই কী দুয়োটাই না দিলেন পিএসজির সমর্থকেরা! প্রকাশের অযোগ্য ভাষায় গালাগালি লিখে এনেছিলেন ব্যানারে করে। ম্যাচে যখনই নেইমারের পায়ে বল যাচ্ছিল, দর্শকেরা দুয়ো দিয়েছেন, চিৎকার করে গালি দিয়েছেন। নেইমারও মেনে নিয়েছেন নতমুখে। তা ছাড়া তাঁর আর কী-ই বা করার ছিল! দলবদলের গোটা সময়ে তাঁকে নিয়ে যা হয়েছে, নেইমার হয়তো প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন, ভেবেই রেখেছিলেন এমন কিছু একটা হবে!
ম্যাচের শেষে নেইমারের কণ্ঠে সেটাই শোনা গেল, ‘আমার মন অনেক খারাপ। আমি বুঝে গিয়েছি, এখন থেকে প্রতিটি ম্যাচ আমাকে অ্যাওয়ে ম্যাচ (প্রতিপক্ষের মাঠে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সমর্থনহীন অবস্থায়) ভেবেই খেলতে হবে!'