‘লেবু পেলে সেটা দিয়ে লেমোনেড বানিয়ে খাও’—বেশ পুরোনো প্রবাদ। জীবনে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে সেখান থেকেই সম্ভাব্য সেরা ফল বের করে আনার অনুপ্রেরণা নেওয়ার এ বাক্য কাজে লাগালেন রোনালদিনহো। জাল পাসপোর্ট নিয়ে প্যারাগুয়েতে ঢোকায় জেলে যেতে হয়েছে এই শতাব্দীর অন্যতম সেরা ফুটবলারকে। জেলে গিয়েই অংশ নিয়েছেন ফুটসালে। আর ফাইনালে দলকে জিতিয়ে পেয়েছেন আকর্ষণীয় পুরস্কার।
একটি দাতব্য সংস্থার আহ্বানে প্যারাগুয়ে গিয়ে মহাবিপদে পড়েছেন রোনালদিনহো। খেলোয়াড়ের দাবি, তাঁর হাতে থাকা জাল কাগজপত্র আমন্ত্রণ জানানো প্রতিষ্ঠানই সরবরাহ করেছে। এ নিয়ে তাঁর আইনজীবী ও প্যারাগুয়ের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির মধ্যে চলছে আইনি লড়াই। আর এ সময়টায় রোনালদিনহো ও তাঁর ভাই রবার্তোর ঠিকানা হয়েছে জেলে। আরগু প্যাসিওন এস্পেসিয়ালিজাদা নামের এই কারাগারে একটু বিশেষ পদমর্যাদার কয়েদিদের স্থান হয়। রোনালদিনহোকে কারাগারের যে সেলে রাখা হয়েছে, সেখানে সাবেক ২৫ পুলিশ অফিসার আছেন। আছেন চারজন রাজনীতিবিদও। তাঁদের মধ্যে প্যারাগুয়ের আইনসভার নিম্নকক্ষের সাবেক প্রেসিডেন্টও আছেন!
এত রথী–মহারথীর ভিড়েও রোনালদিনহো আলাদা হয়ে আছেন। এই কারাগারে প্রতি ছয় মাস পরপর একটি ফুটসাল প্রতিযোগিতা হয়। কাকতালই হবে, ফুটসাল টুর্নামেন্টের সময় ঘনিয়ে এসেছিল, এমন সময়ই রোনালদিনহোকে পেয়ে গেল তারা। বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারকে পেতে নিজেদের মধ্যে মারামারিও করেছেন কয়েদিরা। পরে সিদ্ধান্ত হয়, যে দলেই খেলুন না কেন, রোনালদিনহো কোনো গোল করতে পারবেন না। শুধু গোল বানিয়ে দিতে পারবেন।
টুর্নামেন্ট গড়াতেই ওসব নিয়মের কথা আর মাথায় থাকেনি কারও। এক পুলিশের কাছ থেকে ধার করা জুতায় খেলতে নেমেও ফুটবলজাদুতে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে। গতকাল পাঁচজনের দলের এই টুর্নামেন্ট জিতেছে রোনালদিনহোর দল। প্রতিপক্ষকে ফাইনালে ১১-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা। এর মাঝে রোনালদিনহোর গোল ৫টি। বাকি ছয়টি গোলই তাঁর বানিয়ে দেওয়া।
এই যে টুর্নামেন্ট জিতেছেন, তার পুরস্কারও সঙ্গে সঙ্গে মিলেছে। রোনালদিনহো ও তাঁর দলকে পুরস্কার হিসেবে একটি ট্রফির সঙ্গে ১৬ কেজি ওজনের একটি শূকরের বারবিকিউ দেওয়া হয়েছে।