করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে ভারত। এ পরিস্থিতিতে সেখানে চিকিৎসা করাতে গিয়ে মহা ঝক্কিতে পড়ে গিয়েছিলেন! বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজের মুশকিল আসান হয়ে এসেছিলেন ভারত জাতীয় দলের ডিফেন্ডার প্রীতম কোটাল। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নাবিবকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন তিনি। অনুশীলন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় মোহনবাগানের ডিফেন্ডার প্রীতমকে। তাই বাংলাদেশি বন্ধুর দেখাশোনার বড় অংশটা করেছেন মূলত তাঁর স্ত্রী সোনেলিয়া। আজ সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে দেশে প্রবেশ করেছেন নাবিব। কিন্তু ভারতীয় দিদির মায়ামমতায় ডুবে রয়েছেন এখনো।
নাবিবের ডান পায়ের হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ওষুধপত্রসহ কত আনুষঙ্গিক বিষয় চূড়ান্ত করেই না দেশে ফিরতে হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দুই দেশের চলাচল নিষেধাজ্ঞা। স্বাভাবিকভাবে অস্ত্রোপচার করানো পা নিয়ে নড়ার জো নেই নাবিবের। তাতে সমস্যা নেই, তাঁর ‘দিদি’ সোনেলিয়া তো ছিলেন। আজ সকালে হোটেল ছাড়া থেকে শুরু করে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত পশ্চিম বাংলার পেট্রাপোল স্থলবন্দরে নাবিবের সঙ্গে ছিলেন সোনেলিয়া। বিপদের সময়ে এই কয়েক দিনে সোনেলিয়ার ভালোবাসায় মুগ্ধ নাবিব।
তাঁর এই ঋণ শোধ করার মতো নয় বলে মনে করেন নাবিব, ‘নিজের বোনের মতো উপকার করেছেন সোনেলিয়া। গেল কয়েকটি দিন আমার খুব যত্ন নিয়েছেন। আজ সকাল হোটেলে থেকে আমাকে বের করে এনেছেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলেন আমার সঙ্গেই। বিশেষ ব্যবস্থায় দেশে ফেরার জন্য অনেক কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হয়েছে। দৌড়াদৌড়ি করে সব করেছেন উনিই। আমি তাঁর ঋণ শোধ করতে পারব না।’
সরকার গতকাল ভারতের সঙ্গে স্থলপথেও চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিলে নাবিবের দেশে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আবাহনী অবশ্য বিশেষ ব্যবস্থায় তাঁকে আজ দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করে। মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়নি তাঁকে। আজই ভারত থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় আরও কিছু বাংলাদেশির সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন তিনি। কথায় আছে বিপদের বন্ধুই আসল বন্ধু।
তাই এমন মানুষের কাছে থেকে বিদায় বেলায় আবেগ ধরে রাখতে পারেননি নাবিব, ‘আমি সারা জীবন তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। তাঁর কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গিয়েছে। মনে হলো উনিও কাঁদছেন।’ দেশে ফিরে এলেও এখনই ঢাকায় এসে ক্লাবে ওঠা হচ্ছে না নাবিবের। বেনাপোলের একটি হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে তাঁকে।