ওয়েম্বলি বড় টুর্নামেন্টে সব সময়ই ইংল্যান্ডের জন্য পয়া ভেন্যু। বড় কোনো প্রতিযোগিতার মূলপর্বে এখানে কখনো হারেনি ইংল্যান্ড। আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ইউরো ২০২০-এর গ্রুপপর্বের ম্যাচটি খেলতে নামার আগে বড় টুর্নামেন্টে ১১ ম্যাচ খেলে ৮টিতেই জিতেছে দলটি, ড্র করেছে বাকি ৩টি। এই তিন ড্র ম্যাচের মধ্যে একটি ১৯৯৬ সালের ইউরোর সেমিফাইনাল। যে ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করার পর টাইব্রেকারে হারতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে।
বড় টুর্নামেন্টের মূলপর্বে ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডের অপরাজিত থাকার এই রেকর্ডটি আজও অক্ষত থাকল। তবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে পারেননি কেইন-ফোডেনরা। স্কটল্যান্ডের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল।
ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই দলই যেন শারীরিক শক্তির প্রদর্শনী করতে নেমেছিল। প্রথম ১০ মিনিট উড়তে চাইল স্কটল্যান্ড। কিন্তু দুর্দান্ত গতিময় ফুটবল খেলে বেশ কয়েকবার ইংল্যান্ডের ডি-বক্সে আতঙ্ক ছড়াতে পারলেও গোলের দেখা পায়নি তারা। স্কটল্যান্ডের আক্রমণের থাক্কাটা সামলে ইংল্যান্ড যখন খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে, স্কটিশরা রক্ষণটা গুছিয়ে নেয়। এ কারণেই বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ পাওয়ার পরও সেগুলো কাজে লাগাতে পারেননি মেসন মাউন্ট-ফিল ফোডেনরা।
ম্যাচের ১২ মিনিটে ইংল্যান্ড গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল। কিন্তু ডানপ্রান্ত থেকে পাওয়া বলে অনেক দূর লাফিয়ে উঠে করা জন স্টোনের দুর্দান্ত হেডটি ফিরে আসে পোস্টে লেগে। হেডটি আরেকটু ভেতরে থাকলে কিছুই করার ছিল না স্কটল্যান্ডের গোলকিপারের। বলটিকে যে তিনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পোস্টে লাগতে দেখেছেন।
ইংল্যান্ডের হয়ে এরপর গোল করার ভালো সুযোগ পান ফোডেন ও মাউন্ট। কিন্তু কখনো নিজেদের ভুল আর কখনো স্কটিশ রক্ষণ দেয়ালে বাঁধা পড়ে আর গোল পাওয়া হয়নি তাঁদের। ইংল্যান্ডের আক্রমণের ভিড়ে মাঝেমধ্যে ভালো সুযোগ তৈরি করেছে স্কটিশরাও। সবচেয়ে ভালো সুযোগটি তারা পেয়েছিল ৩০ মিনিটে। বাঁ দিকে কিয়েরন টিয়ারনি আর অ্যান্ডি রবার্টসনের পাস দেওয়া-নেওয়ার পর বল যায় স্টিফেন ও'ডোনেলের কাছে। তাঁর দুর্দান্ত ভলিটি অসাধারণ দক্ষতায় বিপদমুক্ত করেন ইংল্যান্ডের গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড।
প্রথমার্ধের শেষ ৫ মিনিটেও ছিল স্কটিশ আধিপত্য। বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরিও করে তারা। কিন্তু অ্যাডাম-ডাইকসরা সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেননি বলে ০-০ সমতা নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করতে হয় স্কটল্যান্ডকে।
দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ডের খেলায় কিছুটা হলেও ছন্দ ফিরে আসে। প্রথমার্ধে নিজেদের ছায়া হয়ে থাকা ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইন ও ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ১-০ ব্যবধানের জয়ে গোলটি করা ফরোয়ার্ড রাহিম স্টার্লিং দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা হলেও জেগে ওঠেন। তাঁদের পায়েই শুরু থেকে বেশ কয়েকটি আক্রমণের রচনা হয় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে।
৭৩ মিনিটে অধিনায়ক কেইনকে তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডের কোচ মাঠে নামান মার্কাস রাশফোর্ডকে। কিন্তু খুব একটা লাভ হয়নি এতে। রাশফোর্ড বলে প্রথম স্পর্শ দিতে পারেন মাঠে নামার ৫ মিনিট পর। কিন্তু সেই স্পর্শ তেমন কিছুই ছিল না। অন্যদিকে শেষ দিকে এসে ইংল্যান্ডের রক্ষণে চাপ তৈরি করতে থাকে স্কটল্যান্ড। সেই চাপ গোল এনে দিতে না পারলেও ইংল্যান্ডকে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বাঁধা দিয়েছে। তাই শেষ দিকে খুব ভালো কোনো আক্রমণ করতে পারেনি স্বাগতিকেরা। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র নিয়েই ম্যাচটি শেষ করতে হয়েছে তাদের।
এই ড্রয়ের পর ২ ম্যাচে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৪। সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় 'ডি' গ্রুপের শীর্ষে আছে চেক প্রজাতন্ত্র। ইংল্যান্ডের অবস্থান দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা ক্রোয়েশিয়া ও স্কটল্যান্ডের পয়েন্ট ১ করে।