ওমানের বিপক্ষে একাদশ নিয়ে দুশ্চিন্তা জেমির

চোট এবং হলুদ কার্ডের খড়্গে মাঠের বাইরে পাঁচ খেলোয়াড়। ওমানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কোচের হাতে খেলোয়াড় মাত্র ১৯ জন!

ভারতের কাছে হারটা এখন অতীত। মোহাম্মদ জুয়েল, রাকিব হোসেনদের সব মনোযোগ এখন ওমানের বিপক্ষে পরের ম্যাচে। দোহায় চলছে ফুটবলারদের সেই প্রস্তুতি

ভারতের সঙ্গে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে না পারার হতাশায় পুড়ছে বাংলাদেশ দল। এর মধ্যেই দেখা দিয়েছে আরেক সংকট। ১৫ জুন ওমানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় ভান্ডার যে প্রায় ফুরিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা! ভারত ম্যাচের একাদশের চারজনসহ নিয়মিত পাঁচ খেলোয়াড়কেই পাওয়া যাবে না ওমানের বিপক্ষে।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুটি হলুদ কার্ড হয়ে যাওয়ায় শেষ ম্যাচে মাঠের বাইরে থাকবেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, মিডফিল্ডার বিপলু আহমেদ ও ডিফেন্ডার রহমত মিয়া। বিপলু প্রথম কার্ড দেখেন লাওসের বিপক্ষে বিশ্বকাপ প্রাক্‌–বাছাইয়ে। জামালের প্রথম কার্ড ভারতের সঙ্গে প্রথম লেগে কলকাতায়। আর রহমতের প্রথম কার্ড ওমানের বিপক্ষে। সতর্ক করা হলেও শেষ পর্যন্ত তিনজনই ভারতের বিপক্ষে হলুদ কার্ড দেখে দলের জন্য বিপদ ডেকে এনেছেন।

ওমান–চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় দল।

গত ম্যাচে চোট পাওয়া মিডফিল্ডার মাসুক মিয়াও ওমান ম্যাচে দর্শক বনে যাচ্ছেন। ডাক্তার তাঁকে ৭-১০ দিন বিশ্রাম দিয়েছেন। মাসুক ফিরছেন দেশে। আফগানিস্তান ম্যাচে চোট পাওয়া মিডফিল্ডার সোহেল রানা দেশে ফিরেছেন দুদিন আগেই। তবে কার্ড সমস্যায় পড়া জামাল, রহমতদের রেখে দেওয়া হচ্ছে দোহায়। অবস্থা এমন যে এই তিনজনও চলে এলে অনুশীলনে দুই ভাগ হয়ে খেলারও সুযোগ থাকবে না বাংলাদেশ দলে।

সাম্প্রতিক বছরে এত বেশি চোটের হানা দেখা যায়নি বাংলাদেশ দলে। চোটে পড়ে শেষ সময়ে কাতার যেতে পারেননি ফরোয়ার্ড সাদ উদ্দিন। নাবিব নেওয়াজ, বিশ্বনাথ ঘোষ, আশরাফুল ইসলামরা তো ছিটকে যান আগেই। করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দোহায় যেতে পারেননি মাহবুবুর রহমানও। কাতার যাওয়া ২৪ ফুটবলারের মধ্যে এখন শেষ ম্যাচের জন্য আছেন মাত্র ১৯ জন। তিন গোলকিপার বাদে ওমানের বিপক্ষে একাদশের বাইরে মাত্র ছয়জন খেলোয়াড় পাবেন কোচ। বদল করা যাবে পাঁচজন। শেষ ম্যাচের আগে নতুন করে কেউ ছিটকে গেলে সংকট আরও বাড়বে।

নবীনদের ওপরই ওমান ম্যাচে ভরসা রাখতে হবে জেমিকে

মাসুক মিয়া, সোহেল রানা ও জামাল না থাকায় মাঝমাঠ শক্তি হারাবে নিশ্চিত। রাকিব, মানিক মোল্লা, ইব্রাহিম ও আবদুল্লাহদের খেলতে হবে শুরু থেকেই। আক্রমণে অনভিজ্ঞ সুমন রেজা, জুয়েল, মেহেদি হাসানদের ওপরই নির্ভর করতে হবে বেশি। বাংলাদেশ দলের ভেতর তাই বইছে দুশ্চিন্তার চোরা স্রোত। ওমান এমনিতেই মহাশক্তিধর প্রতিপক্ষ, তাদের সঙ্গে ভাঙাচোরা দল নিয়ে নামতে হবে ভেবে ভাবনায় পড়েছেন কোচিং স্টাফরা।

কোচ জেমি ডে কাল বলছিলেন, ‘একাদশ গড়াই এখন আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে কিছু করার নেই, যা আছে তা নিয়েই খেলতে বাধ্য আমরা।’ সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন, ‘আমি সব সময় চাই সবাইকে সুযোগ দিতে, যাতে প্রয়োজনের সময় খেলানো যায়। এ কারণেই নেপালে নতুন খেলোয়াড়দের দেখেছিলাম।’

কোন ১১জন নামাবেন এটি ভাবতেই হিমশিম জেমি।

ভারতের কাছে ২-০ গোলে হারের পর বাংলাদেশের আসলে চাওয়া–পাওয়ার আর কিছু নেই। খেলোয়াড়েরা সরাসরি কিছু না বললেও শক্তিশালী ওমানের বিপক্ষে যে যতটা সম্ভব কম গোলে হারই লক্ষ্য, সেটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না কারও। খেলোয়াড়দের প্রায় সবার মুখেই অভিন্ন সুর—ওমান ম্যাচে ভালো খেলার চেষ্টা করবেন তাঁরা। মুঠোফোনে স্টপার রিয়াদুল হাসান বলছিলেন, ‘ভারতের কাছে হেরে আমাদের সবারই মন খারাপ। তবে যেটা চলে গেছে, চাইলেও আর ফিরে আসবে না। চেষ্টা করব ওমানের সঙ্গে ভালো খেলা উপহার দিতে।’

জামালের বদলি হিসেবে ১৫ জুনের ম্যাচে সম্ভাব্য বাংলাদেশ অধিনায়ক তপু বর্মণের কথা, ‘ভারত ম্যাচে যা হওয়ার হয়েছে, এখন আমাদের শেষটা ভালো করা চাই। ওমান অনেক শক্তশালী, তবু আমরা হাল ছাড়ব না।’