>বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি তরুণই তাঁর কীর্তি ছুঁতে পারেন, এমনটা পেলে নিজেই বলছেন।
পরশু তাঁর ২০তম জন্মদিন ছিল। উপহারে উপহারে নিশ্চয়ই ভরে গেছে কিলিয়ান এমবাপ্পের ঘর, শুভেচ্ছাবার্তায় ভরে গেছে তাঁর মোবাইলের মেসেজ বক্স। কিন্তু যে ‘উপহার’টা পেলের কাছ থেকে পেয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি তরুণ, তার চেয়ে আনন্দ সম্ভবত আর কোনো উপহারে পাননি এমবাপ্পে।
বস্তুগত কিছু এমবাপ্পেকে দেননি ব্রাজিল কিংবদন্তি। ছোট্ট, সহজ একটা কথা বলেছেন শুধু। তবে যা বলেছেন, এমবাপ্পের মন ভরিয়ে দিতে সেটিই যথেষ্ট। পেলে যে নিজের উত্তরসূরি, অর্থাৎ সম্ভাব্য ‘নতুন পেলে’ হিসেবে নিজ হাতেই বেছে নিয়েছেন এমবাপ্পেকে! ‘আমার মনে হয় ও নতুন পেলে হতে পারে’-ফ্রান্সের টিভি চ্যানেল কানাল প্লাসে বলেছেন তিনটি বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল কিংবদন্তি।
গত কয়েক দিনে তো সময়ের সেরা ফুটবলারদের সমালোচনা করেই শুধু শিরোনামে এসেছেন পেলে। লিওনেল মেসি তাঁর চোখে ‘একটাই স্কিলসম্পন্ন (ড্রিবলিং) খেলোয়াড়’, স্বদেশি নেইমারকে পিতৃস্নেহে বকাঝকা করেছেন ‘অভিনয়ে’র জন্য। এমবাপ্পেই যা ব্যতিক্রম, পেলের প্রশংসা পেয়েছেন তিনি।
সে অবশ্য রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকেই পেয়ে আসছেন। কখনো মজা করে নিজেই আবার মাঠে নেমে এমবাপ্পের সঙ্গে ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা’র কথা বলেছেন ৭৭ বছর বয়সী পেলে, তো কখনো তাঁর মুখে এমবাপ্পেকে নিয়ে মুগ্ধতা। বিশ্বকাপে পেলের কিছু কীর্তিও ছুঁয়েছেন এমবাপ্পে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে শেষ ষোলোয় দুই গোল করে হয়েছেন পেলের পর নকআউট পর্বে এক ম্যাচে দুই গোল করা টিনএজ (১৩ থেকে ১৯ বছর) খেলোয়াড়। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে তাঁর গোলও ১৯৫৮ বিশ্বকাপ ফাইনালে পেলের পর একটি ফাইনালে কোনো টিনএজ খেলোয়াড়ের প্রথম। পেলে তখন মজা করে টুইট করেছিলেন, ‘কিলিয়ান যদি এভাবে আমার একের পর এক রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলতে শুরু করে, তাহলে আমাকে হয়তো আবার বুটজোড়া ধুলো ঝেড়ে নামতে হবে!’
কানাল প্লাসে এমবাপ্পেকে নতুন করে প্রশংসা করার মধ্যে বিশ্বকাপ সাফল্যই টেনে এনেছেন পেলে, ‘গত বছরই এমবাপ্পের অনেক প্রশংসা করেছি আমি। ও ১৯ বছর বয়সে বিশ্বকাপ জিতেছে। প্রথমবার জেতার সময় আমার বয়স ছিল ১৭।’ তারপরই এমবাপ্পেকে ‘নতুন পেলে’ হিসেবে বেছে নেওয়া এবং সেটি মোটেও মজা করে বলেননি, ‘ওকে আমি বলেছি, কীর্তিতে আমাকে ছুঁতে পারে। আমার মনে হয়, ও নতুন পেলে হতে পারে। অনেকেই ভাবে, আমি সেটা মজা করে বলছি। কিন্তু না, আমি মজা করছি না।’
এমবাপ্পের ক্লাব পিএসজিতে তাঁর স্বদেশি নেইমারও আছেন, ফরাসি একটা টিভিতে কথা বলার সময় স্বাভাবিকভাবেই পেলের কথায় ওঠে পিএসজি প্রসঙ্গও। ব্রাজিল ও ফ্রান্সের দুই প্রাণভোমরাকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি দুই খেলোয়াড় বানিয়ে কাতারি অর্থ ধন্য পিএসজির নিয়ে আসার লক্ষ্য তো একটাই-চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়। গত মৌসুমে সেটি হয়নি, রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে শেষ ষোলোতেই বাদ পড়ে যায় পিএসজি। এবার কোচ বদলে টমাস টুখেলকে নিয়ে এসেছে, গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে শেষ ষোলোতে এবার প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সে বাধা পেরিয়ে এবার শেষ পর্যন্ত যেতে পারবে পিএসজি?
পেলের আশার তার উঁচুতেই বাঁধা, ‘পিএসজি অসাধারণ একটা দল। আশা করি, ওরা দারুণ ফুটবল খেলবে, চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে যাবে। শিরোপা জিতবে কি না, সে তো শুধু ঈশ্বরই জানেন।’