উয়েফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন লুকা মদরিচ। ফিফার বর্ষসেরাও রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার। দুটি পুরস্কারের মঞ্চেই তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও মোহাম্মদ সালাহর। এক দশক ধরে ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বে রোনালদোর সঙ্গে ভাগাভাগি করে আধিপত্য দেখানো লিওনেল মেসির জায়গা হয়নি এ দুটি পুরস্কারের সেরা তিনে। বছরের তৃতীয় পুরস্কারটির বিজয়ী এখনো ঘোষিত হয়নি। ৩ ডিসেম্বরে কে হাতে তুলে নেবেন ব্যালন ডি’অর ট্রফি?
অনেকের চোখেই এবার সেরা তিনে থাকবেন এডেন হ্যাজার্ড। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড় নতুন মৌসুমে চেলসির নতুন কোচ সারির অধীনে যেভাবে খেলছেন, তাতে চূড়ান্ত বিজয়ীও হয়ে যেতে পারতেন নামের পাশে একটি উল্লেখযোগ্য ট্রফি থাকলে। তবে বেলজিয়ান এই প্লে মেকারের চোখে এবার ব্যালন ডি’অর জয়ে সবচেয়ে এগিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পে।
এমবাপ্পে যে অদূর ভবিষ্যতেই ব্যালন ডি’অর জিতবেন, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মেসি-রোনালদোর উত্তরসূরি হিসেবে ভাবা হচ্ছিল নেইমার জুনিয়রকে। গত মৌসুমে পিএসজি নেইমার ও এমবাপ্পেকে কিনে নেওয়ার পরও সেটাই মনে হচ্ছিল। প্রথমে বর্তমান নিশ্চিত করে ভবিষ্যতের তারকা এমবাপ্পেকেও নিয়েছে তারা। কিন্তু এক মৌসুমেই সব বদলে গেছে। পিএসজির হয়ে নেইমারের সমান আলো ছড়িয়েছেন এমবাপ্পে। পরে বিশ্বকাপে গিয়ে নেইমার যেখানে মাটিতে গড়াগড়ি দিয়েই আলোচিত হয়েছেন, এমবাপ্পে সেখানে পেলের মতো কিংবদন্তিকে ছুঁয়েছেন। ফ্রান্সকে জিতিয়েছেন দ্বিতীয় বিশ্বকাপ।
এমনিতেই ফ্রান্স বিশ্বকাপ জেতায় ফ্রান্সের কারও ব্যালন জেতা উচিত বলে ভাবছেন অনেক সাবেক খেলোয়াড়। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী রাফায়েল ভারানে, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে ইউরো লিগ ও সুপার কাপ জেতা আঁতোয়ান গ্রিজমানকেও তাই ফেবারিট ধরা হচ্ছে। গ্রিজমানও নিজের ঢোল পিটিয়ে যাচ্ছেন দুই তিন মাস ধরে। তবে নতুন মৌসুমেও বিশ্বকাপের ফর্ম ধরে রেখে এমবাপ্পেই আপাতত দৌড়ে এগিয়ে আছেন। হ্যাজার্ড অন্তত সেটাই মনে করেন। তাঁর ধারণা ক্লাবের হয়ে পারফরম্যান্স মাত্র ১৯ বছরেই ব্যালন জিতিয়ে দিতে পারে এমবাপ্পেকে। বেলজিয়ান সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান আরটিবিএফকে সম্ভাব্য বিজয়ীর নাম বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, ‘আমি আগে বলতাম লুকা মদরিচ, কিন্তু আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে সে ভালো খেলেনি। তাই এ মৌসুমের শুরুটা বিবেচনা করলে আমি কিলিয়ান এমবাপ্পের নাম বলব।’
হ্যাজার্ডকে নিজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে প্রসঙ্গটা একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর ভাষায় বিশ্বে তাঁর চেয়ে অনেক খেলোয়াড়ই ভালো খেলেছেন, ‘ব্যালন ডি’অর আমার প্রাপ্য নয়। আমার চেয়ে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছেন। আমি যদি এ বছর খুব ভালো খেলেও থাকি, আমি বাস্তবতা ভুলছি না।’ হ্যাজার্ডের এমন বিনয় ভক্তের সংখ্যা বাড়ালেও সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে রোনালদোর নাম না বলায় পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড রাগ করতেই পারেন। কারণ, মদরিচ কিংবা সালাহ নিজেদের ফর্ম হারিয়ে ফেললেও রোনালদো কিন্তু নতুন মৌসুমে সেরাটাই দিচ্ছেন।