গত মৌসুমটা প্রায় পুরোটাই ডাগ আউটে বসে কাটিয়েছেন। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে গিয়েছিলেন একটু বেশি অর্থের হাতছানিতে। কিন্তু কী ভুলটাই না করেছিলেন! সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতেই এবার শেখ জামাল ছেড়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর তাঁবুতে। গতবারের অবহেলার জবাব দিতে যেন মরিয়া রুবেল। গতকাল শনিবার স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে তাঁর অসাধারণ গোলটি যেন সে কথাই বলছে।
ম্যাচের ৬১ মিনিটে কৌশিক বড়ুয়ার ক্রসে বল উড়ে এল তাঁর কাছে। চকিতে করে বসলেন দুর্দান্ত এক ব্যাক ভলি। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে উপস্থিত অল্পসংখ্যক দর্শক অবাক বিস্ময়ে দেখল রুবেলের সেই ব্যাক ভলিতেই বল জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা আবাহনীর গোলে।
শেখ রাসেলের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও দারুণ এক গোলে পিছিয়ে পড়া চট্টগ্রাম আবাহনীকে খেলায় ফিরিয়েছিলেন তিনি। পরে টাইব্রেকারে গড়ানো সেই ম্যাচ জিতেই ফাইনালে পা রাখে তারা। গত মৌসুমে এই তিনিই যেন ছিলেন ‘অচল’। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জন্ম নেওয়া সহজ-সরল ভাবনার ছেলে রুবেল অবশ্য ‘জবাব দেওয়া’র ব্যাপারটি এড়িয়েই গেলেন, ‘একটা মৌসুম পুরোপুরি বসে কাটানোর পর এবার নিজেকে প্রমাণের একটা তাড়না কাজ করছে। আমি কেবল আমার নিজের খেলাটাই খেলছি। জানি, ম্যাচে সুযোগ পেলে গোল করার সুযোগও আসবে। ব্যাপারটাকে এভাবেই দেখছি। তবে এমন গোল আমি করতে চাই বারবারই।’
চট্টগ্রাম আবাহনীর স্লোভাক কোচ যোসেফ পাভলিকের প্রতি কৃতজ্ঞ রুবেল, ‘কোচ আমাকে মাঠে আমার মতো খেলার স্বাধীনতা দিয়েছেন। এটা সবাই দেয় না। তিনি বলেছেন, তোমার কাজ কেবল অন্য দলের ডিফেন্স ভাঙা। তুমি গোল করাবে, একই সঙ্গে গোল করবে। কোচের উৎসাহ পেয়েই আমি নিজেকে মেলে ধরেছি।’
আপাতত নিজেকে মেলে ধরার কাজটাই করেছেন রুবেল। তাঁকে তো পাড়ি দিতে হবে আর অনেক পথ। সেটা তিনি জানেন, ‘এটা তো সবে শুরু। আমাকে আরও পরিশ্রম করতে হবে। প্রতিভা নিয়ে অনেকেই জন্মায়। কিন্তু প্রতিভার প্রয়োগটা ঠিক জায়গায় ঠিকমতো করতে অনুশীলন আর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। আমি এটা খুব ভালো করেই জানি।’
কালকের দুটি গোলই হয়েছে সুন্দর। দুই আবাহনীর খেলাও হয়েছে বেশ। রুবেল জানেন, এমন সুন্দর গোল বারবার করতে হবে। ঢাকায় ৫০০ লোক অহেতুক দাঁড়িয়ে রাস্তায় গর্ত খোঁড়া দেখলেও অদ্ভুত কারণে মাঠে যেতে চায় না। রুবেলদের সুন্দর গোল যদি মাঠে টেনে নিয়ে যায় তাঁদের!