>গত রাতে স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে ভালাদোলিদকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেলেও বার্সেলোনা যে ম্যাচটা দৃষ্টিসুখকর ফুটবল খেলে জিতেছে, বলা যাবে না মোটেও।
ম্যাচে দুটি পেনাল্টি পেল বার্সেলোনা। পেনাল্টি নিতে এলেন লিওনেল মেসি। দুই পেনাল্টিতে মেসি যদি দুই গোল করেই ফেলেন, তাহলে মেসির সঙ্গে পেনাল্টির আজীবন অম্লমধুর সম্পর্কের দাম থাকল কোথায়? সেটা প্রমাণ করতেই যেন প্রথম পেনাল্টিতে গোল করতে পারলেও, দ্বিতীয়টা মিস করেছেন তিনি। আর সেই প্রথম পেনাল্টিতে পাওয়া গোলের ওপর ভর করেই ভালাদোলিদ-বাধা পার করেছে বার্সেলোনা।
এক দিন আগেই বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছেন কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে। এমনিতেই ভদ্রলোকের নিন্দুকের অভাব নেই। প্রথম মৌসুমে বার্সাকে ‘ডাবল’ জেতালেও, ভালভার্দের অধীনে বার্সেলোনা চোখজুড়ানো ফুটবল খেলে না, মেসি নিজের মতো খেলতে পারে না— নিন্দুকদের অভিযোগের যেন কমতি নেই। এই ভালভার্দের সঙ্গে যখন বার্সা নতুন করে চুক্তি করল একদিন আগে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ভালভার্দে-বিরোধীদের অসন্তোষের কমতি ছিল না। গত রাতের ম্যাচটা যেন সেসব নিন্দুকদের আরেকবার এটা বলার সুযোগ করে দিল, ‘দেখেছ? বলেছিলাম না? ভালভার্দের অধীনে বার্সেলোনা ভালো খেলে না?’
এই সপ্তাহে অলিম্পিক লিওঁর বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে নামবে বার্সা। সে কারণে দলের মূল স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজকে বিশ্রাম দিয়ে এই ম্যাচে প্রথমবারের মতো ঘানার স্ট্রাইকার কেভিন প্রিন্স বোয়াটেং কে মূল একাদশে নামিয়েছিলেন ভালভার্দে। কিন্তু দলের সবচেয়ে বড় তারকা মেসি বিশ্রাম পেলেন কই? তিন সপ্তাহ আগে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ঊরুর চোটে পড়ার পর থেকেই যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন মেসি। লিওঁর বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে তাই এই ম্যাচটাকে নিয়েছিলেন ফর্মে ফেরার উপলক্ষ হিসেবে। কিন্তু না, মেসি পারলেন না। চোখধাঁধানো ফুটবল খেলে ক্যাম্প ন্যু এর দর্শকদের সন্তুষ্ট করতে পারলেন না, ফলে গোটা ম্যাচই ঘুমিয়ে থাকল বার্সা। এমনকি উপায় না দেখে শেষ মুহূর্তে বোয়াটেং কে তুলে নিয়ে সুয়ারেজকে নামিয়েও উপকার পাননি ভালভার্দে। বরং লা মাসিয়ায় মেসিদের সতীর্থ হিসেবে এককালে খেলা ভালাদোলিদের গোলরক্ষক জর্দি মাসিপ বার্সেলোনার মাঠে ফিরে সমর্থকদের যেন দেখিয়ে দিলেন, গত কয়েক বছরে অন্য গোলরক্ষকের পেছনে খরচ না করে তাঁকে আর কিছুদিন সুযোগ দিলে অন্তত বার্সেলোনার দ্বিতীয় গোলরক্ষক হতে পারতেন। মেসির প্রথম পেনাল্টিটা ঠেকাতে না পারলেও, দ্বিতীয়টা ঠিকই ঠেকিয়ে দিয়েছেন। পেনাল্টি ঠেকানো ছাড়াও যেভাবে গোটা ম্যাচে মেসি-সুয়ারেজদের একের পর এক প্রচেষ্টাগুলো নস্যাৎ করেছেন, মাসিপের মতো দলের স্ট্রাইকাররা একটু কার্যকারিতা দেখালেই ম্যাচটা ড্র করে ফেলতে পারত তারা।
কষ্টার্জিত এই জয় পেয়ে লিগের প্রথম স্থানটা এখনো নিজেদের দখলে রেখেছে বার্সা। ২৪ ম্যাচ খেলে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৫৪, দ্বিতীয় স্থানে থাকা অ্যাটলেটিকো আছে সাত পয়েন্ট পেছনে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ বার্সার থেকে নয় পয়েন্ট পেছনে থাকলেও অ্যাটলেটিকো-বার্সার চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলেছে তারা।