>পিএসজিকে তাদের মাঠে ৩-১ গোলে অবিশ্বাস্যভাবে হারিয়ে 'অ্যাওয়ে গোল' এর বিধি অনুযায়ী কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। রূপকথার মতো এক রাতে ঐতিহাসিক এই জয় পেয়ে উচ্ছ্বসিত ক্লাব কিংবদন্তি রিও ফার্ডিনান্ড সাবেক কোচ হোসে মরিনহোকে খোঁচা দিতে ভুললেন না।
নিজেদের মাঠে ২-০ গোলে হার। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে প্রতিপক্ষকে দুটি মহামূল্যবান অ্যাওয়ে গোল দিয়ে দেওয়া। এই অবস্থায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পিএসজিকে তাদের মাঠেই হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে, এমন আশা পাঁড় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকেরাও করেননি হয়তো। তার ওপর দলের অবস্থা যে খুব ভালো তাও নয়।
কিন্তু ওলে গুনার সুলশ্যার নৈরাশ্যবাদীদের পক্ষে কখনোই ছিলেন না। কোচ হিসেবেও সেই হার-না-মানা সুলশ্যারকেই দেখছে বিশ্ব। সুলশ্যারের প্রেরণাতেই গত রাতে পিএসজিকে তাদের মাঠে ৩-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টারে জায়গা করে নিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
ইউনাইটেডের এই মহাকাব্য দেখার জন্য গত রাতে মাঠে ছিলেন সাবেক কিংবদন্তি কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন। ছিলেন সাবেক তারকা স্ট্রাইকার এরিক ক্যান্টোনাও। বিভিন্ন স্পোর্টস চ্যানেলের পণ্ডিত হিসেবে পেশাদারি দায়িত্ব পালন করার অংশ হিসেবে ছিলেন রিও ফার্ডিনান্ড ও গ্যারি নেভিলের মতো সাবেক তারকারাও। বিটি স্পোর্টসের পণ্ডিত প্যানেলে থাকা ফার্ডিনান্ড তাই দেখেছেন পুরো ম্যাচটা। একেকটা গোলের পর উদ্যাপন করেছেন শিশুদের মতো। একদম শেষে মার্কাস রাশফোর্ডের পেনাল্টি গোলে ইউনাইটেডের জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর ফার্ডিনান্ডের উদ্যাপনটাও হলো বাঁধন হারা। আর সে উদ্যাপন করতে করতে সাবেক হওয়া কোচ হোসে মরিনহোকে সূক্ষ্ম খোঁচা দিতেও ভুললেন না এই সাবেক ডিফেন্ডার, 'এটাই ইউনাইটেড। এটাই ইউনাইটেডের চরিত্র। ছোট ছোট বাচ্চারা মূল দলে সুযোগ পাচ্ছে আর নিজেদের নিংড়ে দিচ্ছে। শুধু পেছনে বসে থাকা আর রক্ষণ করা, এসব এখন আর হয় না।'
বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা না, শেষ কথাটা বলে ফার্ডিনান্ড মরিনহোকেই খোঁচা দিয়েছেন। আক্রমণের চিন্তা না করে শুধুমাত্র গোল না খাওয়ার জন্য নাকমুখ চেপে রক্ষণ করা, মরিনহো ঠিক এভাবেই খেলাতেন ইউনাইটেডকে। ওলে গুনার সুলশ্যারের অধীনে সেই ধরন থেকে বের হয়ে এসেছে ইউনাইটেড। হারার আগে এখন আর হেরে যায় না ইউনাইটেড। ঠিক ফার্গুসনের অধীনে যেমন খেলত তারা। এর চেয়েও বড় ব্যাপার জয়ের মুহূর্তে মাঠে ছিলেন তাহিত চং, ম্যাসন গ্রিনউডের মতো একাডেমির খেলোয়াড়েরা। জয়সূচক গোল এনে দিয়েছেন একাডেমি থেকে উঠে আসা তারকা মার্কাস রাশফোর্ড। ম্যাচ স্কোয়াডে আরও ছিলেন জেমস গার্নার, অ্যাঞ্জেল গোমেসের মতো দুই একাডেমি খেলোয়াড়। মরিনহোর সময়ে এই তরুণেরা সুযোগই পেতেন না।
গতকাল প্যারিসে দলের সঙ্গে ছিলেন এমন ১২ জন খেলোয়াড় মৌসুমের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক মৌসুমের দলেও ছিলেন। সে দল নিয়ে বিরক্ত মরিনহো বলেছিলেন, ‘এটা আমাদের দল না, এটা আমাদের স্কোয়াড না। এখানে যারা খেলেছে তাদের অধিকাংশ খেলবে না (মূল মৌসুমে)। এদের অনেকেই তো এ স্কোয়াডের অংশ হওয়ারই অধিকার নেই!’ মরিনহোকে ভুল প্রমাণ করে সেই ‘অধিকার না থাকা’ খেলোয়াড়েরাই ইউনাইটেড দলে প্রাণবন্ত ফুটবল খেলছেন, চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রত্যাবর্তনের নতুন ইতিহাস গড়ছেন।
ফার্ডিনান্ড তো খুশি হবেনই!