>প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে আবাহনী লিমিটেড। আবাহনীর এ সাফল্যে সবচেয়ে বড় অবদান আফগানিস্তানের ডিফেন্ডার মাশিহ সাইগানির।
বসুন্ধরার বাতিল খেলোয়াড়কে দলে নিয়েছে আবাহনী। মৌসুমের শুরুর দিকেও মাশিহ সাইগানির প্রথম পরিচয় ছিল বসুন্ধরার বাতিল খেলোয়াড়। কারণ আফগান এই ডিফেন্ডারকে এনেছিল বসুন্ধরা। কিন্তু দল বদলের শেষের দিকে মাশিহকে ছেড়ে দেয় দলটি। আবাহনীও তখন হন্যে হয়ে বিদেশি খেলোয়াড় খুঁজছে। দুয়ে দুয়ে চার হয়ে মাশিহ হয়ে গেলেন আবাহনীর। সেই বাতিল খেলোয়াড়ই আবাহনীর জন্য এখন আশীর্বাদ।
কাল তাঁর একমাত্র গোলেই মিনার্ভা পাঞ্জাবকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রেখেছে আবাহনী। একজন ডিফেন্ডার হয়েও এএফসি কাপে আবাহনীর সর্বোচ্চ গোলদাতাও আফগান এ ডিফেন্ডার। ৬ ম্যাচে গোল করেছেন তিনটি। এর আগে আবাহনীকে জিতিয়েছেন ফেডারেশন কাপের শিরোপাও।
কাল তো আবাহনীকে একেবারেই বাঁচিয়ে দিয়েছেন মাশিহ। ভারতের গুয়াহাটির মাঠে মিনার্ভা পাঞ্জাবের সঙ্গে গোল করতে পারছিল না আকাশি-নীলরা। ৯০ মিনিট শেষ। ম্যাচ ০-০। ড্র হলে আবাহনীর এএফসি কাপের পরের রাউন্ডে যাওয়া হতো না। কারণ, কাঠমান্ডুতে মানাং মার্সিয়াংদির বিপক্ষে ৩-২ গোলে জিতে গেছে চেন্নাইয়িন এফসি। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত যোগ করা সময়ে আবাহনীর স্বপ্নটা বাঁচিয়ে দিলেন মাশিহ। নাবীব নেওয়াজ জীবনের কর্নার থেকে হাইতিয়ান স্ট্রাইকার কেভিন বেলফোর্ট হেড করলে বল গোল মুখ থেকে ফিরে আসে। সেখান থেকে মাশিহর ফিরতি হেড জালে।
সাইগানির এই গোল কোটি টাকার চেয়েও বেশি দামি। কারণ, পেশাদার যুগে ৫টি এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ ও এর আগে দুটি এএফসি কাপে খেলে কোনটিরই চূড়ান্ত পর্বে যেতে পারেনি আবাহনী। এবারই সেই ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসল ঐতিহ্যবাহীরা। পুরো এএফসি কাপেই মাশিহ ছিলেন দুর্দান্ত। এর আগে ঢাকায় চেন্নাইয়িন এফসির বিপক্ষে ফ্রিকিক থেকে করেছিলেন দুর্দান্ত এক গোল। মনে হলো পা থেকে নয় বলটি বের হয়েছে কামান থেকে। নিখুঁত নিশানায় সেই কিকে এমন গতি আর বিষ মেশানো ছিল যে চেন্নাই গোলরক্ষকের করার কিছু ছিল না। নাটকীয় ম্যাচেও ৩-২ গোলে জয় পেয়েছিল আবাহনী।
এএফসি কাপে আবাহনী জয় দিয়ে শুরু করতে পেরেছিল শুধু ৩২ বছর বয়সী এই আফগানের কল্যাণেই। কাঠমান্ডুতে নেপাল লীগ চ্যাম্পিয়ন মানাং মার্সিয়াংদি ক্লাবকে ১-০ গোলে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল আকাশি-নীলরা। ২৮ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেছিলেন তিনি।
শুরুর সঙ্গে শেষটাও রাঙিয়ে দিয়ে গেলেন সাইগানি। তিনি গত কয়েক বছরে আবাহনীতে আসা অন্যতম সেরা বিদেশি। যিনি ডিফেন্ডার হলেও দলকে অনেক ম্যাচেই জয় এনে দিয়েছেন গোল করার সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে। সেই সাইগানিকে নিয়ে ম্যাচের পর আবাহনীর সে কী উচ্ছ্বাস! মনে হলো, মরুভূমিতে এক পশলা বৃষ্টি এনে দিলেন সুদর্শন এই ফুটবলার।