প্রথমার্ধে জার্মানি গোল হজম করেছে তার ভুলে। কিন্তু ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ফ্রিকিক থেকে দারুণ এক গোল করে সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেছেন টনি ক্রুস
ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার পথ থাকে। অনেকেই সে পথে হাঁটেন। টনি ক্রুসও হাঁটলেন সুইডেন ম্যাচে ‘বীর’ হয়েই।
ম্যাচের তখন অন্তিম মুহূর্ত। রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতে বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছেন। এ সময় সুইডেনের বক্সের ডান প্রান্তে ফ্রিকিক পেল জার্মানি। ক্রুজই সেটি নিতে গেলেন। পাশে মার্কো রয়েস দাঁড়াতেই আন্দাজ করা গিয়েছিল, কোনো একটা ফন্দি আছে। সেটা বোঝা গেল খানিক পরেই। শট নেওয়ার আগে রয়েসকে দিয়ে ক্রুস বলটা এমনভাবে বানিয়ে নিয়েছেন যে সুইডিশ ‘মানবদেয়াল’-এ যেন না বাধে। তাঁদের ডান পাশ দিয়ে বলটা বাতাসে বাঁক নিয়ে আশ্রয় নিল জালে!
ম্যাচে জয়টা জার্মানদের জন্য ছিল পরম আকাঙ্ক্ষিত। ড্র হলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়াটা কঠিন হয়ে যেত জার্মানদের। সমীকরণ মেলাতে তখন পুরোপুরি অন্যের ওপর নির্ভর হয়ে পড়তে হতো তাদের। এমন অবস্থায় ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে জয়সূচক গোল পুরো বিষয়টিকে ‘ক্ল্যাসিক’ মর্যাদাই দেয়। আর ওই পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন কেবল গ্রেটরাই। ক্রুস দেখালেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে কীভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেটপিস থেকে সুইডিশ বক্সে বল না ফেলে তিনি বল মেরেছেন সোজা গোলে। নিজের ওপর কতটুকু আত্মবিশ্বাস থাকলে একজন ফুটবলার এমন কিছু করতে পারেন!
অথচ প্রথমার্ধের একপর্যায়ে এই ক্রুসকেই দেখা গেছে আত্মবিশ্বাসের তলানিতে। সুইডেন এগিয়ে গিয়েছিল তাঁরই ভুলে। না, আত্মঘাতী গোল করেননি ক্রুস। কিন্তু সুইডেন প্রথম গোলটা পেয়েছে তাঁর এক ভুলের সদ্ব্যবহার করে। ৩২ মিনিটে অলা তইভনেনের সেই গোলের আগে পাস দিতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলেছিলেন ক্রুস। সেই সুযোগে মার্কাস বার্গ থেকে ভিক্টর ক্লাসেন হয়ে বলটা পান তইভনেন।
ক্রুস নিজের এই ভুলটা স্বীকার করে নিয়েছেন। ভুলের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন, ‘অবশ্যই প্রথম গোলটা (সুইডেনের) আমার ভুলে। ম্যাচে চার শর মতো পাস খেললে দু-একটা ভুল হবেই।’ তবে মেক্সিকোর কাছে প্রথম ম্যাচে হারের জন্য জার্মান সংবাদমাধ্যম ও সাবেকদের সমালোচনার জবাবও দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ‘সার্জন’ নামে খ্যাত এই মিডফিল্ডার, ‘আমাদের অনেক সমালোচনা হয়েছে। আজ (কাল) ছিটকে পড়লে জার্মানিতে অনেকেই খুশি হতো।’
কিন্তু ক্রুস তা হতে দিলেন না সুইডেনকে ‘ক্রুসবিদ্ধ’ করে। নিন্দুকদেরও!