>‘রোনালদো’ নামের ভার বেশ সফলভাবেই বইছেন ক্রিস্টিয়ানো, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। অর্জনের দিক দিয়ে বহু আগেই ব্রাজিলের কিংবদন্তি রোনালদোকে ছাড়িয়েছেন তিনি। নিজের ‘মিতা’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ব্রাজিলীয় রোনালদোর কণ্ঠে তাই শুধু প্রশংসাই ঝরল।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যখন ক্যারিয়ার শুরু করলেন, ব্রাজিলের রোনালদো নাজারিও দা লিমার ক্যারিয়ার তখন মধ্যগগনে। স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে ক্রিস্টিয়ানো যখন অল্পস্বল্প নাম করা শুরু করেছেন, রোনালদো তখন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গড়ছেন একের পর এক কীর্তি, ব্রাজিলের হয়ে জিতছেন বিশ্বকাপ। কিন্তু চোটে বিপর্যস্ত হয়ে রোনালদো শেষ দিকে এসে আর নিজের ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি, বয়স ত্রিশ হওয়ার পর থেকেই কমতে শুরু করে রোনালদো-ঝলক। ওদিকে তেত্রিশ বছর বয়স হওয়ার পরেও ক্রিস্টিয়ানো রয়েছেন একই রকম উজ্জ্বল, একই রকম বিধ্বংসী। এর রহস্য কী? সেটি জানালেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ‘মিতা’ রোনালদো স্বয়ং!
অনুশীলন করার আগ্রহের ব্যাপারটিই দুই রোনালদোকে আলাদা করেছে বলে জানিয়েছেন রোনালদো নাজারিও, ‘আমি অনুশীলনটা করতাম করার জন্য আর ক্রিস্টিয়ানো করে কারণ সে সেটি করতে দারুণ ভালোবাসে।’
নিজের প্রতি যত্নও ক্রিস্টিয়ানোকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছে বলেছ জানিয়েছেন ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো রোনালদো, ‘রোনালদো যেভাবে নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেয়, আর কেউ সেভাবে নেয় বলে আমার মনে হয় না। রোনালদোর মতো ক্রমাগত উন্নতি করার আগ্রহও খুব বেশি খেলোয়াড়ের নেই।’
ব্রাজিলের রোনালদোই প্রথম নন, ক্রিস্টিয়ানো যে অনুশীলন করতে কী রকম ভালোবাসেন, সেটি কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন তাঁর সাবেক সতীর্থ প্যাট্রিস এভরাও। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে এঁরা দুজন ছিলেন সতীর্থ। দাওয়াত দিয়ে এভরাকে বাড়িতে এনে তাঁর সঙ্গে নাকি ফুটবল অনুশীলন করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো, ‘আমি দাওয়াত রক্ষার জন্য ক্রিস্টিয়ানোর বাসায় গেলাম। সেদিন খুব ক্লান্ত ছিলাম আমি। কিন্তু খাবার টেবিলে গিয়ে দেখলাম শুধু সালাদ, মুরগি আর পানি। কোনো জুস নেই। তারপরও মেনে নিলাম। খাওয়া শুরুর পর ভাবলাম, হয়তো মাংসজাতীয় আরও কিছু দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই এল না। সে খাওয়াদাওয়া শেষ করেই আবার খেলা শুরু করে দিল। দক্ষতা বাড়ানোর অনুশীলন আরকি। আমাকে বলল, চলো, “টু-টাচ” (বলে দুটি টাচের বেশি করা যাবে না) অনুশীলন করি।’
রোনালদো নাজারিও না ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, কে বেশি ভালো? এ প্রশ্নের জবাবে যেন একটু কৌশলী হয়ে গেলেন রোনালদো, ‘রোনালদোর খেলার ধরন আর আমার খেলার ধরন এক নয়। হ্যাঁ, এটা সত্যি আমাদের দুজনের লক্ষ্যই গোল করা, কিন্তু গোল করার জন্য আমাদের দুজনের “অ্যাপ্রোচ” ভিন্ন। আলাদা। আমি বলতে চাই না যে সে এখন যে পরিস্থিতিতে ফুটবল খেলছে, তা আমার পরিস্থিতির চেয়ে সহজ বা আমার আমলে তার থেকে বেশি প্রতিযোগিতা। শুধু এটা বলতে চাই, আমার সময়ের প্রতিযোগিতার মান ও ধরন ওর সময়ের থেকে ভিন্ন। আমরা দুজন দুই যুগের খেলোয়াড়, তাই আমাদের মধ্যে তুলনা হয় না।’