ম্যাচের বিরতিতে দিল্লি থেকে এক ভারতীয় ক্রীড়া সাংবাদিক হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দিলেন, ‘দারুণ খেলছে বাংলাদেশ! বাংলাদেশ আরও ৩-৪ গোলে এগিয়ে থাকতে পারত। দুটো পেনাল্টি...।’ বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশে ক্রিকেট উন্মাদনা থাকলেও আজকের খেলায় কোটি কোটি চোখ তাকিয়ে ছিল ফুটবল লড়াইয়ে। জিততে জিততে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ড্র নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। তবে ৯০ মিনিট জামাল ভূঁইয়ারা যে খেলাটা উপহার দিয়েছেন, এ বাংলাদেশকে মনে রাখতেই হবে ভারতকে।
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর দেখে মনে হচ্ছিল, সাদ-জীবনদের অন্তত এক হালি গোল দিতে সুনীল ছেত্রীরা আজ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে নামবেন। কোনো পত্রিকা তো এমনও হেডিং করেছে, ‘সুনীল ছুটলেই বাংলাদেশ হারিয়ে যাবে’! বাংলাদেশ হারিয়ে যায়নি। বরং বেশ প্রভাববিস্তার করা কৌশলী ফুটবল খেলছে, একটা সময় মনে হচ্ছিল, ভারতই হারিয়ে যাবে বাংলাদেশের সামনে! ৪২ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার সেট পিসে দুর্দান্ত এক হেডে সাদ উদ্দীন বল জড়িয়ে দেন ভারতের জালে। এ গোলে দর্শকে ঠাসা যুবভারতী স্টেডিয়ামে নেমে আসে অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। হাজারো নীল জার্সির সমর্থকদের ভিড়ে হাতে গোনা কিছু লাল-সবুজের দর্শকদের চিৎকারই তখন অনেক জোরালো!
সাদের অসাধারণ গোল তো ছিলই, দুটো পেনাল্টিও পাওনা ছিল বাংলাদেশের। টিভি রিপ্লেতেও দেখাল পেনাল্টি দুটি বাংলাদেশ পেতেই পারত। পেনাল্টি পায়নি, তবুও বাংলাদেশ জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত। বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। আর শেষ দিকে ভারতের প্রেসিং ফুটবলে অনেকটা বাধ্য হয়ে রক্ষণাত্মক খেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ৮৮ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থেকেও বাংলাদেশকে গোল হজম করতে হয়েছে। মাঠ ছাড়তে হয়েছে ১-১ ড্র নিয়ে।
অল্পের জন্য জয় ফসকে গেলেও এই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অনেক। ম্যাচের আগে পরিসংখ্যান-ইতিহাস ভারতের পক্ষে ছিল। ভারতের ১২ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জিতেছে ৩টিতে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ৮৩ ধাপ। তবুও ৬০ হাজারের বেশি দর্শকের সামনে স্বাগতিকদের বিপক্ষে যে লড়াইটা জামাল-সাদরা করেছেন—ভারতীয়রা মনে রাখবেন জেমি ডের এই দলকে।
আরও পড়ুন:
দুই পেনাল্টি ছাড়াই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ
এই ড্র তো ভারতীয় ফুটবলের আভিজাত্যে আঘাতও
শেষ সময়ের গোলে জয়টা ফসকে গেল বাংলাদেশের