আজ জয় হবে কার—লুকাকু, নাকি ইতালির রক্ষণের? ইতালির আঁটসাঁট রক্ষণ পেরোনোর অনুশীলনটা কাল ভালোভাবেই সেরে নিয়েছেন বেলজিয়ামের স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু।
আজ জয় হবে কার—লুকাকু, নাকি ইতালির রক্ষণের? ইতালির আঁটসাঁট রক্ষণ পেরোনোর অনুশীলনটা কাল ভালোভাবেই সেরে নিয়েছেন বেলজিয়ামের স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু।

ইতালির সামনে একজন লুকাকু

আজ মিউনিখে মুখোমুখি হচ্ছে ইতালি ও বেলজিয়াম। শেষ চারে ওঠার এই ম্যাচে মূল লড়াইটা বেলজিয়ামের লুকাকুর সঙ্গে ইতালির রক্ষণের।

এডেন হ্যাজার্ড, কেভিন ডি ব্রুইনা, রোমেলু লুকাকু, দ্রিস মের্তেনস, থরগান হ্যাজার্ড—বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্ম, দেশটির ফুটবল কাননের একেকটি প্রস্ফুটিত ফুল। তাঁদের নিয়েই ২০১৮ বিশ্বকাপকে লাল গোলাপের সৌরভে সুরভিত করেছে বেলজিয়াম। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে কালোঘোড়া হিসেবে খেলতে গিয়ে শেষ চারের বাধা পেরোতে পারেনি তারা। ঝরে পড়েছে ফ্রান্সের কাছে হেরে। কিন্তু এবার ইউরোপ জয়ের দাবি নিয়েই ইউরো অভিযান শুরু করেছে বেলজিয়াম। সেই অভিযানে শেষ আটে তাদের বাধা আজ ইতালি।

আজ মিউনিখে বেলজিয়াম-ইতালির যেকোনো এক দলকে শুনতে হবে বিদায়ের সুর। হয় মিলিয়ে যাবে বেলজিয়ামের লাল গোলাপের মৌতাত অথবা ঝরে পড়বে ইতালির নীল পদ্ম। বেলজিয়াম দলে তারকার ছড়াছড়ি। কিন্তু সোনালি প্রজন্মের ইউরোপ জয়ের স্বপ্নের প্রধান সারথি লুকাকু। শেষ ষোলোতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর তাঁর পর্তুগালকে বিদায় করে দেওয়ার ম্যাচে গোল পাননি লুকাকু। কিন্তু আসুরিক গতিতে কয়েকবারই এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছেন পর্তুগিজ রক্ষণ।

ইতালি তো এখন লুকাকুর দ্বিতীয় বাড়ি! দুই মৌসুম ধরে খেলছেন সিরি ‘আ’তে। বলা যায়, এই লিগ তাঁকে পুনর্জন্মও দিয়েছে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে হঠাৎই নিজেকে হারিয়ে খোঁজা লুকাকু ইন্টার মিলানে নাম লেখান ২০১৯ সালে। এরপর সিরি ‘আ’তে ৭২ ম্যাচ খেলে ৪৭ গোল করেছেন লুকাকু, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১২টি গোল। তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সে ১১ বছরের অপেক্ষার পর লিগ শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসেছে ইন্টার।

শুধু ক্লাব ফুটবল নয়, লুকাকু সুরভিত করেছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলও। বেলজিয়ামের হয়ে সর্বশেষ ৪৫ ম্যাচে তিনি গোল করেছেন ৪৬টি। ক্লাব আর আন্তর্জাতিক ফুটবলে এমন সমানতালে ছন্দে থাকা লুকাকুকে বোঝাতে গিয়ে মানবীয় উপমায় সীমাবদ্ধ থাকতে পারেননি ইন্টার মিলানের কোচ আন্তোনিও কন্তে। তাঁর কাছে লুকাকু ‘ঐশ্বরিক এক শক্তি’! সেদিক থেকে ইতালির রক্ষণকে আজ মুখোমুখি হতে হচ্ছে এক অতিমানবের।

এমন অতিমানবের মুখোমুখি হওয়ার আগে নিজেদের কীভাবে তৈরি করছে ইতালি, সেটা জানতে চাওয়া হয়েছিল কন্তের কাছেই। তাঁর জবাব ছিল, ‘দল হিসেবে ইতালির চেয়ে ভালো ফুটবল আর কেউই খেলতে পারে না।’ এমনিতে ইতালির ফুটবলের ধরনটাকে বলা হয় কাতানেচ্চিও! বাংলায় যার মানে দাঁড়ায় রক্ষণাত্মক ফুটবল। রবার্তো মানচিনির ইতালি চিরায়ত সেই রক্ষণাত্মক ফুটবলের ধারা থেকে বেরিয়ে এসে এবার খেলছে নবধারার ফুটবল। কিন্তু এর সঙ্গে রক্ষণটাও যে মানচিনির ইতালি খুব ভালো সামলাচ্ছে, তা একটিমাত্র পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট হয়ে যায়—সর্বশেষ ১২ ম্যাচের ১১টিতেই নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে পেরেছে তারা!

কিন্তু দলীয়ভাবে কোনো দল যত ভালোই খেলুক, বড় দলের বিপক্ষে বড় উপলক্ষে পার্থক্য গড়ে দিতে একজন তারকা তো থাকতে হয়! ইতালি দলে সেই তারকাটা কে? কন্তের কথা, দলে একা কেউ তারকা নন, গোটা দল মিলেই একটা তারকা।