>চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্ন এ মৌসুমেও পূরণ হয়নি ম্যানচেস্টার সিটির। কিন্তু তাতে কী? ইউরোপের সেরা হতে না পারলেও ঘরোয়া শিরোপাগুলো হাতছাড়া করেননি গার্দিওলা। গতকাল এফএ কাপের ফাইনালে ওয়াটফোর্ডকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সিটিকে ইংলিশ ফুটবলের ট্রেবল জিতিয়েই ছেড়েছেন তিনি।
ইংলিশ লিগ ও কারাবাও কাপ জেতা হয়ে গিয়েছিল আগেই। বাকি ছিল শুধু এফএ কাপ। এটি জেতা হলে ঘরোয়া লিগের ত্রিমুকুট জেতার অনন্য রেকর্ড গড়তে পারত ম্যানচেস্টার সিটি। গতকাল ওয়াটফোর্ডকে এফএ কাপের ফাইনালে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সে লক্ষ্য পূরণ করেছে তারা। হ্যাটট্রিক করেছেন ইংলিশ উইঙ্গার রহিম স্টার্লিং। ১৯৫৩ সালের পর এই প্রথম এফএ কাপের ফাইনালে কোনো খেলোয়াড় হ্যাটট্রিক করলেন।
ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিট শান্ত ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। তারপরই শুরু হয় গোলবন্যা। ২৬ মিনিটে প্রথম গোল করে দলকে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ডেভিড সিলভা। ৩৮ মিনিটে দলের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম গোল করেন স্টার্লিং। প্রথমার্ধে গোল হয় এই দুটিই। দ্বিতীয়ার্ধে যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নামে সিটি। প্রথম একাদশে না থাকা বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডে ব্রুইনিয়া দ্বিতীয়ার্ধে নেমেই গোল করেন, ৬১ মিনিটে। ৬৮ মিনিটে ব্রাজিল তারকা গ্যাব্রিয়েল জেসুস গোল করে ম্যাচটাকে মোটামুটি ওয়াটফোর্ডের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যান। ৮১ আর ৮৭ মিনিটে স্টার্লিংয়ের দুই গোল ওয়াটফোর্ডের লজ্জাই বাড়িয়েছে শুধু।
ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক ভিনসেন্ট কম্পানি দলীয় শ্রেষ্ঠত্বের কথা স্মরণ করে দিয়েছেন সবাইকে, ‘অনেক দিন ধরে ফুটবল খেলছি। অনেক ক্লাবে খেলেছি। কিন্তু ম্যান সিটির মতো কোনো ক্লাব আছে বলে আমার মনে হয় না। গত দু’বছর ধারাবাহিক পারফর্ম করে চলেছে দলটার প্রত্যেকে।’
শিরোপা জয়ের মূল কারিগর কোচ পেপ গার্দিওলাকে শ্রদ্ধা জানাতে ভোলেননি অধিনায়ক, ‘মৌসুমের শুরুতেই বুঝিয়ে দিয়েছি আমরা কেমন দল। আমাদের ম্যানেজার অসাধারণ। তাঁর জন্যই তরুণ ফুটবলারেরা স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ পায়। স্টার্লিং ফর্মে ফিরেছে শুধুই আমাদের ম্যানেজারের জন্য।’
অসাধারণ মৌসুম শেষে কোচ গার্দিওলা ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিষ্যদের, ‘একটি অসাধারণ মৌসুম শেষ করলাম আমরা। ক্লাবের প্রত্যেক সদস্যকে ধন্যবাদ দিতে চাইব। বিশেষ করে ফুটবলারদের। আজ ওরা ভালো খেলেছে বলেই দর্শকেরা গর্ব করতে পারছেন।’ ম্যাচের শুরুতে ওয়াটফোর্ডের মিডফিল্ডার রবার্তো পেরেইরার একটি শট বাঁচিয়ে দেন সিটি গোলরক্ষক এডারসন মোরায়েস। গোলটা হয়ে গেলে হয়তো ওয়াটফোর্ড অঘটন ঘটিয়ে ফেল। তাই হ্যাটট্রিক করা স্টার্লিং বা জেসুস-ডে ব্রুইনিয়া নয়, গার্দিওলার নায়ক এডারসন, ‘এ ধরনের ম্যাচে এ রকম কিছু মুহূর্ত ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়। সেই সময় যদি ০-১ পিছিয়ে যেতাম, ফিরে আসা সহজ হতো না। এডারসনই নায়ক আজকের ম্যাচের।’
আগামী মৌসুমে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে ম্যান সিটি, ঘোষণা দিয়েছেন গার্দিওলা, ‘উন্নতি করার জায়গা আছে বলেই এখনো থাকছি সিটিতে। আশা করি, আগামী মৌসুমে আরও ট্রফি জিততে পারব দলটার হয়ে।'