ম্যাচটার কথা মনে পড়লে এখনো আর্জেন্টাইন ভক্তদের রোমাঞ্চে গায়ে কাঁটা দেওয়ার কথা।
কোপা আমেরিকার সেমিফাইনাল। প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া। নির্ধারিত ১২০ মিনিটের খেলা শেষ, ম্যাচে ১-১ গোলে সমতা। ঐতিহ্যগতভাবে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় গড়ায় বিখ্যাত আর্জেন্টিনাকে টাইব্রেকার-পর্বে বাঁচিয়ে দিলেন এক গোলকিপার। কলম্বিয়ার তিন-তিনজন খেলোয়াড়-দাভিনসন সানচেজ, ইয়েরি মিনা ও এদউইন কারদোনার পেনাল্টি ঠেকিয়ে হয়ে গেলেন জাতীয় বীর।
ওই শুটআউট থেকে আর্জেন্টিনা যে চূড়াস্পর্শী আত্মবিশ্বাস অর্জন করল, সেটাই সঙ্গী হলো ফাইনালে। ব্রাজিলকে তাদের মাঠেই হারাতে সাহায্য করল, আর্জেন্টিনাকে এনে দিল পরম আরাধ্য এক আন্তর্জাতিক শিরোপা।
কিন্তু টুর্নামেন্টের ঠিক কোন সময়ে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা এক মন, এক প্রাণ হয়ে খেলা শুরু করলেন। কখন থেকে আর্জেন্টিনা একটা দল হয়ে উঠল? লিয়ান্দ্রো পারেদেস জানিয়েছেন সেটা!
আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা সেদিনের পর সুযোগ পেলেই ক্যারিয়ারের ওই সোনালি মুহূর্তটার কথা স্মরণ করেন বিভিন্ন জায়গায়। সাক্ষাৎকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বড়মুখ করে বর্ণনা দেন নিজেদের ওই সাফল্যের। লিয়ান্দ্রো পারেদেসও যার ব্যতিক্রম নন। চোটের কারণে বহুদিন মাঠের বাইরে এই পিএসজি মিডফিল্ডার। খেলার মাঠের ব্যস্ততা নেই, তাই বলে যে সাক্ষাৎকার দেওয়া যাবে না, মিডিয়ায় হাজির হওয়া যাবে না, তা তো নয়!
সেদিন তাই উরবানা প্লে এফএম ১০৪.৩ রেডিওর অনুষ্ঠান তোদো পাসা-তে হাজির হয়েছিলেন এই মিডফিল্ডার। প্রসঙ্গক্রমে উঠে এসেছে আর্জেন্টিনার কোপা জয়ের কথাটাও। সেখানেই পারেদেস জানিয়েছেন, তাঁর দলে হয়ে ওঠার গল্প।
এমনিতে বহু বছর ধরে আর্জেন্টিনা দল হয়ে খেলতে পারে না, এমন একটা অপবাদ ওড়াউড়ি করে ফুটবল-মহলে। লিওনেল মেসি জাতীয় দলের হয়ে খেলা শুরু করার পর তো আরও বেশি। মেসির কারণে আর্জেন্টিনা দল হয়ে খেলতে পারে না, সবাই নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, আর্জেন্টিনার খেলার দলগত কৌশলের কোনো ছাপ পাওয়া যায় না—কত অভিযোগ ফুটবল–ভক্তদের! কিন্তু আর্জেন্টিনার কোপাজয়ী দলটা দেখে কেউ ওসব কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না।
কোপা আমেরিকার পর লা ফিনালিসিমা জয়। মেসির নেতৃত্বে দলটা যেন আসলেই একজোট হয়ে খেলছে, খেলোয়াড়দের পারস্পরিক সম্পর্কের উষ্ণতাও প্রশংসা করার মতো। কিন্তু এ পরিবর্তনটা কখন থেকে শুরু হলো? তারই উত্তর দিয়েছেন পারেদেস।
জানিয়েছেন, কলম্বিয়ার বিপক্ষে সে সেমিফাইনালটাই বদলে দিয়েছে সবকিছু, ‘কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটার পরই আমাদের মনে হয় যে বিশেষ কিছু একটা ঘটতে চলেছে। ঐতিহাসিক কিছু একটা ঘটতে চলেছে। কাপের শুরুতে আমাদের আত্মবিশ্বাস যতটুকু ছিল, ওই ম্যাচের পর আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বহুগুণ বেড়ে যায়।’