ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ পুরস্কারের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশের পরই একটু গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। সেরা কোচের জন্য মনোনীত হয়েছেন পাঁচজন কোচ। নিজ নিজ দলকে লিগ জিতিয়ে সেখানে জায়গা করে নিয়েছেন লিভারপুলের ইয়ুর্গেন ক্লপ ও রিয়াল মাদ্রিদের জিনেদিন জিদান। বায়ার্ন মিউনিখকে ট্রেবল জেতানোয় হান্সি ফ্লিকের নাম থাকবে, সেটা তো জানাই ছিল। ওদিকে সেভিয়াকে ইউরোপা লিগ জিতিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন হুলেন লোপেতেগি। আর লিডস ইউনাইটেডকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তুলেই চলে এসেছেন মার্সেলো বিয়েলসা।
বিশ্বের অনেক বড় কোচই নিজেদের অবস্থানের পেছনে বিয়েলসার অবদান স্বীকার করেন। ইউরোপে আর্জেন্টাইন এই কোচের অর্জনের তালিকা ছোট হলেও সৃষ্টিশীল এ কোচ অনেক কিছুই এনে দিয়েছেন আধুনিক কোচিংয়ে। তবু ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তরের লিগ জেতাতেই তাঁকে ফিফার বর্ষসেরা কোচের মনোনয়ন দেওয়া অনেকেই মানতে পারেননি। প্রকাশ্যে সেটা জানিয়েও দিলেন আন্দ্রে ভিলাস–বোয়াস। তাঁর চোখে বিয়েলসার মনোনয়ন একধরনের কেলেঙ্কারি।
বর্তমানে ফ্রেঞ্চ ক্লাব মার্শেইয়ের দায়িত্বে আছেন ভিলাস–বোয়াস। বিয়েলসা নিজেও এই ক্লাবের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু নিজের পূর্বসূরির এমন অর্জন ভালো চোখে দেখছেন না ভিলাস–বোয়াস, ‘বিয়েলসা? বিয়েলসাকে আগে সম্মানজনক কোনো শিরোপা জিততে হবে। ২০২০ সালে বিশ্বের সেরা পাঁচ কোচের একজন তিনি নন। এটা একটা কেলেঙ্কারি। উনি শুধু চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন।’ ২০০৪ সালের পর এই প্রথম ইংল্যান্ডের প্রথম স্তরে ফুটবল খেলছে লিডস। আনন্দদায়ী ফুটবল খেলেই ক্লাবটির দীর্ঘদিনের অতৃপ্তি দূর করেছেন বিয়েলসা। কিন্তু সাবেক চেলসি কোচের কাছে এটাই যথেষ্ট নয়।
২০১৪-১৫ মৌসুমে মার্শেইয়ের দায়িত্বে ছিলেন বিয়েলসা। ক্লাবটির সমর্থকদের কাছে আর্জেন্টাইন কোচ এখনো ভালোবাসার পাত্র। কিন্তু বিয়েলসার বদলে যাকে শীর্ষ পাঁচে দেখতে চান ভিলাস–বোয়াস, তাঁর নাম শুনলে মার্শেই সমর্থকেরা খেপে উঠতে পারেন। অলিম্পিক মার্শেইয়ের সঙ্গে দা-কুমড়া সম্পর্ক প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের। মৌসুমের শুরুতে এ দুই দলের খেলায় পাঁচটা লাল কার্ড দেখা গেছে। তবু শীর্ষ পাঁচে পিএসজি কোচ টমাস টুখেলকেই পছন্দ হচ্ছে ভিলাস–বোয়াসের, ‘শীর্ষ পাঁচ কোচের মধ্যে টুখেল নেই, এটা কেলেঙ্কারি। ফিফার সবাই ঘুমাচ্ছে। টুখেল চারটা শিরোপা জিতেছেন এবং দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে নিয়ে গেছেন।’
ভিলাস–বোয়াসের নিজের দলের অবস্থা ভালো নয়। লিগে সাতে আছে তাঁর দল। চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম চার ম্যাচে এখনো কোনো পয়েন্ট পায়নি তারা। এমনকি এখনো কোনো গোলও করতে পারেনি মার্শেই। গত সপ্তাহে পোর্তোর কাছে ২-০ গোলে হেরে যাওয়ায় টানা ১৩ ম্যাচ হারার রেকর্ড গড়েছে ফ্রেঞ্চ ক্লাবটি। লজ্জার এ রেকর্ডের পর এমনিতেই ক্লাবের সমর্থকেরা খেপে আগুন হয়ে আছে। এরপর আবার বিয়েলসার কৃতিত্ব ভুলে পিএসজি কোচের প্রশংসা করছেন। খাল কেটে কুমির ডেকে আনছেন না তো পর্তুগিজ কোচ?