বসুন্ধরা কিংসকে উড়িয়ে দিয়ে কাল স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের শিরোপা জিতেছে আবাহনী লিমিটেড। একটি তথ্য সবাইকে অবাক করে দিতে পারে, দেশের ফুটবলের বড় দল আবাহনী স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের শিরোপা জিতল ৩১ বছর পর। ১৯৯০ সালে শেষবারের মতো মোহামেডানকে হারিয়ে আবাহনী এই শিরোপা জিতেছিল।
এটা একটা অদ্ভুত ব্যাপারই বটে। তবে স্বাধীনতা কাপ টুর্নামেন্টটি যে খুব নিয়মিত টুর্নামেন্ট, সেটিও বলা যাবে না। ১৯৭২ সালে প্রথম আয়োজিত হয়েছিল এ টুর্নামেন্ট। ১৯৯০ সালে দ্বিতীয় ও ১৯৯১ সালে তৃতীয় আসরের পর এটি গত ৩০ বছরে অনুষ্ঠিতই হয়েছে আটবার। তবে এর পর থেকে যতবারই এ টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হয়েছে, আবাহনী কেন যেন এর শিরোপা ছুঁয়ে দেখতে পারেনি। ২০১৬ সালে সবশেষ স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠে চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে হেরেছিল আবাহনী লিমিটেড।
আবাহনীর সবশেষ শিরোপাটাও এসেছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে হারিয়ে। ১৯৯০ সালের ২৬ মার্চ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে (তখন শুধু মিরপুর স্টেডিয়াম) মোহামেডানকে ২–১ গোলে হারিয়েছিল আবাহনী। গোল দুটিই করেছিলেন আবাহনীর তারকা স্ট্রাইকার রিজভি করিম রুমি। মোহামেডানের পক্ষে একমাত্র গোলটি ছিল সম্রাট হোসেন এমিলির। সে ম্যাচটি শান্তিপূর্ণ ছিল না। আবাহনীর প্রথম গোলটি নিয়ে মোহামেডানের আপত্তি ছিল। এ নিয়ে স্টেডিয়ামে গোলযোগও হয়েছিল কিছুটা। সেবার আবাহনীর অধিনায়ক ছিলেন বর্তমানের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রূপু।
মোহামেডান অবশ্য পরের বছরই আবাহনীকে ফাইনালে হারিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছিল। ১৯৯১ সালের এপ্রিলে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে মোহামেডান জেতে টাইব্রেকারে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা ১–১ গোলে অমীমাংসিত থাকার পর টাইব্রেকারে মোহামেডান জয় পায়। নির্ধারিত সময়ে আবাহনীর পক্ষে গোল করেছিলেন শেখ আসলাম। মোহামেডানের পক্ষে ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব।
৩১ বছর পর আবাহনীর এই স্বাধীনতা কাপ জয় দেশের ঘরোয়া ফুটবলে শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করল। গত তিন মৌসুমজুড়ে দেশের ফুটবলে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল বসুন্ধরা কিংসের। ২০১৮ সালের পর ঘরোয়া ফুটবলে প্রথম শিরোপা জিতে সেই আধিপত্যে ভাগ বসাল। গত তিন মৌসুমে অবিসংবাদিত সেরা ক্লাব বসুন্ধরাকে কাল ফাইনালে ৩–০ গোলে হারিয়ে ঘরোয়া ফুটবলে নতুন একটা গল্পেরই কি সূচনা করল আবাহনী লিমিটেড?