আবাহনীর হয়ে গোলের পর কারভেন্স বেলফোর্ট। তবে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি আবাহনী।
আবাহনীর হয়ে গোলের পর কারভেন্স বেলফোর্ট। তবে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি আবাহনী।

আবাহনী-মোহামেডান লড়াইয়ে কেউ জেতেনি

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ১৫ নম্বর গেটে তখন মোহামেডানের একদল সমর্থকের জটলা। কিন্তু ফুটবল ফেডারেশনের কড়া নির্দেশ, করোনার কারণে দর্শকদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

অগত্যা মাঠে ঢুকতে না পেরে দূর থেকেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে মোহামেডানের লড়াইটা কোনো রকমে উপভোগ করলেন সমর্থকেরা।

গত ২৮ জানুয়ারি কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ স্টেডিয়ামে লিগের প্রথম পর্বের মুখোমুখিতে অন্তত ছয়-সাত হাজার দর্শক মাতিয়ে রেখেছিলেন গ্যালারি। ম্যাচটাও হয়েছিল ভীষণ উপভোগ্য। দু–দুবার এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ম্যাচটি ড্র করেছিল আবাহনী।

আজ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেও দুই দল পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। তবে গত ম্যাচের সেই উত্তাপে যেন একটু হলেও কমতি ছিল আজ। এগিয়ে থেকেও মোহামেডান ১-১ গোলে ড্র করেছে আবাহনীর সঙ্গে। মোহামেডানের গোলদাতা ইয়াসান ওয়াউচিং। আবাহনীর গোলটি কারভেন্স বেলফোর্টের।

এমনিতেই দুই দলের জন্য লিগ শিরোপার স্বপ্ন ফিকে হয়েছে অনেক আগেই। বসুন্ধরা কিংস ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে। পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে থাকা আবাহনী এই ম্যাচ জিতে আরেকটু এগিয়ে যেতে পারত। কিন্তু ড্র করে পয়েন্ট ভাগাভাগিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো তাদের।

মোহামেডানের হয়ে গোল করেন ইয়াসান ওয়াউচিং। গোলের পর।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে আবাহনী আজ তাদের সেরা একাদশ মাঠে নামাতে পারেনি। চোটের কারণে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে নাবিব নেওয়াজ জীবন ও সাদ উদ্দিন। বিশ্বকাপ বাছাই খেলতে কাতারে গিয়ে চোট নিয়ে ফিরেছেন সোহেল রানা। কিন্তু সানডে সিজোবা, কারভেন্স বেলফোর্টরা কোচ মারিও লেমোসের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলেন কোথায়?

বরং মোহামেডান প্রথমার্ধে যেভাবে আক্রমণাত্মক খেলেছে, সেই ধারাবাহিকতা দ্বিতীয়ার্ধে ধরে রাখলে ম্যাচের ফল অন্য রকম হতে পারত। ২০ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত মোহামেডান।

বক্সের বাইরে থেকে সুলেমান দিয়াবাতের ক্রস থেকে ইয়াসান বল পেয়ে দারুণ একটা শট নিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য মোহামেডানের, সাইডপোস্টে লেগে ফেরে বলটি। তবে ৩১ মিনিটে ঠিকই ইয়াসান গোল করে এগিয়ে নিয়েছেন মোহামেডানকে। আবারও সুলেমানের পাস থেকে বল নিয়ে বক্সে ঢোকেন ইয়াসান। আশ্চর্য বিষয়, আবাহনীর তিন ডিফেন্ডার তাঁকে আটকানোর বদলে যেন দাঁড়িয়ে ছিলেন!

বিরতির পর বেশি আক্রমণাত্বক ছিল আবাহনী।

গোল খেয়ে হুঁশ ফেরে আবাহনীর। ৪১ মিনিটে গোল শোধ করে তারা। তবে গোলটির জন্য খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয়নি আবাহনীকে। মোহামেডান ডিফেন্ডার মনজুর কুলদিয়াতির ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে হেডে গোল করেন বেলফোর্ট। জটলা থেকে পাওয়া বল বক্সের ভেতর কুলদিয়াতি ‘ক্লিয়ার’ করতে গিয়েও পারেননি। সুযোগ পেয়ে হেডে গোল করেন বেলফোর্ট।

দ্বিতীয়ার্ধে বেশি আক্রমণাত্মক চেহারায় দেখা গেছে আবাহনীকে। শুধু দুর্বল ফিনিশিংয়ে জয় নিয়ে ফেরা হয়নি দলটির। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে কর্নার থেকে মামুনুল ইসলামের শটে অলিম্পিক গোলের সম্ভাবনা ছিল।

শেষ পর্যন্ত বল পোস্টের বাইরের কোনায় লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮৬ মিনিটে মামুনুলের দূরপাল্লার শট ঠেকাতে পোস্ট ছেড়ে বাইরে চলে আসেন মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন হোসেন। বল ঠেকাতে গিয়ে তিনি নিজেও সামান্য চোট পেয়েছেন।

বাকি সময় চেষ্টা করেও কোনো দল গোলের দেখা পায়নি। ১৬ ম্যাচে ৯ জয়, ৬ ড্র, ১ হারে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই রইল আবাহনী। সমান ম্যাচে ৮ জয়, ৫ ড্র, ৩ হারে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে মোহামেডান।