>মঙ্গলবার ঢাকায় লাওসের বিপক্ষে বিশ্বকাপ প্রাক্–বাছাইয়ের ম্যাচে বেশ কয়েকটি গোল মিস করেছিলেন নাবীব নেওয়াজ জীবন। তাঁর গোল মিসের খেসারত দিয়ে গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। অথচ আবাহনী লিমিটেডের জার্সিতে ফিরতেই স্বরূপে জীবন
এ কি সেই স্ট্রাইকার জীবন? আট দিনের ব্যবধানে বিশ্বকাপ প্রাক্–বাছাইয়ে বাংলাদেশ-লাওস এবং এএফসি কাপে আবাহনী-মানাং মার্শিয়াংদি ম্যাচটি দেখেছেন যাঁরা, তাঁদের মনে এই প্রশ্ন জাগতেই পারে। কারণ, আবাহনীর জার্সিতে জীবনের গোল করার দারুণ দক্ষতা জাতীয় দলে এলেই হয়ে যায় গোল মিসের বিলাসিতা।
বুধবার এএফসি কাপে নেপালের ক্লাব মানাংকে গোলের মালা পরিয়েছে আবাহনী। ৫-০ গোলের বড় জয়ের ম্যাচে বুদ্ধিদীপ্ত শটে গোলের মালা গাঁথার কাজের সূচনা করেছিলেন জীবন। প্রতিপক্ষ নাইজেরিয়ান সেন্টারব্যাক শাহিদ আজিজের পা থেকে বল কেড়ে তেড়েফুঁড়ে বক্সে ঢুকে এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে প্লেসিং শটে গোল করেন জীবন। যাঁরা বিশ্বকাপ প্রাক্–বাছাইয়ে লাওসের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি দেখেছিলেন, তাঁরা কেউ কেউ চোখ কচলাতে পারেন। এই কি সেই জীবন!
এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই আট দিন আগে বিশ্বকাপ প্রাক্–বাছাইয়ে লাওসের বিপক্ষে তিনবার গোল করার সহজ সুযোগ পেয়েও করতে পারেননি। অথচ এএফসি কাপে আবাহনীর জার্সিতে ৫ ম্যাচ খেলে জীবনের নামের পাশে গোলসংখ্যা ২। মানাংয়ের বিপক্ষে দৃষ্টিনন্দন গোলের আগে একই টুর্নামেন্টের ম্যাচে ভারতের মিনার্ভা পাঞ্জাবের বিপক্ষে দুর্দান্ত গোল করে আবাহনীকে ফিরিয়েছিলেন সমতায়।
এবারের মৌসুমে আবাহনীকে বেশ কয়েকটি ম্যাচে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন জীবন। এএফসি কাপের ২ গোল ছাড়াও চলতি প্রিমিয়ার লিগে প্রিমিয়ার লিগে তাঁর পায়ে গোলের ফোয়ারা। কখনো কখনো তাঁর গোলের সুরভি গ্যালারিতে পর্যন্ত পৌঁছে যায়। লিগে ১৬ ম্যাচে ১১ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আছেন দ্বিতীয় স্থানে। এর মধ্যে আছে একটি হ্যাটট্রিকও। কিন্তু অভিজ্ঞ এই স্ট্রাইকার জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামলে চিনতে হয় জার্সি নম্বর দেখে।
স্বাভাবিকভাবে প্রশ্নটি তাই উঠেই যায়, আবাহনীর জীবন কেন বাংলাদেশের হয় না? এ ক্ষেত্রে ভাগ্যকেই দুষছেন জীবন। জাতীয় দলের জার্সিতে একটি গোল পেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি, ‘জাতীয় দলের জার্সিতে আমার ভাগ্য সহায় থাকে না। জাতীয় দলের জার্সিতে যে সহজ সহজ গোলের সুযোগ মিস করি, আমি নিজেও অবাক হয়ে যায়। আমার মনে হয় একটা গোল পেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’ কিন্তু কবে যে আসবে সেই একটা গোল?
রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় জীবনের। এখন পর্যন্ত ১২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে গোল মাত্র একটি। ২০১৬ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে করেছিলেন গোলটি। আরব আমিরাতের বিপক্ষে সে ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬-১ গোলে। এ ছাড়া ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি গোল আছে জীবনের। তবে সেটি ফিফার দ্বিতীয় পর্যায়ের স্বীকৃত ম্যাচ ছিল।