গত ফেডারেশন কাপই যেন ফিরে এল আজ। ২০২০ সালে মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডকে হারিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠেছিল রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। আজ সেই মোহামেডানকে হারিয়েই দ্বিতীয়বারের মতো ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠেছে রহমতগঞ্জ।
আজ কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ২–১ গোলের নাটকীয় জয় পেয়েছে রহমতগঞ্জ। ৭৭ মিনিট পর্যন্ত ১–০ গোলে পিছিয়ে ছিল পুরান ঢাকার দলটি। ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিটে ২ গোল করে মোহামেডানকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দেয় তারা।
রহমতগঞ্জের হয়ে একটি করে গোল করেছেন তাদের দুই বিদেশি ফরোয়ার্ড ফিলিপ আজাহ ও সানডে সিজোবা। মোহামেডানের গোলটি ডিফেন্ডার রাজিব হোসেনের।
দুই মৌসুম ধরে ফেডারেশন কাপে রহমতগঞ্জ মানেই চমক। গতবার শেখ জামাল ধানমন্ডি, আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডানকে বিদায় করে ফাইনাল খেলেছিল তারা। এবার সেমিফাইনালে সেই মোহামেডান। এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় করেছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে। নামের বিচারে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকলেও যোগ্য দল হিসেবেই ফাইনালে উঠেছে তারা।
প্রথমার্ধে মোহামেডানের সুলেমান দিয়াবাতে, ওবি মোনেকেদের কিছুটা দাপট থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করেছে রহমতগঞ্জ। ৬৭ মিনিটে মোহামেডানের মেসিডোনিয়ার ডিফেন্ডার জাসমিন মাচিনোভিচ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে আরও চড়া হয়ে খেলার সুযোগ পায় সৈয়দ গোলাম জিলানীর দল।
ম্যাচের শুরুতেই মোহামেডান এগিয়ে যাওয়ার পর সমর্থকেরা প্রায় ১২ বছর পর নিজেদের দলকে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে দেখতে শুরু করেছিলেন। ৫ মিনিটে মোহামেডানকে এগিয়ে নেন রাজিব হোসেন। আলমগীর মোল্লাহর কর্নার থেকে দূরের পোস্ট থেকে হেড করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার অ্যারন জন, গোলমুখ থেকে টোকা দিয়ে গোলটি করেন ডিফেন্ডার রাজিব। তবে প্রথমার্ধে ব্যবধান বাড়াতে না পারলেও ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ ছিল শন লেনের দলের।
বিরতির পর ম্যাচের চিত্র পুরো পাল্টে যায়। ৬৭ মিনিটে ফিলিপ আযহাকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন জাসমিন। প্রতিপক্ষ ১০ জন হয়ে যাওয়ার সুযোগটা বেশ ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছেন সানডে ও ফিলিপ। ৭৮ মিনিটে সমতায় ফেরে রহমতগঞ্জ। মাঝমাঠের একটু নিচে থেকে ঘানার ফরোয়ার্ড ফিলিপের উদ্দেশে লম্বা পাস বাড়ান আশরাফুল ইসলাম। ডিফেন্ডার রাজিব হোসেনকে গতিতে পেছনে ফেলে বক্সে ঢুকে শট নেন ফিলিপ। কাছের পোস্টে লেগে বল জালে।
সমতায় ফেরার পর রহমতগঞ্জের এগিয়ে যাওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। যোগ করা সময়ে সেই কাজটি করেছে দেশের ফুটবলে পরিচিত নাম সানডে। ডান প্রান্ত থেকে ফিলিপের ক্রসে গোলমুখে আনমার্কড ছিলেন সানডে। মোহামেডান রক্ষণের সিদ্ধান্তহীনতার সুযোগ নিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ করে ঠান্ডা মাথায় গোলটি করেন নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকার।
শেষ বাঁশি বাজতেই শিরোপা জয়ের মতো উল্লাস করেছে রহমতগঞ্জ। টানা দুবার ফেডারেশন কাপে ফাইনালে খেলার কৃতিত্ব তো আর কম নয়। ৯ জানুয়ারি ফেডারেশন কাপের ফাইনাল। সেদিন রহমতগঞ্জের প্রতিপক্ষ আবাহনী লিমিটেড ও সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার জয়ী দল। আজ সন্ধ্যা সাতটায় দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে একই মাঠে।