গোলকিপার ও ডিফেন্ডারদের কাজ হলো গোল ঠেকানো। এ কাজটি করতে গিয়ে গোল হজম করে বসলে কেমন লাগে! জিজ্ঞেস করুন, তুর্কি ডিফেন্ডার মেরিহ দেমিরাল, পোলিশ গোলকিপার ভয়চেখ সেজনি ও জার্মান ডিফেন্ডার ম্যাটস হামেলসকে। এবারের ইউরোয় দলের গোল হজম ঠেকাতে গিয়ে তাঁরা উল্টো বল পাঠিয়েছেন নিজেদের জালে!
অবশ্যই তা অনিচ্ছাকৃত। গোলগুলো হজমের পর তাঁদের চোখমুখই সব বলে দিচ্ছিল, যাতনাটা কতখানি! কাল রাতে ফ্রান্সের বিপক্ষে জার্মানির ১-০ গোলে হারের ম্যাচে এ যাতনার সর্বশেষ শিকার হয়েছেন হামেলস।
ফ্রান্সের লুকাস হার্নান্দেজের ক্রস ‘ক্লিয়ার’ করতে গিয়ে বলটা অনিচ্ছাকৃতভাবে জার্মানির জালে পাঠান বরুসিয়া ডর্টমুন্ড তারকা। এই সেন্টারব্যাকের আত্মঘাতী গোলেই শেষ পর্যন্ত হেরেছে জার্মানি।
ইউরোর গ্রুপ পর্বে এ পর্যন্ত মাত্র ১২ ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যেই তিন-তিনটি আত্মঘাতী গোল দেখা গেল। উদ্বোধনী ম্যাচে যার শুরুটা করেছিলেন দেমিরাল।
তাঁর সৌজন্যে এবার ইউরোর প্রথম গোলটাই ছিল আত্মঘাতী। তিনিও ইতালিয়ান উইঙ্গার দমিনিকো বেরার্দির ক্রস সামলাতে গিয়ে বল জড়ান নিজেদের জালে। ইউরোর ইতিহাসে এবারই প্রথমবার কোনো টুর্নামেন্টের শুরুটা হলো আত্মঘাতী গোলে।
এরপর পোল্যান্ড-স্লোভাকিয়া ম্যাচে বল পোস্টে লেগে মাটিতে পড়ে থাকা গোলকিপার শেজনির পিঠে লেগে ঢুকে যায় জালে। ইউরোর ইতিহাসে আত্মঘাতী গোল করা প্রথম গোলকিপার বনে যান এই পোলিশ গোলরক্ষক।
আর হামেলস বড় টুর্নামেন্টে গত ৪৩ বছরের মধ্যে প্রথম জার্মান হিসেবে আত্মঘাতী গোলের ভাগ্য মেনে নিলেন। সর্বশেষ ১৯৭৮ বিশ্বকাপে এই দুর্ভাগ্য দেখেছিলেন জার্মানির সাবেক ডিফেন্ডার ও কোচ বার্টি ফোটস। তবে ইউরোর এবারের সংস্করণে আত্মঘাতী গোলের হার একটু বেশিই দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতি এমন যে আর একটি আত্মঘাতী গোল হলেই টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে এক সংস্করণে সবচেয়ে বেশি আত্মঘাতী গোলের রেকর্ড হবে।
ইউরোর ইতিহাসে এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ তিনটি আত্মঘাতী গোল দেখা গেছে ২০১৬ সংস্করণে। এবারের টুর্নামেন্ট সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে কাল রাতে হামেলসের সৌজন্যে।
২০১৬ সালে সংস্করণে আয়ারল্যান্ডের কিয়ারন ক্লার্ক আত্মঘাতী গোল করেন সুইডেনের বিপক্ষে, এরপর হাঙ্গেরির বিপক্ষে আত্মঘাতী গোল করেন বিকির সেভেরসন এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের গ্যারেথ ম্যাকুয়ালির গোলে জয় তুলে নিয়েছিল ওয়েলস।
এবার যে হারে আত্মঘাতী গোল শুরু হয়েছে তাতে গ্রুপ পর্বেই অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই!