>এএফসি কাপের আন্ত–আঞ্চলিক সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে আজ এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের বিপক্ষে মাঠে নামবে আবাহনী লিমিটেড। উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায়।
বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের অনেকের চোখ হয়তো আজ থাকবে পিয়ংইয়ংয়ে। শেষ পর্যন্ত খেলা দেখার কোনো মাধ্যম না পাওয়া গেলে ফলাফলের আশায় খাড়া থাকবে কান। নানা ওয়েবসাইটে চোখ খুঁজে ফিরবে খেলার আপডেট। আজ যে দেশের ফুটবলে বড় এক ইতিহাস গড়ার দিন! উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে স্বাগতিক ক্লাব এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের বিপক্ষে ড্র করলেই এএফসি কাপের আন্ত–আঞ্চলিক ফাইনালে পৌঁছে যাবে আবাহনী লিমিটেড।
প্রথম পর্বের ম্যাচে উত্তর কোরিয়ার চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের পুরো মনোযোগটাই কেড়ে নিয়েছে আকাশি-নীলরা। আবাহনীর চোখে স্বপ্ন, কিন্তু মনে সংশয়ের মেঘ। উত্তর কোরিয়ার ১৮ বারের লিগ চ্যাম্পিয়ন এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের সঙ্গে আজ ড্র করা সম্ভব? কাজটা অনেক কঠিন। তবে এই দলকেই ২১ আগস্ট ঢাকায় ৪-৩ গোলে হারিয়েছে আবাহনী। সেদিক থেকে ড্র করা অসম্ভব নয়। কিন্তু ম্যাচটি উত্তর কোরিয়ায় হওয়ায় স্বাগতিক হিসেবে এগিয়ে থাকবে এপ্রিল। এ ছাড়া প্রথম ম্যাচ হেরে আজ আবাহনীর বিপক্ষে জয়ের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে দলটি। সমীকরণটা তাদের জন্য একটু সহজই, ১-০ গোলে জিতলেই চলবে। এর বেশি ব্যবধানে জিতলে তো আরও ভালো। কারণ, ঢাকায় ৩টি অ্যাওয়ে গোল করে সুবিধাজনক জায়গায় চলে গেছে এপ্রিল টোয়েন্টি। আবাহনীর মাথায় জয়ের চাপ নেই, ন্যূনতম ড্র করলেই চলছে।
আবাহনী কোচ মারিও লেমোস জানেন উত্তর কোরিয়ার ক্লাবটি অনেক শক্তিশালী এবং এই এএফসি কাপে ঘরের মাঠে অপরাজিত। সেটা মনে রেখে লেমোস এএফসির ওয়েবসাইটে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কোনো সংশয় নেই আমাদের জন্য এটি কঠিন এক ম্যাচ। এই টুর্নামেন্টে উত্তর কোরিয়ার দলটি হোম ম্যাচে এখনো হারেনি। আবাহনীর বিপক্ষেও তারা জয় নিয়ে পরের রাউন্ডে যেতে চাইবে। তবে ঢাকার জয়টা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বাস আছে প্রতিপক্ষের মাঠেও ভালো কিছু করব। আমরা ফাইনালে উঠতে মরিয়া হয়েই খেলব।’ ভালো খবর হচ্ছে আজ পাওয়া যাচ্ছে মিসরীয় ডিফেন্ডার আলে নাসেরকে।
ঢাকার ম্যাচের আগে সবাই ধরে নিয়েছিলেন আবাহনীর পক্ষে জেতা সম্ভব নয়। সফরকারী দলটি কয় গোলে জিতবে, সেটিই বরং দেখার অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। কিন্তু আবাহনী নিজেদের সামর্থ্যের চেয়েও ভালো খেলে সেদিন চারটি গোল পেয়েছে। ৩১ বছর আগে এশিয়ান ক্লাব কাপে উত্তর কোরিয়ার এই এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ঢাকা মোহামেডান। সেই স্মৃতি উসকে দিয়ে আবাহনী সেদিন কোরীয় ক্লাবটিকে হারিয়ে নিজেদের তুলে নিয়েছে নতুন উচ্চতায়। বিশ্বকাপে খেলা উত্তর কোরিয়ার চ্যাম্পিয়ন দলকে হারানো সহজ ব্যাপার ছিল না আবাহনীর জন্য।
গোল করে ধরে রাখতে না পারার পুরোনো অভ্যাসটা রয়েই গেছে আবাহনীর। দুবার আবাহনী এগিয়ে যাওয়ার পরই ম্যাচে ফেরে উত্তর কোরিয়ার দলটি। ২-২ থেকে আবাহনী ৪-২ করে ফেলায় আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত ৪-৩ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে সানডে চিজোবা, রায়হান হাসানরা। সেই জয়ের ফসল আবাহনী পুরোপুরি ঘরে তুলতে পারবে, যদি আজ শেষটা ভালো হয়। আর সেদিকেই তো তাকিয়ে পুরো বাংলাদেশের ফুটবল।