রিয়াল মাদ্রিদ বলেই এমন কিছু সম্ভব!
৯০ মিনিটের সময়ও মনে হচ্ছিল, রিয়াল মাদ্রিদ নয়, ফাইনালটা লিভারপুলের সঙ্গে ম্যানচেস্টার সিটিরই হচ্ছে। কিন্তু সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আজ ৮৯ মিনিটেও ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা রিয়াল আরও একবার অবিশ্বাস্য গল্প লিখে উঠে গেছে ফাইনালে।
সিটির মাঠে প্রথম লেগে ৪-৩ গোলে হেরে যাওয়া রিয়াল নিজেদের মাঠ বার্নাব্যুতে আজ রদ্রিগোর জোড়া গোলে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে জিতে গেল ৩-১ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৫ গোলে জিতে ফাইনালে রিয়ালই।
টানা দ্বিতীয় অল-ইংলিশ ফাইনালই তাহলে হচ্ছে না। গত মৌসুমে চেলসির সঙ্গে লড়েছিল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি, শেষ পর্যন্ত শিরোপা গেছে চেলসিরই ঘরে। আজ রিয়াল আরও একবার ফাইনালে উঠতেই নিশ্চিত হলো, টানা দ্বিতীয় ও পাঁচ বছরের মধ্যে তৃতীয় অল-ইংলিশ ফাইনাল আর হচ্ছে না।
স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে লিভারপুল গত রাতেই ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করেছে, আজ বার্নাব্যুতে সিটি আর পারল না! আগামী ২৮ মে প্যারিসে ফাইনাল।
প্রথম লেগে সিটির মাঠে ৪-৩ গোলে হেরে যাওয়ায় বার্নাব্যুতে আজ রিয়ালের জয়ের বিকল্প ছিল না। কিন্তু দারুণ গতিতে শুরু করলেও সিটির গোলমুখে হড়বড়ে রিয়াল ৮৯ মিনিটের আগে গোল তো দূরের কথা, সিটির পোস্ট বরাবর কোনো শটই নিতে পারেনি! তখন মনে হচ্ছিল, পিএসজি, চেলসির বিপক্ষে আগের দুই রাউন্ডে দারুণ গল্প লেখা রিয়াল বুঝি এবার আর কোনো প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে পারল না।
কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগ মানে যে রিয়ালের অসাধারণ কোনো গল্পেরই নিশ্চয়তা! বার্নাব্যু আজ আরেকবার সেটি প্রমাণ করল। এবার আর বেনজেমা কিংবা ভিনিসিয়ুস নন, রিয়ালের ফেরার গল্পের নায়ক রদ্রিগো।
৭৩ মিনিটে বক্সের ডান দিক থেকে সিটি উইঙ্গার রিয়াদ মাহরেজের দারুণ শটে এগিয়ে যাওয়া সিটির, বদলি নামা রদ্রিগোর দুই মিনিটের দুই গোলে হঠাতই পাশার দান পালটে দিল রিয়াল। ৯০তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে বেনজেমার দারুণ ক্রসে পা ছুঁইয়ে গোল ব্রাজিলিয়ান তরুণের, এক মিনিট পর ডান দিক থেকে কারভাহালের ক্রসে হেডে দ্বিতীয়টি। রিয়ালের ফিরে আসার গল্পে ভিত্তি তৈরি!
ফেরার গল্পে বেনজেমার ভূমিকা না থাকলে চলে! নির্ধারিত ৯০ মিনিটে রিয়াল ২-১ গোলে এগিয়ে, দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ সমতা। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই পেনাল্টি পেল রিয়াল! রুবেন দিয়াস বেনজেমাকে বক্সে ফেলে দিলেন। পাওয়া পেনাল্টিটি থেকে ৯৫ মিনিটে বল জালে জড়িয়ে দিলেন বেনজেমাই!
বাকি সময়টায় সিটি মাথা কুটে মরেছে একটা গোলের জন্য। বুঝেছে, বার্নাব্যুতে ইউরোপিয়ান রাত প্রতিপক্ষের জন্য কত লম্বা!
যেমনটা বুঝেছিল পিএসজি, চেলসিও।