অনুশীলনে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে পরামর্শ করছেন সাকিব
অনুশীলনে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে পরামর্শ করছেন সাকিব

বলছেন হাথুরুসিংহে

৭ হাজার নয়, ইংল্যান্ড–অস্ট্রেলিয়ায় খেললে সাকিবের রান হতো ১০-১২ হাজার

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৭ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন সাকিব আল হাসান। এই ৭ হাজার রানটাই ১০-১২ হাজার হতেই পারত। কীভাবে? সেই উত্তরটা পেতে যেতে হবে চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে। হাথুরুসিংহে এই উত্তর দিয়েছেন দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে সাকিবকে সংবর্ধনা দেওয়ার সময়ে।

যেখানে শুধু সাকিবকে নয়, তামিম মুশফিককেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ দলের পক্ষ থেকে। সিলেট স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে সাকিব ও মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়েছেন হাথুরুসিংহে। তামিমের হাতে যা তুলে দিয়েছেন ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স।

কেন এই সংবর্ধনা পেয়েছেন সাকিবরা, সেটা নিশ্চয়ই কারও অজানা নয়। আয়ারল্যান্ড বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ ছিল যেন সাকিব-তামিমদের মাইলফলক ছোঁয়ার মঞ্চ। সাকিব যা প্রথম ওয়ানডেতে করেছেন, মুশফিকুর রহিম সেই মাইলফলক ছুঁয়েছেন দ্বিতীয় ওয়ানডেতে।

বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ৭ হাজার রান। আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইনিংসটা বড় করতে না পারলেও, ২৩ রানের ইনিংসের খেলার পথে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সব সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজার রান করেছেন তামিম। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এর আগে ১৫ হাজার রান করেছেন আরও ৩৯ জন ক্রিকেটার। ওয়ানডে ক্রিকেটে সাকিব-মুশফিকের আগে ৭ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন আরও ৪৩ জন। যার অর্থ, বিশ্ব ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে এটা এমন কোনো বড় অর্জন নয়। বরং বাংলাদেশের ক্রিকেটের বিবেচনায় তো অবশ্যই বিশেষ কিছু।

বিশেষ হওয়ার আরেকটা কারণও আছে। সাকিব–তামিম–মুশফিকরা বেশির ভাগ ম্যাচই খেলেছেন বাংলাদেশে, যেখানে উইকেট বলতে গেলে কখনোই ব্যাটিং–স্বর্গ হয় না। লো–স্লো স্পিন সহায়ক উইকেটে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের জন্য যেমন ব্যাট করা কঠিন, তা তেমনই কঠিন সাকিব-তামিমদের জন্যও।

৬০ বলে সেঞ্চুরি করার দিনে ৭০০০ রানের মাইলফলকও ছুঁয়েছেন মুশফিকুর রহিম

২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষে সাকিব তো বলেই দিয়েছিলেন—‘এমন উইকেটে খেললে ১০/১৫টা ম্যাচ খেললে ব্যাটসম্যানদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে।’

বাংলাদেশের উইকেট কেমন— এমন প্রশ্নে উদাহরণ হিসেবে এই দুই সিরিজের উইকেটকে যদি না–ও ধরেন, দেশের মাটিতে জয় পেতে বেশির ভাগ সময় তো এর কাছাকাছি চরিত্রের উইকেটই বানানো হয়। এসব কারণেই ওয়ানডে ক্রিকেটে সাকিবের ৭ হাজার রান প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের কাছে বিশেষ কিছু। বিশেষ কিছু দুটি কারণে।

কী সেই দুটি কারণ? শুনুন হাথুরুসিংহের মুখেই। সাকিবের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়ার আগে হাথুরু বলেছেন, ’সাকিব, তুমি ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে যেসব দলের বিপক্ষে খেলেছ, সব সময়ই তুলনামূলক ভালো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে খেলতে হয়েছে।

এখন হয়তো তা নয়, গত ৫/৬ বছর ধরেই নয়। এটা সহজ নয়। তার ওপর তুমি বেশির ভাগ সময় এখানে (বাংলাদেশে) খেলেছ, এটাও সহজ নয়। তুমি ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা ভারতে খেললে তোমার রান হয়তো ১০/১২ হাজার রান হতো। সব মিলিয়ে এটা অসাধারণ এক অর্জন। তোমাকে অভিনন্দন।’

অনুশীলনে তামিমের সঙ্গে জেমি সিডন্স

তামিমের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়ার আগে জেমি সিডন্স বলেছেন,‘ তামিম, তুমি যখন সেরা খেলাটা খেলো, তখন এই দল আরও ভালো দল হয়ে যায়। ১৫ হাজার রানের জন্য অভিনন্দন। আমি এবার যখন আবার ফিরে আসি, আমি একটা ব্যাপার নিশ্চিত করতে চেয়েছি। তুমি, মুশি, সাকিব, রিয়াদ তোমরা আর তিন বছরই খেলো বা যত দিন খেলো, এটা যেন তোমাদের সেরা সময় হয়।’