১৪ জানুয়ারি দিনটি কুমিল্লার কাছে এখন অনেক পেছনেরই মনে হওয়ার কথা। সে দিনের পর যে হারতেই ভুলে গেছে দলটি! বিপিএলে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা এ মৌসুম শুরু করেছিল টানা তিনটি হার দিয়ে। রংপুর রাইডার্স, সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ফরচুন বরিশাল—শেষ পর্যন্ত প্লে-অফে ওঠা তিনটি দলের কাছেই মুখোমুখি প্রথম লড়াইয়ে হেরেছিল ইমরুল কায়েসের দল।
এরপর ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-পর্বে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারিয়ে প্রথম জয় পায় কুমিল্লা। সে ম্যাচ থেকে শুরু করে আজ রংপুরকে হারানো পর্যন্ত কুমিল্লা জিতল টানা ৯টি ম্যাচ! গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ রংপুরকে উড়িয়েই দিয়েছে তারা।
বিপিএলে এক মৌসুমে টানা সবচেয়ে বেশি জয়ের রেকর্ডটি আগেই গড়ে ফেলেছে কুমিল্লা। এত দিন সেটি ছিল বরিশালের। গত মৌসুমে ফরচুন বরিশাল জিতেছিল টানা সাতটি ম্যাচ। বরিশালের জয়রথ থেমেছিল ফাইনালে, এই কুমিল্লার কাছে হেরেই।
কুমিল্লা যে রংপুরকে আজ হারাল, তাদেরও জয়রথ ছুটছিল। এ ম্যাচের আগে টানা ছয়টি ম্যাচ জিতেছিল তারা। আজ জিততে পারলে বিপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টানা ম্যাচ জয়ে বরিশালকে ছুঁয়ে ফেলত তারা।
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি দলগুলোর মধে৵ কুমিল্লার এ রেকর্ড থাকছে ওপরের দিকেই। সবার ওপরে সেখানে আছে আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১৪ সালে আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি। এরপর চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-টোয়েন্টি খেলেছিল তারা। দুই লিগ মিলিয়ে সে মৌসুমে টানা ১৪টি ম্যাচ জিতেছিল কলকাতা।
তালিকায় ১২টি করে জয় নিয়ে দুইয়ে আছে বিগ ব্যাশের দল সিডনি সিক্সার্স ও সিপিএলের দল ট্রিনবাগো নাইট রাইডার্স। সিডনি টানা ১২টি ম্যাচ জিতেছিল ২০১২ সালে। কলকাতার মতো তারাও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-টোয়েন্টিতে, নিয়মিত মৌসুমে বিগ ব্যাশে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর। ট্রিনবাগোর রেকর্ডটি সে তুলনায় বেশ নতুনই। ২০২০ সালে সিপিএলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগগুলোতে এরপর আছে সিপিএলের গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স। টানা ১০টি ম্যাচ জিতে ২০১৯ সালে ফাইনালে উঠেছিল দলটি, তবে এরপর হেরে বসেছিল গ্রুপ পর্বে ১০টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৫টি জেতা বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টসের কাছে। এবার কুমিল্লা যদি প্রথম কোয়ালিফায়ার জেতার পর গিয়ে ফাইনালও জেতে, তাহলে টপকে যাবে গায়ানাকে।
সব মিলিয়ে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে টানা জয়ের রেকর্ডটি অবশ্য অনতিক্রম্যই মনে হওয়ার কথা। ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি কাপে শিয়ালকোট স্ট্যালিয়নস জিতেছিল টানা ২৫টি ম্যাচ। টানা চারটি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি। এ তালিকার দুইয়ে থাকা ভারতের কর্ণাটক ২০১৮ ও ২০১৯ সালের মধ্যে জিতেছিল টানা ১৪টি ম্যাচ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টানা জয়ের রেকর্ডটি যৌথভাবে আফগানিস্তান ও মালয়েশিয়ার। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে আফগানিস্তান, ২০২২ সালে মালয়েশিয়া—দুই দলই জিতেছিল টানা ১৩টি ম্যাচ। আর মেয়েদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ডটি থাইল্যান্ডের—১৭টি ম্যাচ। এরপর টানা ১৬টি ম্যাচ জিতে দুইয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া।