অবশেষে সামনে এলেন চেতন শর্মা!
সামনে বলতে প্রায় এক বছর পর সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন। গত বছর সাবেক এই ক্রিকেটারের কিছু কথা ভারতীয় ক্রিকেটে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। যার জেরে বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাচকের পদ ছাড়তে হয়েছিল। চেতনের তোলপাড় তোলা কথাগুলোয় অন্যতম চরিত্র ছিলেন বিরাট কোহলি। এত দিন পর তাঁর দাবি, কোহলি সম্পর্কে খারাপ কিছু বলেননি তিনি। তাঁকে নিজের ছেলের মতোই দেখেন বিশ্বকাপে প্রথম (১৯৮৭) হ্যাটট্রিক করা চেতন।
প্রায় তিন বছর ভারতীয় দলের প্রধান নির্বাচক ছিলেন চেতন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জিও নিউজের গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ‘স্টিং অপারেশন’–এ দেখা যায়, চেতন আড্ডার ছলে ভারত ক্রিকেট দলের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। এর মধ্যে আছে সাবেক অধিনায়ক ও বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর কোহলিকে পছন্দ না করা, যশপ্রীত বুমরাসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের দ্রুত ফিট হয়ে ওঠার জন্য ইনজেকশন ব্যবহার এবং কোহলি–রোহিত শর্মার মধ্যে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বের মতো চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। প্রধান নির্বাচক হিসেবে এসব বিষয় চেতন কাছ থেকে দেখেছেন, শুনেছেন ও বুঝেছেন বলে জানান।
অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হওয়ার পর ভারতীয় ক্রিকেটে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। এর মাধ্যমে খেলোয়াড়–নির্বাচক সম্পর্ক, প্রশাসক–নির্বাচক সম্পর্ক আস্থাহীনতার হুমকিতে পড়বে বলে আলোচনা উঠলে ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচকের পদ ছাড়েন চেতন।
প্রায় এক বছর কাল এ নিয়ে ভারতের নিউজটোয়েন্টিফোর স্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলেন ২৩ টেস্ট ও ৬৫ ওয়ানডে খেলা এই পেসার। স্টিং অপারেশনের ফাঁদে পড়ার বিষয়ে কথা উঠলে চেতন বলেন, ‘দেখুন, যা ঘটেছে, তা আমার নিয়তিতে ছিল। ভবিষ্যতে যা ঘটবে, তা–ও নিয়তিতে আছে। আমি কখনো কারও ক্ষতি করিনি। কেউ আমার ক্ষতি করে থাকলে স্রষ্টা দেখছেন। তিনি এটার যথাযথ প্রতিদান দেবেন।’
৫৮ বছর বয়সী চেতন প্রধান নির্বাচক থাকা অবস্থায় কোহলির তিন সংস্করণের অধিনায়কত্বের ইতি ঘটে। অনেকের ধারণা, এ ক্ষেত্রে চেতনেরও ভূমিকা আছে। প্রসঙ্গটি তোলা হলে নিজেকে কোহলির বড় শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তুলে ধরেন চেতন, ‘বিরাট আমার ছেলের মতো, আমার চেয়ে অনেক ছোট। আমি কেন ওর সম্পর্কে খারাপ বলব? সে যখন দেশের হয়ে ভালো খেলে, আমার ভালো লাগে। আমি প্রার্থনা করি, সে যেন আরও সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে।’
কোহলির মতো রোহিত সম্পর্কেও বেশ ভালো ধারণা চেতনের, ‘অল্প যে কয়েকজন খেলোয়াড় দলের জন্য নিজের স্বার্থকে ছাড় দেয়, রোহিত তাদের একজন। দলকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দেয়। একজন ওপেনার যদি প্রথম ১০ ওভারে ৮০ রান তুলে দিয়ে যায়, অন্য ব্যাটসম্যানরা সহজেই ৩০০–তে নিয়ে যেতে পারে।’
বেফাঁস কথা বলে বিসিসিআই থেকে বেরিয়ে গেলেও আবার ভারত ক্রিকেট বোর্ডে কাজ করার ইচ্ছা আছেন চেতনের, ‘আমাকে যদি আবার সুযোগ দেওয়া হয়, আমার ভালো লাগবে। আমি আবারও কাজ করতে চাই। এটা আনন্দের ব্যাপার।’